রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফাইনালের স্পটলাইট

কোনো কোনো খেলোয়াড় একাই পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের গতি। ফাইনালের স্পটলাইটে দেখে নিন দুই দলের এমন খেলোয়াড়দের।

ফ্রান্স

 

এমবাপ্পে

প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ভেঙেচুরে ফেলার ম্যাজিক নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে জ্বলে উঠেছেন ফ্রান্সের এমবাপ্পে। ফ্রান্সের এই তরুণ ফরোয়ার্ড যে একাই খেলার মোড় পাল্টে দিতে পারেন তার চাক্ষুস প্রমাণ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় রাউন্ড, নকআউট পর্বের খেলায় আর্জেন্টিনার জালে জোড়া গোল জড়িয়ে দিয়েছিলেন এই এমবাপ্পে। বলা যায় তাকে সামলাতে না পেরেই মেসির আর্জেন্টিনা ঘরে ফিরে গেছে। সেমিফাইনালেও বেলজিয়ামকে দারুণ ভুগিয়েছেন তিনি। এমবাপ্পের ম্যাজিক তার দুরন্ত দৌড় আর পজিশনিং। কোনো ছকে তাকে আটকে রাখা যায় না। ডি-বক্সে বল গেলেই কোত্থেকে যেন হাজির এমবাপ্পে!

 

পল পগবা

ফ্রান্সের মিডফিল্ডের প্রাণভোমরা তিনি। তার পা থেকে বাড়ানো বল ফরোয়ার্ড আর দুই উইংয়ে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য রসগোল্লার মতোই সুস্বাদু। বিশ্বকাপজুড়েই পগবার একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা গেছে মাঝমাঠে। ফ্রান্সের পায়ে বল দখলের পেছনেও তার কারিশমা রয়েছে। দারুণ পরিশ্রমী পগবার পা থেকে বল সরাতে না পারলে ভুগতে হবে ক্রোয়েশিয়াকে।

 

গ্রিজম্যান

মেসি-রোনালদো-নেইমার নয়। রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় তারকা এখন ফ্রান্সের স্ট্রাইকার গ্রিজম্যান। দেশমের ট্যাকটিস তাকে পুরোদস্তুর রহস্যঘেরা ফরোয়ার্ড বানিয়ে ফেলেছে। তিনি আছেন মাঠজুড়ে। গোল দিচ্ছেন, গোলা বানাচ্ছেন। মাঝমাঠে নেমে বল পাঠাচ্ছেন ফরোয়ার্ডদের। কখনো সেন্টারব্যাকে নেমে সাহায্য করছেন রক্ষণভাগে। তার এই রহস্যময় নৈপুণ্যে ফ্রান্স এখন বিশ্বকাপ জয়ের সুবাস পাচ্ছে। গ্রিজম্যান যে সত্যিকারের ‘ম্যাচ উইনার’ তা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

 

 

ক্রোয়েশিয়া

ক্রামারিচ

স্পেনকে বাড়ি পাঠিয়ে রাশিয়া তখন সেমিফাইনালে পৌঁছার স্বপ্ন দেখছিল। সে স্বপ্ন ভাঙান ক্রোয়েশিয়ার ক্রামারিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়াকে বিদায় দেওয়ার পেছনে নায়ক ছিলেন ক্রামারিচ। তার দুর্দান্ত গোলেই সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। তাকে নির্বিষ ভাবার কোনো কারণ নেই। ক্রোয়েশিয়ার যে দুই ফরোয়ার্ড মাঠে নামে সেটা কি খেয়াল করেছেন? একটু মাঝমাঠে নেমে আসায় বিভ্রম ঘটতে পারে বৈকি! সামনে তিনজন সৈন্য পাঠিয়ে গোল করতে মরিয়া ক্রোয়েশিয়ার কোচ দালিচ। ক্রামারিচ কোচের পছন্দের স্ট্রাইকার। তাই ফরোয়ার্ড লাইনে ক্রামারিচের ওপর ভরসা রেখেছেন তিনি। ফাইনালে ক্রামারিচ জ্বলে উঠলে ফ্রান্সের দুশ্চিন্তা বাড়বে, এ তো সহজেই অনুমান করা যায়।

 

লুকা মদরিচ

এ সময় বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে দেখা হচ্ছে লুকা মদরিচকে। তার একক নৈপুণ্যে যে জ্বলজ্বল করছে ক্রোয়েশিয়া তা মানতে কষ্ট হবে না কারও। ক্রোয়েশিয়ার ফুসফুস হয়ে উঠেছেন তিনি। মাঝমাঠ থেকে বল পাঠাচ্ছেন মাঠের দুই কোনায়। কখনো কখনো নিজেই তেড়েফুঁড়ে উপরে উঠে আসছেন। ফলস নাইনে পৌঁছে স্ট্রাইকারের সঙ্গী হয়ে উঠছেন। তাকে সামলানোর কোনো অঙ্ক বের করতে পারেনি কেউ। যে কারণে প্রতিটি ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়া তার কাছ থেকে পাচ্ছে অভাবনীয় সাহায্য। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় বলতে হাতেগোনা যে দু-একজনের নাম সামনে আসে তার প্রথমজনও মদরিচ। ক্রোয়েশিয়াকে পৌঁছে দিয়েছেন ফাইনালে। ইতিহাস লেখার এই সুযোগ তৈরির কারিগর তিনি। ক্রোয়েশিয়ার মূলস্তম্ভ মদরিচ রয়েছেন স্পটলাইটের আলোয়।

 

রাকিতিচ

ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডের আসল ভরসা ইভান রাকিতিচ। লুকা মদরিচকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন তিনি। যে কারণে বিশ্বকাপজুড়ে ক্রোয়েশিয়াকে কখনো বল পেতে সমস্যা হয়নি। বল দখলে রাখা ও আক্রমণ তৈরির জন্য ফরোয়ার্ডদের পজিশনে পৌঁছার সুযোগও মিলছে রাকিতিচ-মদরিচ জুটির জন্য। শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনাল- নকআউট পর্বের গুরুত্বপূর্ণ দুই খেলায় পেনাল্টি নিয়েছেন রাকিতিচ। মেসি-রোনালদো যখন পেনাল্টি মিস করেন তখন দুই পেনাল্টি থেকেই গোল করেছেন রাকিতিচ। সেই গোলেই ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া। তার ওপর কতটা আস্থা রাখা যায়, ভাবতে পারছেন?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর