শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

মুসলিম সাহিত্যের বিখ্যাত কবি

মুসলমানরা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় এগিয়ে আসে সুলতানি আমলে। এর আগে বাংলা সাহিত্যের বিষয়বস্তু ছিল বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মের শুদ্ধসাধন পদ্ধতির কথা ও লৌকিক দেব-দেবীদের ক্রিয়াকলাপ। তখনকার কবিরা দেব-দেবীর মাহাত্ম্য নিয়ে ব্যাপৃত থাকতেন, মানবীয় বিষয় নিয়ে সাহিত্য রচনার কথা তাদের চিন্তায়ই আসেনি। কিন্তু মুসলিম কবিরা সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে কেবল ধর্মকেই প্রাধান্য দিলেন না, তারা মানবীয় কাহিনি নিয়েও সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করলেন। মুসলিম শাসকরাও তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করলেন। সে সময়কার মুসলিম সাহিত্যের বিখ্যাত কজন কবি নিয়ে আজকের রকমারি আয়োজন।

তানিয়া তুষ্টি

মুসলিম সাহিত্যের বিখ্যাত কবি

দৌলত উজির বাহরাম খান

আনুমানিক ১৬ শতকের বাংলা কবি দৌলত উজির বাহরাম খান। তার প্রকৃত নাম ছিল আসাউদ্দিন। চট্টগ্রাম জেলার ফতেয়াবাদ অথবা জাফরাবাদে গুণী এই কবির জন্ম। বাবা মোবারক খান ছিলেন চট্টলাধিপতির উজির (মন্ত্রী)। অল্প বয়সে বাবাকে হারালে চট্টগ্রামের অধিপতি নেজাম শূর বাবার উজির পদে তাকে অভিষিক্ত করেন। রাজকাজের পাশাপাশি তিনি সাহিত্যাঙ্গনে রেখেছেন দৃপ্ত পদচারণা। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেননি, তবে তিনি স্বশিক্ষিত ছিলেন। কবি আরবি, ফার্সি ও সংস্কৃত ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। আর তারই প্রমাণ মিলেছে দৌলত উজির বাহরাম খান রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো থেকে। ‘লাইলী-মজনু’ তার রচিত রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান। কাব্যধারায় একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে এটি স্থান পেয়েছে। এখন পর্যন্ত সাহিত্যের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে এই কাব্য। ড. মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, ১৫৬০ থেকে ১৫৭৫ সালের মধ্যে কবি লাইলী-মজনু কাব্য রচনা করেছিলেন। কবি দৌলত উজির বাহরাম খান রচিত লাইলী-মজনু কাব্য ফার্সি কবি জামিরের লাইলী-মজনু নামক কাব্যের ভাবানুবাদ। লাইলী-মজনু প্রেমকাহিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এই কাহিনির মূল উৎস আরবি লোকগাথা। কাহিনিটিকে ঐতিহাসিক দিক থেকে সত্য বিবেচনা করা হয়। আমির-পুত্র কায়েস বাল্যকালে বণিক-কন্যা লাইলীর প্রেমে পড়ে মজনু বা পাগল নামে খ্যাত হন। লাইলীও মজনুর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করেন। কিন্তু উভয়ের বিবাহে আসে বাধা। ফলে মজনু পাগল হয়ে বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। অন্যদিকে লাইলীর অন্যখানে বিয়ে হলেও তার মন থেকে যায় মজনুর কাছে। তাদের দীর্ঘ বিরহজীবনের অবসান ঘটে করুণ মৃত্যুর মাধ্যমে। এই মর্মস্পর্শী বেদনাময় কাহিনি অবলম্বনেই লাইলী-মজনু কাব্য রচিত। ভারতের আমীর খসরু ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দে, পারস্যের আবদুর রহমান জামির ১৪৮৪ খ্রিস্টাব্দে এবং আবদুল্লাহ হাতিভি ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে ফার্সি ভাষায় এ কাব্য রচনা করেন। বাহরাম খান তাদের কোনো একজনের কাব্য অনুসরণ করেছিলেন। লাইলী-মজনু মূলত আধ্যাত্মিক কাব্য, কিন্তু বাংলা অনুবাদে তা পরিণত হয়েছে মানবিক প্রেমকাব্যে। বাহরাম খানই প্রথম এমন বিশ্বখ্যাত বিরহমূলক প্রেমকাহিনি নিয়ে বাংলা ভাষায় কাব্য রচনা করেন। বাহরাম খানের অপর আখ্যানকাব্য ইমাম-বিজয়। ইমাম-বিজয়ের বিষয়বস্তু কারবালার বিষাদময় যুদ্ধকাহিনি। সাহিত্যে দৌলত উজির বাহরাম খান রচিত প্রথম কাব্যের নাম জঙ্গনামা বা মক্তুল হোসেনও সমান জনপ্রিয়। লাইলী-মজনু তার দ্বিতীয় কাব্য।

 

শাহ মোহাম্মদ সগীর

মুসলিম কবিদের মধ্যে শাহ মোহাম্মদ সগীর অন্যতম। আনুমানিক ১৩ থেকে ১৪ শতকের মুসলমান কবিদের মধ্যে তিনি প্রাচীনতম। ধারণা করা হয়, গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহর রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১১ খ্রিস্টাব্দ) তার কাব্য ‘ইউসুফ-জুলেখা’ রচিত। শাহ মোহাম্মদ সগীর ছিলেন সুলতানের রাজকর্মচারী। তার লেখায় ধর্মীয় প্রেরণা লক্ষ্য করা যেত বেশি। বাংলা সাহিত্যে মানবীয় রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার পথিকৃৎ এই কবি। সে যুগে দেশি ভাষার রসনির্ভর ধর্মকাহিনি রচনা করার মধ্যে কবি সৎসাহসের পরিচয় দেন। ইউসুফ-জুলেখায় নবী হজরত ইউসুফ (আ.)-এর সংক্ষিপ্ত কাহিনি ফিরদৌসী-জামির অনুসরণে কল্পিত হলেও তাতে বাংলাদেশ ও বাঙালি-জীবনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে। কারণ তাকে তিনি বাংলায় একটি মৌলিক কাব্যের মর্যাদা দিয়ে গ্রন্থিত করেছেন। ড. এনামুল হকের মতে, কবি ইউসুফ-জুলেখার মূল কাহিনি সংগ্রহ করেন ‘কিতাবুল কোরআন’ থেকে। কিন্তু কাব্যটি ধর্মীয় উপাখ্যান নয়, রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান যা মানবজীবন রসে সিক্ত। শাহ মোহাম্মদ সগীর মূলত কোরআনে বর্ণিত ইউসুফ-জুলেখাকে নতুন আকৃতিতে মোহনীয় মূর্তি গড়েছেন। তার উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের কাছে ধর্মীয় প্রণয়োপাখ্যানটি বোধগম্য করা এবং বাস্তবতা বর্জিত পুঁথিসাহিত্য থেকে পাঠককে প্রকৃত সাহিত্য রসে ফিরিয়ে আনা। শাহ মোহাম্মদ সগীর রসপ্রধান সাহিত্য সৃষ্টির প্রেরণা নিয়ে যে যুগের উন্মোচন করেছেন পরবর্তীতে তা অনেকেই অনুকরণ করেন।

 

দোনাগাজী চৌধুরী

মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যকে যে কজন কবি সমৃদ্ধ ও গৌরবোজ্জ্বল করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম দোনাগাজী। তিনি বাংলায় ‘আলিফ লায়লা’ অবলম্বনে প্রথম রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ‘সয়ফুল মুুলুক-বদিউজ্জামাল’ রচনা করেন। তারপর মহাকবি আলাউল (১৫৯৭-১৯৭৩) ও মালে মুহম্মদ (উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভ) একই কাহিনি অবলম্বনে কাব্য রচনা করেন। গবেষকরা মনে করেন, দোনাগাজী আনুমানিক ১৬ শতকের মধ্যভাগ থেকে ১৭ শতকের প্রথমভাগের কবি। নিজের লেখা কাব্যে, পুঁথিতে বা অন্য কেউ তার জন্মসাল উল্লেখ করেননি। গবেষক ড. মুহম্মদ এনামুল হক মনে করেন, ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে দোনাগাজীর আবির্ভাব।  দোনাগাজীর জন্মস্থান নিয়েও কয়েকটি তথ্য প্রচলিত রয়েছে। কাব্যে তিনি জানিয়েছেন, ‘দোল্লাই’ দেশে তার নিবাস। দোল্লাই পরগনা বর্তমান কুমিল্লা জেলায় অবস্থিত। দোনাগাজীর ‘চৌধুরী’ উপাধি এবং কাব্যে ক্ষুরধার প্রতিভা দেখে আহমদ শরীফ অনুমান করেছেন, ‘তিনি ধনী-মানী বংশের সন্তান। দেশ প্রচলিত বিদ্যা ও সংস্কৃতিতে তিনি অভিজ্ঞ ছিলেন।’ দোনাগাজী রচিত ‘সয়ফুল মুলুক-বদিউজ্জামাল’ কাব্যের শুরুতে কেবল স্তূতিপর্বে আল্লাহ-রসুল-পীরের বন্দনা রয়েছে। কোনো রাজা, আমাত্য বা অন্য কারও প্রশংসা করা হয়নি। অর্থাৎ কোনো পৃষ্ঠপোষকতা কবি নেননি। হয়তো নিজে বিত্তবান হওয়ায় পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণের প্রয়োজন পড়েনি। এ থেকে অনুমান করা যায়, তার কাব্য রচনার পেছনে আত্মোৎসাহ কাজ করেছে।

 

শেখ ফয়জুল্লাহ

শেখ ফয়জুল্লাহ মধ্যযুগের মুসলিম কবিদের মধ্যে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তার জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। বিভিন্ন মতে, তার জন্মস্থান হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত, দক্ষিণ রাঢ় এবং কুমিল্লার নাম উল্লেখ ছিল। ১৫৫৯ থেকে ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দ সময়ে বাংলার কররানী বংশের শাসনের অবসান ঘটেছে। ১৫৭৫ সালে বাংলায় শুরু হয় মুঘল আমল। এমন একটি সময়ে শেখ ফয়জুল্লাহ বেঁচে ছিলেন। শেখ ফয়জুল্লাহর সব মিলে পাঁচটি কাব্যের খোঁজ পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো- ‘গোরক্ষবিজয়’, ‘গাজীবিজয়’, ‘সত্যপীর (১৫৭৫)’, ‘জয়নবের চৌতিশা’ এবং ‘রাগনামা’। রংপুরের খোঁট দুয়ায়ের পীর ইসমাইল গাজীর জীবন নিয়ে রচিত গাজীবিজয় কাব্য। সত্যপীরের আধ্যাত্মিক সাধনা অবলম্বনে গড়ে উঠেছে সত্যপীর কাব্যটি। জয়নবের চৌতিশার বিষয়বস্তু মহররমের মর্মান্তিক ঘটনা। রাগনামাকে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সংগীতবিষয়ক কাব্য মনে করা হয়। দেখা যায় শেখ ফয়জুল্লাহর অধিকাংশ কাব্যের বিষয়ই পীর-দরবেশ এবং কারবালার মতো মুসলিম ঐতিহ্য। তবে গোরক্ষবিজয় কাব্য নাথসাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত। অথচ নাথসাহিত্য লিখেছিলেন শিবপন্থি নাথযোগীরা। এই নাথযোগীরা মধ্যযুগের বাংলায় দেহকেন্দ্রিক সুবিশাল এক ধর্মীয় আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। শেখ ফয়জুল্লাহ সমাজের সবচেয়ে বড় শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আর তা হলো যা জানা ও বোঝার বিষয় তা কখনোই দ্বন্দ্বের বিষয় হতে পারে না। তিনি চিরায়ত দ্বন্দ্বকে অতিক্রম করতে পেরেছিলেন।

 

সৈয়দ সুলতান

সৈয়দ সুলতান আনুমানিক ১৫৫০-১৬৪৮ সালের বাংলা সাহিত্যের কবি ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মহাকবি সৈয়দ সুলতান কাহিনিকাব্য ও শাস্ত্রকাব্য রচয়িতা হিসেবে পরিচিত। তার বাংলা ভাষার ওপর বিশেষ দখল ছিল। তিনি একাধারে ফার্সি ও উর্দু ভাষায় কাব্য রচনা করেন। বাংলা ভাষায় রচিত বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাব্য নবীবংশ, জ্ঞানপ্রদীপ, জ্ঞানচৌতিশা ও জয়কুম রাজার লড়াই। কবির সর্ববৃহৎ রচনা নবীবংশ। প্রায় ২৫ হাজার পঙ্ক্তিতে নবীবংশ কাব্যটি রচনা করেন। তার শবে মেরাজ গ্রন্থটির আনুমানিক রচনাকাল ১৫০০ সালের শেষভাগ। নবীবংশ কাব্যের প্রথমে আল্লাহর গুণকীর্তন করে কবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবৃত্তান্ত শুরু করার আগে ১৮ জন নবীর কাহিনি বর্ণনা করেছেন। হজরত আদম (আ.)-এর কাহিনি প্রথম এবং ঈসা (আ.)-এর কাহিনি দিয়ে নবীবংশ প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটান। এভাবে কবি এ মহাকাব্যের প্রথম খন্ডের সমাপ্তি টানেন। মহাকবি সৈয়দ সুলতান স্বসমাজে ভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রভাবকে মনে-প্রাণে বরণ করে নিতে পারেননি। তাই স্বতন্ত্র ও ব্যাপকভাবে তিনি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মুসলমানদের ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজনীয়তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। আর তাই সিলেট অঞ্চলের মুসলমানদের সাহিত্যিক রসপিপাসা নিবারণের লক্ষ্যে সৈয়দ সুলতান ‘নবীবংশ’ লিখতে উৎসাহিত হয়েছিলেন।

 

জৈনুদ্দিন

মধ্যযুগীয় অর্থাৎ ১৫ শতকের আরেক খ্যাতিমান কবি জৈনুদ্দিন। একটিমাত্র কাব্য ‘রসুলবিজয়’ রচনা করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। সাহিত্যাঙ্গনে এখন পর্যন্ত প্রশংসনীয় হয়ে আছেন তিনি। শাহ মোহাম্মদ সগীর রসপ্রধান সাহিত্য যুগের উন্মোচন করলে তার অন্যতম অনুসারী হন জৈনুদ্দিন। তিনি গৌড়ের সুলতান ইউসুফ শাহর (১৪৭৪-১৪৮১ খ্রিস্টাব্দ) সভাকবি ছিলেন। সুলতান ছিলেন তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক।

কবি ভণিতায় বার বার সুলতানের নাম উল্লেখ করেছেন। কবির বাবার নাম ছিল মৈনুদ্দিন। তারা নিজেদের খলিফা আবুবকর সিদ্দিকীর বংশধর বলে দাবি করেন। জৈনুদ্দিন ছিলেন সুফি ধারার অনুসারী। শাহ মোহাম্মদ খান ছিলেন তার পীর। রসুলবিজয় যুদ্ধবিষয়ক একটি কাহিনিকাব্য। কাব্যটি হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও ইরাক অধিপতি জয়কুমের মধ্যকার দীর্ঘ যুদ্ধের বর্ণনা করে। যুদ্ধে ইসলামের বিজয় দেখানো হয়েছে। ‘রসুলবিজয়’-এর গল্পাংশ কোনো ফার্সি পুস্তক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তারপর কবি তাতে নতুন রূপ দিয়েছেন।

 

নসরুল্লাহ খাঁ

মধ্যযুগের আরেক বাঙালি কবি ছিলেন নসরুল্লাহ খাঁ। আনুমানিক ১৫৬০-১৬২৫ সালে তিনি অসামান্য কিছু কাব্য রচনা করেন। এ পর্যন্ত তার রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো- জঙ্গনামা, মুসার সাওয়াল, শরিয়তনামা ও হিদায়িতুল ইসলাম। তার রচিত জঙ্গনামা ও শরিয়তনামা গ্রন্থে নিজের সুদীর্ঘ আত্মবিবরণী দেখা যায়। শরিয়তনামায় লিখিত আত্মবিবরণী থেকে জানা যায়, কবির পূর্ব পুরুষ হামিদুদ্দিন খান গৌড় দরবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। আধুনিক দক্ষিণ চট্টগ্রামের ‘বাহার ছড়া’ নামক স্থানে তিনি বসতি স্থাপন করেছিলেন। কবি নসরুল্লাহর কোনো সন্তান ছিল না। কিন্তু তার ভাইসহ বংশের অন্যরা এখনো বাঁশখালী থানার জলদি গ্রামে বসতি স্থাপন করে আছেন। বংশতালিকা থেকে জানা যায়, কবি ষোড়শ শতকের শেষ ও সপ্তদশ শতকের প্রথমদিকে জীবিত ছিলেন। ১৬০০ সালের পরবর্তীকালে বাংলার মুসলিম সাহিত্যে একটি স্বর্ণযুগ দেখা যায়। সেই যুগের কবি ছিলেন তিনি।

সর্বশেষ খবর