শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মার্কিন নির্বাচনে যত নাটকীয়তা

সাইফ ইমন

মার্কিন নির্বাচনে যত নাটকীয়তা

আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বর্তমানে মনে করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। আর হবেই না কেন? শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, পারমাণবিক অস্ত্র আর বিশ্ব অর্থনীতির চাকা তো তার হাতেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে তাই নাটকীয়তাও কম নয়...

 

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ

চার বছরব্যাপী এই যুদ্ধে ৬ লাখেরও বেশি সৈন্য মারা যায় এবং দক্ষিণের বেশির ভাগ স্থাপনা ধ্বংসের সম্মুখীন হয়

মার্কিন ফেডারেল সরকার আর বিপ্লবী ১১টি দাসনির্ভর প্রদেশের মধ্যে ১৮৬০ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়। রাষ্ট্রপতি জেফারসন ডেভিসের নেতৃত্বে এই ১১টি প্রদেশ আগেই নিজেদের মূল যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা ঘোষণা করেছিল এবং নামকরণ করেছিল কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা। এদের বিরুদ্ধে ছিল রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কনের ইউনিয়ন সরকার আর মার্কিন রিপাবলিকান দল, যারা দাস-প্রথা বিস্তারের ঘোর বিরোধী ছিল। উত্তরের সব রাজ্যে ভোট পেয়ে লিঙ্কন নির্বাচিত হন। দক্ষিণের সব রাজ্যের ভোট পান ব্রেকিংরিজ। নির্বাচনের ফলাফলের ভিতর দিয়ে যেন উত্তর আর দক্ষিণের রাজ্যগুলোর মতভেদ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এর পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাউথ ক্যারোলিনা ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয়, আরও ছয়টি রাজ্য তাদের অনুসরণ করে। ১৯৬১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসব রাজ্য মিলে জেফারসন ডেভিসকে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন। পরে আরও চারটি রাজ্য তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। শুরু হয় আমেরিকার গৃহযুদ্ধ। বিদেশি কোনো শক্তি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। চার বছরব্যাপী এই যুদ্ধে ৬ লাখেরও বেশি সৈন্য মারা যায় এবং দক্ষিণের বেশির ভাগ স্থাপনা ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। কনফেডারেসি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয় একই সঙ্গে শুরু হয় জাতীয় ঐক্য এবং সদ্য স্বাধীন দাসদের তাদের প্রতিশ্রুত অধিকার দেওয়ার অত্যন্ত কঠিন পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়া। ১৮৬০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আব্রাহাম লিঙ্কনের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকার পার্টি ইউনাইটেড স্টেটসের অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাসপ্রথার বিস্তারের বিরোধিতা করে। লিঙ্কন জয়লাভ করেন, কিন্তু তার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ৪ মার্চ, ১৮৬১ সালে সাতটি দাসরাজ্য যেগুলোর অর্থনীতি ছিল তাঁতভিত্তিক, কনফেডারেসি গঠন করে। বিদায়ী ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জেমস বুকানন এবং ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানরা এই বর্জনকে বেআইনি বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

 

সুপ্রিম কোর্টের রায় বুশের পক্ষে

কিন্তু ২০০০ সালের সেই নির্বাচন নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ নির্বাচিত হন...

দুই দফা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট হন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। একবারই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরেছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিল ক্লিনটনের কাছে। ২০১১ সালে তাকে আমেরিকার সর্বোচ্চ সম্মান ‘মেডেল অব ফ্রিডম’ এ ভূষিত করা হয়। যদিও ২০০১ সালে তারই ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ হোয়াইট হাউস জয় করেন এবং ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ২০০০ সালের সেই নির্বাচন নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সিদ্ধান্তে ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ নির্বাচিত হন। ভোটাভুটি হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট আল গোর পেয়েছিলেন ২৬৭ ইলেকটোরাল ভোট আর রিপাবলিকান বুশ পেয়েছিলেন ২৪৬ ভোট। শুধু ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ২৫টি ভোট বাকি ছিল। সেখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান এত কম ছিল যে, সপ্তাহের পর সপ্তাহজুড়ে ভোট গণনা চলছিল। পুনরায় গণনার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট বুশকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার রায় দেয়।

 

৩৫ দফা ভোটাভুটিতেও সমাধান আসেনি

সমান ভোট নিয়ে বিপত্তি ঘটে ১৮০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ছিলেন তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন এবং অ্যারন বার। তাহলে একজন প্রেসিডেন্ট, আরেকজন ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে দুজনের ভোট সমান, ৭৩ ভোট হয়ে যায়। ফলে কে প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার গিয়ে পড়ে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ওপর। সাত দিন ধরে ৩৫ দফা ভোটাভুটিতেও কোনো সমাধান আসেনি। শেষ পর্যন্ত আলেকজান্ডার হ্যামিলটন কয়েকজন ফেডারেলিস্ট প্রতিনিধিকে জেফারসনকে সমর্থন করাতে রাজি করাতে সক্ষম হন।  টমাস জেফারসন প্রেসিডেন্ট হন আর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান অ্যারন বার।

 

প্রথম অনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট

ক্ষমতা গ্রহণের ৩২ দিনের মাথায়  নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে প্রথমবারের মতো কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট উত্তীর্ণ হন প্রেসিডেন্ট হিসেবে

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও নয়জন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচনে অংশ না নিয়েই! তৃতীয় বিশ্বের মতো দাঙ্গা বা বিদ্রোহ করে নয়, বরং আগের প্রেসিডেন্ট মারা যাওয়ায় কিংবা পদত্যাগ করায় ভাইস প্রেসিডেন্ট থেকে সাংবিধানিকভাবেই তারা ক্ষমতা গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এমনি একজন জন টেইলর। ১৮৪০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত উইলিয়াম হ্যারিসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন জন টেইলর। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৩২ দিনের মাথায় হ্যারিসন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে প্রথমবারের মতো কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট উত্তীর্ণ হন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। আমেরিকার ১০ম প্রেসিডেন্ট জন টেইলর চার বছর শাসন করলেও কখনই জনপ্রিয়তা পাননি। উল্টো তার রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কিছু কাজ করায় বহিষ্কৃত হন তার দল হুইগ পার্টি থেকে। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম এ রকম ঘটনা ঘটে।

 

ভোট কেনেডির পক্ষে যায়

১৯৬০ সালের মার্কিন নির্বাচন। টানটান উত্তেজনায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেবারের নির্বাচন। সে বছর প্রথম টিভিতে দেখানো হয়েছিল প্রেসিডেনসিয়াল ডিবেট। টিভি বিতর্কের শুরুতে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জন এফ কেনেডি এবং রিপাবলিকান প্রার্থী রিচার্ড নিক্সন একে অপরকে দেখে হাসলেন। সেই বিতর্কে দুবারের ভাইস প্রেসিডেন্টের বিপক্ষে তুলনামূলক অপরিচিত একজন সিনেটরকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সে সময় আরেকটি বিষয়ে নজির স্থাপন হয়েছিল। তা হলো- প্রথমবারের মতো ঘরে বসে প্রেসিডেনসিয়াল ডিবেট এবং নির্বাচনের ফলাফল দেখা। নিক্সনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। ক্যামেরার সামনে মেকআপ না নেওয়ায় তার চেহারায় প্রচ- তাপ লেগেছিল। অন্যদিকে কেনেডি ছিলেন সুরক্ষিত। নীল রঙের স্যুট এবং শার্ট পরে স্টুডিওর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। নিক্সনের বিপক্ষে কেনেডি প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালোভাবে ক্যামেরায় কথা বলেছেন। সেবার প্রেসিডেনসিয়াল ডিবেট দেখেছিল প্রায় ৭ কোটি মানুষ। রেডিওতে ডিবেট শুনেছিলেন অনেকে। বিতর্কে অবশ্য কেনেডিই জিতেছিলেন। জিতেছিলেন নির্বাচনেও। কেনেডি ১ লাখ ১৯ হাজার ভোটে নিক্সনকে পরাজিত করেছিলেন। আর সেবার হোয়াইট হাউস পেয়েছিল সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। শুধু তাই নয়, কেনেডি প্রথম ও একমাত্র ক্যাথলিক এবং প্রথম আইরিশ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। তবে সেবার নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছিল। কারণ, নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে রেভা মার্টিন লুথার জুনিয়রকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কেনেডি সহায়তা করেছিলেন।  তাতে আফ্রো-আমেরিকান ভোটারদের ভোটগুলো কেনেডির পক্ষে যায়।

 

দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি খুব কম ব্যক্তি

সংবাদমাধ্যম ডায়েচে ভেলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি খুব কম ব্যক্তি। ট্রাম্প হারলে একুশ শতকে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন না। দেখে নেওয়া যাক ইতিহাস। পর পর দুবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন একজন ব্যক্তি। ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার আগে প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। ওবামা প্রথম জিতেছিলেন ২০০৮ সালে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছিলেন ২০১২ সালে। প্রায় সব প্রেসিডেন্টই দ্বিতীয়বার নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তবে আমেরিকার ইতিহাসে এমনও কিছু প্রেসিডেন্ট আছেন, যারা দ্বিতীয়বারের নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন। ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের জনমত সমীক্ষা বলছে, ট্রাম্প হেরে যেতে পারেন। ভোটের ফলাফল এখন পর্যন্ত যা মিলেছে, তাতে লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি। তবে যদি জনমত সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী ট্রাম্প হেরে যান, তাহলে রেকর্ড তৈরি হবে। একুশ শতকে প্রথম কোনো ব্যক্তি পর পর দুবার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। ১৯৯২ সালে শেষবার দ্বিতীয় নির্বাচনে হেরেছিলেন বুশ সিনিয়র। পরবর্তীকালে তার ছেলে জর্জ ডাব্লিউ বুশ জুনিয়র দুবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। সিনিয়র বুশ ক্ষমতায় এসে গাল্ফ ওয়ার বা উপসাগরীয় যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। উপসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন জনতার মনে দেশপ্রেম জাগলেও অর্থনৈতিকভাবে সে সময় আমেরিকা কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। মনে করা হয়, সে কারণেই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতে পারেননি তিনি। ১৯১৩ সালে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন উইলিয়াম টাফট। উড্রো উইলসনের সামনে কার্যত উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। বলা হয়, প্রথমবারেও রুজভেল্টের সাহায্যেই নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় রুজভেল্টের সঙ্গে তীব্র মতপার্থক্য হয় তার। রুজভেল্টের অঙ্কেই দ্বিতীয় দফায় উড্রো উইলসনের কাছে হেরে যান তিনি। ১৯২৯ সালে ৩১তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন হার্বার্ট হুভার। তিনি ক্ষমতায় আসার পরেই আমেরিকায় সবচেয়ে বড় স্টক মার্কেট ক্র্যাশ হয়। সেই ঝড় সামলাতে পারেননি প্রেসিডেন্ট। দ্বিতীয়বার হেরে যান রুজভেল্টের কাছে। ৩৮তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট গেরাল্ড ফোর্ড এবং ৩৯তম প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারও দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের সিংহাসন দখল করতে পারেননি। ট্রাম্প কি পারবেন? সমীক্ষার ফলাফল বলছে, পারবেন না। তবে নির্বাচনের ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়।

 

কনটিনজেন্ট নির্বাচন

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উঠে আসে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের মাধ্যমে প্রথম নির্বাচন। পরবর্তীতে আরও দুবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হয়েছে। ১৯২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকান পার্টির পক্ষে চারজন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেছিলেন। তাদের মধ্যে অ্যান্ডরু জ্যাকসন সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন (পপুলার ভোট)। অন্য প্রার্থীদের চেয়ে ইলেকটোরাল কলেজেও তিনি বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে ইলেকটোরাল কলেজের যত ভোট দরকার, তা তিনি পাননি। ফলে সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দায়িত্ব বর্তায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ওপর, যাকে বলে ‘কনটিনজেন্ট ইলেকশন’। কংগ্রেসম্যানরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন আর সিনেটররা নির্বাচন করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এ ক্ষেত্রে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ সদস্যরা তাদের মোট প্রতিনিধির হিসাবে নয়, একেকটি অঙ্গরাজ্যের হিসাবে একটি করে ভোট দেবেন। সেই ভোটাভুটিতে নির্বাচিত হন জন কুইন্সি অ্যাডামস। কারণ নির্বাচনে চতুর্থ হওয়া (হাউস স্পিকার) হেনরি ক্লের সমর্থকরা অ্যাডামসকে ভোট দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র সেবারই সাধারণ ভোট ও ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে সংখ্যাধিক্য থাকার পরেও পরাজিত হয়েছিলেন কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।  এর পরে অবশ্য ১৮৩৬ সালে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্ধারিত হয়েছিল সিনেটের ভোটে।

সর্বশেষ খবর