হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন শিক্ষক, নাট্যকার, নির্মাতা, গীতিকার। ছবিও এঁকেছেন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তিনি নিজেকে কী হিসেবে দেখতে ভালোবাসেন। তিনি বলেছিলেন তার এত পরিচয় ভালো লাগে না। তার ভাষায়-
‘আমি একজন লেখক। নিজেকে আমি ‘ফিকশন রাইটার’ বলতেই পছন্দ করি। ফিল্মমেকিং অন্যরকম একটা বিষয়। নিজেকে কখনই ফিল্মমেকার বলি না। ছোটবেলা থেকে ছবি দেখার ব্যাপারে খুব আগ্রহ ছিল। লেখালেখি, ছবি দেখা পুরোটাই পেয়েছি বাবার কাছ থেকে। কোনো বাবা এমন রসিক আর সংস্কৃতিমনা হতে পারেন- তা আমার বাবাকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হতো। তো যা বলছিলাম, ছোটবেলা থেকেই ছবি দেখতাম। বড় হওয়ার পর মনে হতো এত সুন্দর ছবি দেখি অথচ আমাদের এখানে ভালো ছবি বানানো হচ্ছে না। আরেকটা আক্ষেপ ছিল। তা হলো- আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবির অভাব। নিজে মুক্তিযুদ্ধ না করলেও পতাকার জন্য বাবাকে হারিয়েছি। তাই একটা দায়বোধ ছিল। ভাবতাম এত বড় একটা মুক্তিযুদ্ধ হলো অথচ তা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো ছবি নেই। এই আফসোস থেকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটা ছবি বানালাম ‘আগুনের পরশমণি’। এই ছবিটি নির্মাণ করতে সব খরচ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তারপর থেকে চালিয়ে যাচ্ছি ছবি বানানো। এর বাইরে যখন যেটা ইচ্ছা করে তা-ই করার চেষ্টা করি। আমি আসলে আনন্দের জন্য বাঁচি।’
‘লেখকরা সাধারণত অহংকারী হয়’
একটা মানুষ এক জীবনে ১০ হাজারের বেশি বই পড়তে পারে না। পৃথিবীতে ১০ হাজারের অনেক বেশি বই আছে। তাই আমি চেষ্টা করি সব সময় বেস্ট ক্লাসিক্যাল বই পড়তে। নতুনদের বই পড়ে সময়টা নষ্ট করতে চাই না। তবে যারা আমাকে বই উপহার হিসেবে দেয়, আমি দায়িত্ব নিয়ে সেগুলো পড়ি। কিন্তু লেখকরা সাধারণত অহংকারী হয়। তারা নিজের বই দিতে চায় না। ‘আপনার কেমন লাগল স্যার জানাবেন’- এটা বলে না। অহংকারের কারণে। আমি যখন শুরু করেছি, আমিও তাই করেছি।