শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

মনীষীদের দৃষ্টিতে মহানবী (সা.)

মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.), পিএইচডি

মনীষীদের দৃষ্টিতে মহানবী (সা.)

মানব জাতির জন্য আশীর্বাদ

পৃথিবীর বুকে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন সমগ্র মানব জাতির জন্য ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। পবিত্র কোরআনের ৩৩ নম্বর সুরা আল আহজাবের ৪০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ প্রিয় নবী (সা.) কে ‘খাতামুন নবী’ বা শেষ নবী হিসেবে প্রেরণের ঘোষণা দিয়েছেন। তাই তার চরিত্র, সার্বিক গুণাবলি ও জীবনাচার ছিল বিশুদ্ধতম যা যুগের পর যুগ অনুকরণীয়। তবে বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে বিশেষত অভাব, অনটন, বিপদ, যুদ্ধে প্রতিকূল পরিবেশের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বিশ্বনবী (সা.)-কে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই মানবসমাজে উপস্থাপন করেছেন, যেন কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত ধনী, দরিদ্র, বিপদগ্রস্ত কিংবা জীবন-সংগ্রামে পরাজিত কেউ কখনো তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয় বা তার আদর্শকে অসম্ভব গণ্য না করে। অন্যদিকে ৭ নম্বর সুরা আল রাফের ১৫৭ নম্বর আয়াতে তাকে ‘অক্ষর জ্ঞানহীন’ নবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তার পবিত্র জবান থেকেই মানুষ পেয়েছে পৃথিবীর সর্বকালের সেরা গ্রন্থ, সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান এবং পৃথিবী ধ্বংসের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত অনুসরণীয় পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান আল কোরআন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সমালোচক ছিল। আরও ছিল চলার পথে কাঁটা ছড়ানোর মতো বুড়ি কিংবা পাথর ছুড়ে দাঁত ভাঙা বা রক্তাক্ত করার মতো জালেম বা শত্রু। তবে একজন মানুষ এহেন বিপদে কীভাবে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখবে বা ধৈর্য ধারণ করবে, তার অনন্য উদাহরণ দিতেই যেন মহানবী (সা.) এর জীবনে এ ধরনের বিপদ এসেছিল। তার উম্মত বা অনুসারী হতে পারা নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয় এবং দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির উপায়। অনেক নবী-রসুলের মনেও তার উম্মত হতে না পরার দুঃখ ছিল। যুগে যুগে বিভিন্ন কুচক্রী মহল নানা প্রলোভনের শিকার হয়ে মহানবী (সা.)-এর নামে কটূক্তি, ব্যঙ্গতম জ্ঞানে বা কবিতা রচনা বা ব্যঙ্গাত্মক ছবি কার্টুন আঁকার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে মহানবী (সা.)-এর সার্বিক বিশালতার কাছে এই প্রচেষ্টা কখনো সফল হয়নি। বরং তারাই ধীকৃত হয়েছে।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন এবং তার মাধ্যমে সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের কথা বর্ণিত হয়েছে পৃথিবীতে প্রবর্তিত অন্যান্য ধর্মের ধর্মগ্রন্থসমূহে। তাকে শ্রেষ্ঠ মানব, আলোক দিশারি, আদর্শ স্বামী, আদর্শ বাবা, চৌকস সেনানায়ক, সফল ব্যবসায়ী, সার্থক রাষ্ট্রনায়ক, অনুকরণীয় চরিত্র বা রোল মডেল বলে স্বীকার করেছেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর বহু দেশের বহু শ্রেণির বহু জাতির পন্ডিতগণ। মুসলমান না হয়েও মহানবী (সা.)-এর পবিত্র জীবনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন বিশ্বসেরা অসংখ্য ব্যক্তিত্ব।

 

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পয়গাম্বর : বার্নার্ড শ

জর্জ বার্নার্ড শর এই সাক্ষাৎকার বা বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ পরবর্তীতে বহু লেখায় উদ্ধৃত করা হয়। এ বিষয়ে ১৯৪৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘দি ইসলামিক রিভিউ’ ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে জর্জ বার্নার্ড শর মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। পরের দিনই বার্নার্ড শ এই চিঠির উত্তর দেন। চিঠিতে একদিকে কোনো কোনো ভুল উদ্ধৃতিকে তিনি অস্বীকার করেন। অন্যদিকে আবারও হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রশংসা করে লেখেন, আমি সব সময়ই হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে একজন অন্যতম ও বিশ্বের গয়গাম্বর হিসেবে গণ্য করি

 

ইংরেজি সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ জর্জ বার্নার্ড শ। আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে ১৮৫৬ সালে জন্ম নেওয়া বার্নার্ড শ মাত্র ২০ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান এবং একজন লেখক, সাহিত্যিক, প্রবন্ধকার, সমালোচক, সর্বোপরি নাট্যকার হিসেবে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। বিংশ শতকের প্রথম অংশে তার লেখা প্রবন্ধ, সমালোচনা ও বিদ্রুপাত্মক নাটক সমগ্র ব্রিটিশ রাজ্যে কাঁপন ধরিয়েছিল। ইংরেজি সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য ১৯২৫ সালে তিনি নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। অন্যদিকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও তিনি ছিলেন সক্রিয়। একজন নির্ভীক ও স্পষ্টবাদী বক্তা, লেখক ও সমালোচক হিসেবে তার সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়।

বার্নার্ড শ তার স্ত্রীকে নিয়ে কানাডার পর্যটন জাহাজ ‘অ্যামপ্রেস অব ব্রিটেন’যোগে ১৯৩২ সালের শেষাংশে ভ্রমণে বের হন। ১৯৩৩ সালের জানুয়ারি মাসে এই জাহাজ তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে উপকূলে পৌঁছে। বোম্বে শহরেই ছিল তার মূল বিচরণ। তাই ভালোভাবে ভারতকে দেখতে না পারার আক্ষেপও ছিল তার মনে। ভারতে স্বল্পমেয়াদের ভ্রমণ শেষে তার জাহাজ কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রা করে।

দি লাহোর আহম্মদিয়া ইসলামিক মুভমেন্টের ইন্টারনেটভিত্তিক প্রকাশনায় প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও ইসলামভিত্তিক বিশ্বখ্যাত বহু বইয়ের রচয়িতা ড. জাহিদ আজিজের লেখা ‘জর্জ বার্নার্ড শস ভিউস অন ইসলাম’ শীর্ষক একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধের আলোকে জানা যায়, ১৯৩৪ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (অবিভক্ত) লাহোর (বর্তমানে পাকিস্তান) থেকে প্রকাশিত ‘দি লাইট’ ম্যাগাজিনে ভারতে ভ্রমণরত জর্জ বার্নার্ড শর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। দুর্লভ এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন ‘দি লাইট’ ম্যাগাজিনের বোম্বে প্রতিনিধি মনির হেইন্দাদে। এই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ইসলাম এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে জর্জ বার্নার্ড শর ধারণা যেভাবে ফুটে ওঠে, তা তুলে ধরা হলোÑ

‘হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রবর্তিত ধর্মের গভীরতা, শক্তিমত্তা ও বহুমাত্রিকতার জন্য আমি সমীহ করি। আমার কাছে মনে হয় এটাই একমাত্র ধর্ম যা যুগে যুগে প্রাসঙ্গিকভাবেই টিকে থাকবে এবং পৃথিবীর মানুষ নির্দ্বিধায় তা গ্রহণ করবে বলে আমি মনে করি। আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি ইউরোপের মানুষ যেভাবে বর্তমানে হজরত মুহাম্মদের (সা.) আদর্শ ও বিশ্বাসকে গ্রহণ করতে শুরু করেছে, ভবিষ্যতেও তা চালু থাকবে। ইউরোপের কিছু ধর্মের গ্রন্থ অজ্ঞতা ও ধর্মান্ধতার কারণে অতিরঞ্জিত। এতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এসব গ্রন্থ তাকে এবং তার প্রবর্তিত ধর্মকে ঘৃণা করতে শিখিয়েছে। তাদের কাছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন খ্রিস্টান ধর্মবিরোধী। আমি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পড়েছি। তিনি একজন মহান ব্যক্তি। তাঁকে খ্রিস্টানবিরোধী নয় বরং মানবতার রক্ষাকর্তা বলা উচিত।

আমি মনে করি তাঁর মতো একজন মানুষ যদি আধুনিক বিশ্বের অধিকর্তা বা একক শাসক হতেন, তবে তিনি বিশ্বের বিরাজমান সমস্যার সমাধান এমনভাবে করতেন যে, তা বিশ্বে বহুকাক্সিক্ষত সুখ-শান্তি রয়ে আনত। বিংশ শতকে কারলাইল, গোয়েথ কিংবা গিবনের মতো সৎ ও সত্যবাদী দার্শনিক বা চিন্তাবিদরা হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রবর্তিত ধর্ম ও আদর্শের অন্তর্নিহিত শক্তি ও মাধুর্য গ্রহণ করেছেন, যা ইসলামের প্রতি ইউরোপীয় জনগণের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। কিন্তু বর্তমান ইউরোপ অনেক এগিয়ে গেছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ধর্ম সবাইকে মুগ্ধ করতে শুরু করেছে। পরের শতকে যাবতীয় সংকট সমাধানে এই ধর্মের ভূমিকা বা গুরুত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমার ভবিষ্যদ্বাণী বুঝতে হবে। এমনকি বর্তমানকালেও আমার চেনা-জানা অনেকেই এবং বহু ইউরোপবাসী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি আস্থা স্থাপন করেছে। ইউরোপের বুকে ইসলামের প্রসার বৃদ্ধি শুরু হয়ে গেছে।

জর্জ বার্নার্ড শর এই সাক্ষাৎকার বা বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ পরবর্তীতে বহু লেখায় উদ্ধৃত করা হয়। এ বিষয়ে ১৯৪৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ‘দি ইসলামিক রিভিউ’ ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে জর্জ বার্নার্ড শর মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। পরের দিনই বার্নার্ড শ এই চিঠির উত্তর দেন। চিঠিতে একদিকে কোনো কোনো ভুল উদ্ধৃতিকে তিনি অস্বীকার করেন। অন্যদিকে আবারও হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রশংসা করে লেখেন, আমি সব সময়ই হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে একজন অন্যতম ও বিশ্বের গয়গাম্বর হিসেবে গণ্য করি। যিশু খ্রিস্টের কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যর্থতার বিপরীতে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন। আবার আমি এটাও বলেছি যে, খ্রিস্টধর্ম বিকৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে সংস্কারের মাধ্যমে রক্ষা পায়। একইভাবে এই পৃথিবীর জয় করার উপায় হতে পারে সত্যিকারের ইসলাম।

 

মহানবী (সা.) ছিলেন সত্যের সন্ধানী : মহাত্মা গান্ধী

মহাত্মা গান্ধী মহানবী (সা.) সম্পর্কে আরও বলেন, তিনি দরিদ্রতার মাঝে দিন অতিবাহিত করেছেন, অথচ তাঁর সামনে ছিল অগাধ ধনসম্পদ লাভের সুযোগ। আমি যখন তাঁর নিজের, পরিবার এবং অনুসারীদের অবর্ণনীয় দুঃখ, দুর্দশা ও দারিদ্র্যের কথা অবগত হয়েছি, তখন আমার চোখ ভিজে যায়। তিনি স্রষ্টার প্রতি একনিষ্ঠ ও অনুগত ছিলেন, সর্বদা স্রষ্টাকে ভয় করতেন এবং তাঁর মনে ছিল মানব জাতির জন্য প্রবল মায়া-মমতা।

 

প্রায় ২০০ বছরের ইংরেজ শাসন, শোষণ এবং সীমাহীন অত্যাচার থেকে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা এনে দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এক ক্ষণজন্ম চরিত্র মোহনদাস করম চাঁদ গান্ধী ওরফে মহাত্মা গান্ধী। তাঁর দেখানো সত্যাগ্রহ, ব্রিটিশ পণ্য বর্জন, শত কষ্ট ও অভাব সহ্য করে স্বাবলম্বী হওয়া এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থে নিজের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত তিনি দেখিয়েছেন, তা কেবল অতিমানবীয় গুণের মানুষের পক্ষেই সম্ভব। অন্যদিকে দেশ স্বাধীন ও ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের জন্য তিনি বেছে নেন অহিংস আন্দোলন। তিনি আঘাত সহ্য করে অত্যাচারীকে পাল্টা আঘাতের পরিবর্তে শান্তির পথে ডেকেছেন। আর আঘাত করে অত্যাচারীরা যে বেশি দিন টিকতে পারে না, তাও দিখিয়ে গেছেন। এখানেই তাঁর মহাত্মা নামের সার্থকতা। ‘দি  টাইমস অব ইন্ডিয়া’ পত্রিকা ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘দি প্রফেট ওয়াজ এ সিকার অব ট্রুথ : মহাত্মা গান্ধী’ (মহানবী (সা.) ছিলেন একজন সত্যের সন্ধানী : মহাত্মা গান্ধী) শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে। প্রবন্ধ মতে, ১৯৩৪ সালের ২৩ জুন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে মহাত্মা গান্ধী আহমেদাবাদে আঞ্জুমান ই ফিদাই ইসলাম নামক একটি সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.)-এর ওপর বক্তৃতা করেন। তার এই বক্তৃতা পরবর্তীতে আহমেদাবাদ থেকে প্রকাশিত ‘হরিজন বন্ধু’ নামক পত্রিকার জুলাই ১৯৩৫ সালের সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। পত্রিকার প্রতিবেদন মতে, মহাত্মা গান্ধী মহানবী (সা.) সম্পর্কে নিম্নোক্ত মন্তব্য করেন- আমি সর্বপ্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় যাই একজন মুসলমানের মালিকানাধীন আইনি প্রতিষ্ঠান বা ল’ ফার্মে চাকরির সুবাদে। সেখানে আমার কয়েকজন মুসলমান বন্ধুর সঙ্গে মেশার সৌভাগ্য হয়, যা বছরের পর বছর বজায় ছিল। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে আমি উপলব্ধি করি যে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন সম্পর্কে আমার জানা উচিত। আমি দক্ষিণ আফ্রিকাতেই তাঁর সম্পর্কে জানা শুরু করি। কিন্তু তা পর্যাপ্ত ছিল না কিন্তু ভারতে ফিরে আমি কারারুদ্ধ হই। এই কারাগার আমার জীবনে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পাঠ করার সৌভাগ্য নিয়ে আসে। আমাদের পাঠলব্ধ জ্ঞান থেকে আমি অনুধাবন করি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন একজন সত্যের সন্ধানী বা সিকার  অব ট্রুথ। তিনি ছিলেন খোদাভীরু। আমি জানি, তোমাদের নতুন কিছু বলছি না। আমি শুধু তোমাদের বুঝাতে চাই কীভাবে তাঁর জীবনী আমাকে মুগ্ধ ও বিমোহিত করেছে।

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দি ডেইলি স্টার পত্রিকার মাসিক প্রকাশনা ‘দি ফোরাম’-এর আগস্ট ২০১০ সংখ্যায় ‘গান্ধী অ্যান্ড ইসলাম’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। সৈয়দ আশরাফ আলীর লেখা এই প্রবন্ধ মতে, মহাত্মা গান্ধী মহানবী (সা.) সম্পর্কে জানতে এতই আগ্রহী ছিলেন যে, যখন তিনি (গান্ধী) মহানবী (সা.) সম্পর্কিত পড়ার মতো কিছু পেতেন না, তখন খুবই দুঃখ অনুভব করতেন। গান্ধীর মতে, আমি শ্রেষ্ঠতম সেই মানুষের জীবন সম্পর্কেও আরও জানতে চাই, যিনি আজ কোটি মানুষের হৃদয়ে প্রভাব বিস্তার করে আছেন। আমি নিশ্চিত যে, এর নেপথ্যে তরবারি বা গায়ের জোরে নয়, বরং মহানবী (সা.)-এর সারল্য, আত্মত্যাগ, দৃঢ়সংকল্প, ভক্ত ও অনুসারীদের প্রতি মমত্ববোধ, সৎসাহস সর্বোপরি নিজের উদ্দেশে ও সৃষ্টিকর্তার ওপর অগাধ আস্থা তাঁকে এই সাফল্য এনে দিয়েছিল। আমি যখন মহানবী (সা.)-এর ওপর দ্বিতীয় বইটি পড়া শেষ করি, তখন আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে এই ভেবে যে, হায়! এই মহান মানুষটিকে আরও জানার জন্য কিছু (বই) আর নেই।

মহাত্মা গান্ধী মহানবী (সা.) সম্পর্কে আরও বলেন, তিনি দারিদ্র্যের মাঝে দিন অতিবাহিত করেছেন, অথচ তাঁর সামনে ছিল অগাধ ধনসম্পদ লাভের সুযোগ। আমি যখন তাঁর নিজের, পরিবার এবং অনুসারীদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা ও দারিদ্র্যের কথা অবগত হয়েছি, তখন আমার চোখ ভিজে যায়। তিনি স্রষ্টার প্রতি একনিষ্ঠ ও অনুগত ছিলেন, সর্বদা স্রষ্টাকে ভয় করতেন এবং তাঁর মনে ছিল মানবজাতির জন্য প্রবল মায়া-মমতা। আল্লামা স্যার আবদুল্লাহ আল মাসুম আল সোহরাওয়ার্দী সংকলিত হাদিসগ্রন্থ পড়ে গান্ধী এতই মুগ্ধ হন যে, এই হাদিস তথা মহানবী (সা.)-এর বাণীকে তিনি কেবল মুসলমান নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য অমূল্য সম্পদ বলে উল্লেখ করেন

 

একজন প্রকৃত মানুষ বিশ্বনেতা ও বীর : কারলাইল

ইসলাম প্রচারে মহানবী (সা.)-এর ধারাবাহিক সংগ্রাম ও চরম আত্মত্যাগের বর্ণনাও পাওয়া যায় থমাস কারলাইলের বক্তৃতায়।

স্কটিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক থমাস কারলাইল একজন ইতিহাসবিদ, রম্য রচয়িতা, গণিতবিদ, প্রবন্ধকার, অনুবাদকারী, দার্শনিক ও পন্ডিত হিসেবে বিশেষভাবে সমাদৃত। গণিতশাস্ত্রে তার প্রবর্তিত তত্ত্ব আজও বিশ্বের এক অনন্য সম্পদ। বহু প্রতিভার অধিকারী এই বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদী পন্ডিত ১৮৪০ সালের ৮ মে ইংল্যান্ডের এডেনবার্গে ইসলাম ও হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে একটি ভাষণ দেন। তিনি নিজে কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ বা ইসলামবিষয়ক গবেষক ছিলেন না। তবুও ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে তার উচ্চমার্গীয় ধারণা তৎকালে ইউরোপে ঝড় তুলেছিল এবং ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দূর ও ইসলাম প্রচারে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিল। থমাস কারলাইলের একজন নেতা শাসক ও বীরবিষয়ক বহু বক্তৃতা বিশ্ব ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে। এসব বক্তৃতা ‘হিরো’ শব্দযুক্ত বিভিন্ন শিরোনামে বিভিন্ন আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে। ‘আর্কাইভ/অরগ/স্ট্রিম/থমাস কারলাইল অন হিরোস লেকচার’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য দলিলে দেখা যায়, একজন প্রকৃত মানুষ, বিশুদ্ধ নেতা এবং বীর হিসেবে তিনি মহানবী (সা.)-এর প্রতি প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অসংখ্যবার ইঙ্গিত করেছেন। একজন প্রকৃত নেতার গুণের কথা বলতে গিয়ে তিনি মহানবীর (সা.) নামও উল্লেখ করেছেন বহুবার। কারলাইল তার বক্তৃতায় মহানবী (সা.)-এর বাল্যকালের নানাবিধ প্রতিকূলতার কথা এবং বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের বর্ণনা দেন। তিনি মহানবী (সা.)-কে বিশ্বাসী ও সত্যবাদী তথা ‘আল আমিন’ বলে সম্বোধন করেন এবং নামের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেন। কারলাইলের বর্ণনায় মহানবী (সা.) ছিলেন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য। তিনি যা ভাবতেন বা বলতেন, তাই করতেন, বিচ্যুত হতেন না বা কথার বরখেলাপ করতেন না। তার প্রতিটি কথাই ছিল অর্থবহ। তিনি ছিলেন মৃদুভাষী এবং কখনো অপ্রয়োজনীয় কথা বলতেন না। কিন্তু যা কিছু বলতেন, তা হতো প্রাসঙ্গিক, বুদ্ধিদীপ্ত, আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ এবং মূল বিষয়ের প্রতি ধাবিত। তিনি ছিলেন একজন খাঁটি ও ভ্রাতৃতুল্য মানুষ। গম্ভীর ও কর্তব্যপরায়ণ হলেও তিনি সবার সঙ্গে সহজে মিশতেন এবং সবার প্রিয়পাত্র ছিলেন। তার স্ত্রী খাদিজা (রা.)-এর ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতা ও সততার পরিচয় দেন, যা তার প্রতি খাদিজা (রা.)-এর শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দেয়। তিনি বিয়ের পর একমাত্র স্ত্রী খাদিজা (রা.)-কেই ভালোবাসতেন এবং তার সঙ্গে অত্যন্ত সুখে-শান্তিতে বসবাস করতেন। কারলাইলের বর্ণনা মতে, ইসলাম প্রচারে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এতই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, তার প্রিয় চাচা ও বাল্যকালে আশ্রয়দাতা আবু তালেব তাকে বিরত থাকতে বলায় মহানবী (সা.) উত্তরে বলেন, যদি আমার ডান হাতে সূর্য আর বাম হাতে চন্দ্র দেওয়া হয় এবং চন্দ্র সূর্যও যদি অনুরোধ করে, তবুও আমি সত্য প্রচার থেকে বিরত থাকব না। ইসলাম প্রচারে মহানবী (সা.)-এর ধারাবাহিক সংগ্রাম ও চরম আত্মত্যাগের বর্ণনাও পাওয়া যায় থমাস কারলাইলের বক্তৃতায়।

 

হাদিস পড়তেন লিও টলস্টয়

টলস্টয় মহানবী (সা.)-এর বাণী বা হাদিসসমৃদ্ধ এই বই রাশিয়ার জনগণের জন্য রাশিয়ান ভাষায় অনুবাদ করতে চেয়েছিলেন

লিও টলস্টয় মূলত একজন রাশিয়ান লেখক, সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক হলেও সমগ্র বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিকদের একজন হিসেবেই তিনি অধিক পরিচিত। ১৮২৮ সালের ২৮ আগস্ট রাশিয়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। নোবেল পুরস্কারের জন্য বহুবার নির্বাচিত হলেও রহস্যময় কারণে এই পুরস্কার তার ভাগ্যে জোটেনি। তার রচিত ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’ বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদতুল্য, যা পৃথিবীর বহু ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ভারত থেকে প্রকাশিত ‘হেরিটেজ টাইমস’ পত্রিকায় ব্রিটেনে বসবাসরত পেশাগত চিকিৎসক এবং লেখক, সংগ্রাহক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিক (এম এস সিদ্দিক) ‘দি বুক- দি সেয়িংস অব মুহাম্মদ (সা.) অ্যান্ড টলস্টয়’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লেখেন।

এই প্রবন্ধ মতে, উনিশ এবং বিংশ শতকের শুরুতে মুসলমান বুদ্ধিজীবীরা পশ্চিমা বিশ্বে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী প্রচারে সচেষ্ট হন। এর মধ্যে ১৮৯১ সালে ‘দি স্পিরিট অব ইসলাম’ বইটি লিখেন। তারপর ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হয় স্যার আবদুল্লাহ আল মামুন আল সোহরাওয়ার্দী রচিত ‘দি সেয়িংস অব মুহাম্মদ (সা.)’। এ বইটি বিভিন্ন পশ্চিমা মনীষীকে প্রভাবিত করেছিল, যার অন্যতম জগৎখ্যাত লিও টলস্টয়।

এই বইয়ের সূত্র ধরে টলস্টয় ও মামুন আল সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে বেশ কিছু চিঠি বিনিময় হয়। প্রবন্ধ মতে, টলস্টয় মহানবী (সা.)-এর বাণী বা হাদিস সমৃদ্ধ এই বই রাশিয়ার জনগণের জন্য রাশিয়ান ভাষায় অনুবাদ করতে চেয়েছিলেন। জীবনের শেষভাগে টলস্টয় এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেন। দরিদ্রদের জন্য নিত্য ভাবনা এবং তাদের সাহায্য করার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা তার স্ত্রী মেনে নিতে পারেননি। তদুপরি রাশিয়ার তৎকালীন অপশাসন তার মনকে বিষিয়ে তোলে। ফলে তিনি ধর্মের মাঝে প্রশান্তি খুঁজতে শুরু করেন।

ডা. এম এস সিদ্দিকের প্রবন্ধের আরও দাবি, শেষ জীবনে টলস্টয় হাতেগোনা যে কয়েকটি বই পড়তেন, তার অন্যতম ছিল মহানবী (সা.)-এর বাণী নিয়ে রচিত এই বই। মামুন আল সোহরাওয়ার্দীর ভাগিনা এবং এদেশের গণতন্ত্রের মানসপুত্র খ্যাত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ভাই হাসান শহীদ সোহরাওয়ার্দী মস্কোর ওমেন্স ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি বিষয়ে অধ্যাপনাকালে লিও টলস্টয়ের কন্যা আলেকজান্ডার টলস্টয়ের সাক্ষাৎ পান। জীবনের শেষভাগে টলস্টয়কে সঙ্গ দেন এই কন্যা এবং তার সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯১০ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এক শীতের রাতে অজানার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যান লিও টলস্টয়। এরপর ২০ নভেম্বর ১৯১০ তারিখে দক্ষিণ রাশিয়ার এস্টাপোভো রেলস্টেশনে তাকে পড়ে থাকতে দেখেন স্টেশন মাস্টার। সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে। তবে মৃত্যুর সময় তার লম্বা শীতের কোটের পকেটে পাওয়া যায় একটি বই। যার নাম ‘দি সেয়িংস অব মুহাম্মদ (সা.)’ অর্থাৎ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণী বা হাদিস। পরবর্তীকালে সাহিত্যিক এবং নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের একটি রচনায়ও এই ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়।

 

স্মরণীয় বাণী

‘আমার বিবেচনায় পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী মানুষের তালিকার শীর্ষে আছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.); যা অনেক পাঠককে অবাক করতে পারে; অন্যরা এ নিয়ে প্রশ্নও করতে পারেন। কিন্তু ধর্মীয় স্তর ও ধর্মনিরপেক্ষ স্তর উভয় ক্ষেত্রে ইতিহাসের পাতায় তিনিই সার্বিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী একমাত্র মানুষ। ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মীয়, উভয় ক্ষেত্রে তিনি সমন্বিতভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন; আমার উপলব্ধিতে যা মানব ইতিহাসে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এককভাবে সবচেয়ে প্রভাবশালী চরিত্রের অধিকারী করেছে।’

 

► মার্কিন  জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জাতীয়বাদী শ্বেতাঙ্গ নেতা এবং জনপ্রিয় লেখক মাইকেল এইচ হার্ট। তথ্য সূত্র : তেহরান টাইমস ৯ নভেম্বর ২০১৯।

 

‘তিনি ছিলেন একাধারে একজন রাষ্ট্রনায়ক (সিজার) ও ধর্মগুরু (পোপ) তবে তিনি ছিলেন কোনো প্রকার চাওয়া-পাওয়া বা ভন্ডামির ঊর্ধ্বে থাকা ধর্মগুরু (পোপ) এবং বিশাল সৈন্যদলবিহীন শাসক (সিজার)। কোনো প্রকার নিয়মিত সৈন্য, দেহরক্ষী, রাজপ্রাসাদ এবং নিয়মিত আয় বা রাজস্ব গ্রহণ ছাড়াই যদি কোনো শাসকের ঐশ্বরিক বা অলৌকিক ক্ষমতাবলে শাসন পরিচালনার অধিকার বা দাবি থাকে, তবে তা ছিল একমাত্র তাঁর (মহানবী সা.-এর)। কোনো প্রকার সরকারি দলিল ও দালিলিক সাহায্য ছাড়াই মুহাম্মদ (সা.) সব ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।

 

►  ব্রিটিশ শিক্ষক ও জনপ্রিয় লেখক আর বোসওর্থ স্মিথ। তথ্যসূত্র : আর বোসওর্থ রচিত ‘মোহাম্মদ অ্যান্ড মোহমেড দিজম’। পৃষ্ঠা : ৯২

 

‘সামরিক ক্ষেত্রে জয়জয়কার তাঁর মাঝে কোনো গৌরব বা নিরর্থক অহংকার জন্ম দেয়নি, যা কেবল স্বার্থপরদের মাঝে জন্ম দেয়। তিনি যখন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন, তখনো তার ব্যবহার অসহায় অবস্থায় থাকা মানুষের মতো সারল্য এবং সাধারণ বেশভূষা পরিধানের প্রবণতা দেখা যায়। তিনি রাজকীয় শিষ্টাচার থেকে দূরে ছিলেন। কোনো কক্ষে প্রবেশের পর তার প্রতি অস্বাভাবিক প্রশংসা উচ্চারণ কবলে তিনি অসন্তুষ্ট হতেন।’

 

► মার্কিন লেখক, জীবনী রচয়িতা, ইতিহাসবিদ ও স্পেনে নিযুক্ত আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটন ইরভিং।

তথ্যসূত্র : ওয়াশিংটন ইরভিং রচিত ‘দি লাইফ অব মোহমেড’ পৃষ্ঠা ২৭২-২৭৩।

 

‘হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন একজন অনুকরণীয় মানুষ বা নিখুঁত মডেল। বহু মাত্রিক কর্মক্ষেত্রে এবং মানবতার সব শাখায় তিনি ছিলেন সর্বৈসর্বা বা বীর। সব মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার রীতি এবং সব মানুষের মাঝে সাম্য সৃষ্টির তত্ত্ব ঘোষণা ও প্রচারের মধ্য দিয়ে মুহাম্মদ (সা.) সমাজে মানবতাকে উচ্চস্তরে স্থান করে দিয়েছেন।’

 

►  ভারতীয় দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক, গবেষক ও লেখক কে এস রামকৃষ্ণ রাও।

তথ্যসূত্র : রামকৃষ্ণ রাও রচিত ‘দি প্রফেট অব ইসলাম’

সর্বশেষ খবর