শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রাচীন মসজিদের অজানা ইতিহাস

মোস্তফা কাজল

প্রাচীন মসজিদের অজানা ইতিহাস

বিশ্বে যেসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের মুসলমানরা গর্ব করতে পারে তার অন্যতম হলো মসজিদ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে বহির্বিশ্ব চেনে মসজিদের নগরী হিসেবে। রাজধানী ঢাকার বয়স ৪০০ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মসজিদের নগরী হিসেবে ঢাকার বয়স আরও বেশি, ৫৬০ বছর। বর্তমানে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক ইসলামিক নিদর্শন। বাঙালির ইতিহাস হাজার বছরের। এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাকে শাসন করেছেন দেশি-বিদেশি অনেক শাসক। তখন নিজেদের প্রয়োজনেই তারা এ দেশে গড়েছেন অনেক ইসলামিক স্থাপনা। সময়ের ধারায় যা প্রত্নসম্পদে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মসজিদ। এসব মসজিদ, কারুকাজ খচিত দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নিয়ে আজকের আয়োজন

 

বগুড়ার জঙ্গলে মিলল মুঘল আমলের মসজিদ

জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে প্রাচীন আমলের একটি মসজিদ। এরপর থেকেই মসজিদটি দেখতে লোকজন ভিড় করছেন। কারও কারও মতে এ মসজিদ মুঘল আমলে তৈরি। যুগ যুগ ধরে আগাছা, পরগাছা আর ঝোপ-জঙ্গলে ঢাকা ছিল বলে এতদিন লোকচক্ষুর অন্তরালেই ছিল বগুড়ার প্রাচীন এই মসজিদটি। এদিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জানেই না সেখানে প্রাচীন আমলের একটি মসজিদ আছে। সম্প্রতি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাইগুনি গ্রামের সাইরপাড়া এলাকায় কিছু লোক ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার পর বেরিয়ে আসে এক গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদটি। এ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ছড়িয়ে পড়ে নানা গুঞ্জন, ডালপালা মেলে গুজবও। মসজিদটি দেখার জন্য প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে কৌতূহলী মানুষ ছুটে আসছেন। এ মসজিদ নিয়ে মানুষের মুখে মুখে নানা কথা। কারও কারও মতে এটি মুঘল সম্রাট বাবরের আমলে তৈরি। তবে বাইগুনি গ্রামের সাইরপাড়ার তালুকদার ও প্রামাণিক পরিবারের ধারণা, তাদের পূর্বপুরুষরাই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাণ কাঠামো দেখে স্থানীয়দের ধারণা ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে মসজিদটি নির্মিত। ১৬ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৬ ফুট প্রস্থে নির্মিত মসজিদের উচ্চতা ১৮ ফুট। মসজিদে প্রবেশের জন্য পূর্ব দিকে এবং বের হওয়ার জন্য উত্তর দিকে ৫ ফুট উচ্চতার দুটি দরজা রয়েছে। ২০ ইঞ্চি প্রস্থে পাতলা পোড়া মাটির ইট এবং সুরকির গাঁথুনিতে নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদটি। মসজিদ নির্মাণে কোনো রড বা লোহা জাতীয় কিছু ব্যবহার করা হয়নি। মসজিদের ভিতরে ইমামসহ ১১ জনের নামাজ পড়ার মতো জায়গা রয়েছে। মসজিদের ভিতরে ছোট্ট একটি মেহরাব দেখা যায়। সেটি এখনো অটুট রয়েছে। মসজিদের দেয়ালের চারপাশের কোনায় কারুকার্য চোখে পড়ছে এখনো। বাইরের দেয়ালে পোড়া মাটির ইটগুলোর কিছু কিছু অংশ ক্ষয়ে গেলেও মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করলে এখনো এর সৌন্দর্য জানান দেয়। মসজিদের ভিতরে উপরের দিকে গম্বুজের ইট ও দেয়াল এখনো চকচক করছে। যেন অল্প কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয়েছে। পাতলা আবরণের প্লাস্টার দেখা যায় মসজিদের দেয়ালের গোড়ার দিকে। তবে কোনো সাল, তারিখ বা কোন শাসকের আমলে এটি নির্মাণ করা হয়েছে তার কোনো নামফলক নেই। সরকারি খাস খতিয়ানে তিন শতাংশ জমিতে মসজিদটি অবস্থিত। অযত্ন আর অবহেলায় মসজিদটির গায়ে, গম্বুজে শ্যাওলা ও বিভিন্ন আগাছা জন্মেছে। সাইরপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ আবদুল গণি প্রামাণিকের দেওয়া তথ্যমতে, কত বছর আগে কারা কীভাবে মসজিদটি নির্মাণ করেছেন এ বিষয়ে কেউ পরিষ্কার কিছু বলতে পারেন না।

তবে একই গ্রামের আবদুল হান্নান বলেন, এ এলাকায় এক সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস ছিল। মুঘল আমলে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট এলাকা থেকে ১০-১৫ ঘর মুসলমান এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। সে সময় জনসংখ্যা কম থাকায় ছোট আকারের এ মসজিদটি তখন নির্মাণ করা হয় বলে প্রবীণদের ধারণা। বর্তমানে ‘জিনের’ ভয়ে কেউ মসজিদে প্রবেশ করেন না। সেখানে জিন আছে এবং জিনেরা নামাজ পড়ে বলে এলাকায় চাউর আছে। সম্প্রতি গ্রামের লোকজন জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করায় মসজিদটি দৃশ্যমান হয়েছে। আর জিনের মসজিদ হিসেবে প্রচার হওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ আসেন মসজিদটি দেখার জন্য। তবে স্থানীয়রা মসজিদটি রক্ষায়  সরকারি সহযোগিতা চান।

 

করতলব খান মসজিদ

করতলব খান মসজিদ পুরান ঢাকার বেগমবাজার এলাকায় অবস্থিত। ১৭০১-০৪ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ান মুর্শিদকুলী খান ওরফে করতলব খান এটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি ‘বেগমবাজার মসজিদ’ নামেও পরিচিত। সংযোজিত দোচালা অংশসহ মসজিদটি একটি উঁচু ভল্টেড প্ল্যাটফরমের পশ্চিমের অর্ধেক অংশ দখল করে আছে। প্ল্যাটফরমের পূর্বে রয়েছে একটি বাব বা বাউলি (ধাপকৃত কুয়া)। উত্তর-দক্ষিণে ৩৯.৬২ মি. এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৩.৪১ মি. প্ল্যাটফরমের উত্তর প্রান্ত খিলানাকৃতির। প্ল্যাটফরমের খিলানাকৃতির অংশটির মাঝ বরাবর কেটে একটি সমাধির জন্য জায়গা করা হয়েছে। সারকোফেগাসে মসজিদের প্রথম ইমামের নাম উৎকীর্ণ। প্ল্যাটফরমটির নিচে সারিবদ্ধভাবে একাধিক বর্গাকার ও আয়তাকার কক্ষ বিদ্যমান। এ ছাড়া প্ল্যাটফরমের পূর্ব দিকে নতুন করে নির্মিত সিঁড়ি সংবলিত একটি খিলানপথ আছে। এ পথেই প্ল্যাটফরমের ওপর নির্মিত মসজিদে প্রবেশ করা যায়। তুলনামূলকভাবে বড় একটি বাউলি নির্মিত হয়েছিল সম্ভবত অজু করার জন্য। একটি কক্ষের মধ্য দিয়ে সিঁড়ি কয়েকটি ধাপ বেয়ে নিচে নেমে এর পানি স্তরের কাছে পৌঁছা যায়। বাইরে থেকেও পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা আছে। মূল মসজিদ ও এর উত্তর দিকে সংযোজিত দোচালা অংশ ভল্টেড উঁচু চত্বরের পশ্চিমাংশের অর্ধেক জায়গা দখল করে আছে। বাকি অংশটি আগে খালি থাকলেও বর্তমানে এখানে একটি পাকা বারান্দা আছে।  প্রবেশের জন্য পূর্ব দিকে পাঁচটি খিলানপথ রয়েছে। প্রতিটি খিলানই অর্ধ-গম্বুজ ছাদ দ্বারা আচ্ছাদিত। পাশে রয়েছে সরু অষ্টভুজাকৃতির ছোট মিনার। যা প্যারাপেট ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশের দেয়ালের মাঝ বরাবর একটি করে দরজা আছে। পশ্চিম দেয়ালের অভ্যন্তরভাগে রয়েছে অর্ধ-অষ্টভুজাকার পাঁচটি মিহরাব কুলঙ্গি। পাশে ছোট বুরুজসহ সবই সম্মুখভাগে অভিক্ষিপ্ত। কেন্দ্রীয় মিহরাবের পাশে একটি তিন ধাপ বিশিষ্ট পাকা মিম্বার আছে। প্রত্যেকটি বে গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজগুলো অষ্টভুজাকার ড্রামের ওপর স্থাপিত। পদ্ম ও কলস চূড়ায় শোভিত। গম্বুজের ভার বহনে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা ঢাকার লালবাগ দুর্গ মসজিদ ও সাত গম্বুজ মসজিদে ব্যবহৃত কৌশলের অনুরূপ। চার কোণের চারটি অষ্টভুজাকার কলস ভিত্তি শোভিত কর্নার টাওয়ার অনুভৌমিক প্যারাপেটকে ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে। কর্নার টাওয়ারগুলো নতুন করে নির্মিত ছোট গম্বুজসহ বদ্ধ ছত্রী এবং পদ্ম ও কলস শোভিত শীর্ষচূড়ায় দ্বারা আচ্ছাদিত। সব টাওয়ারেরই ডান ও বাম উভয় পাশে সংযোজিত হয়েছে সরু মিনার যা প্যারাপেট থেকে উঁচু এবং ছোট গম্বুজ ও কলস ফিনিয়াল দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদের উত্তর পাশের আয়তাকার সম্প্রসারিত অংশটি বাঙালি দোচালা কুঁড়েঘর স্টাইলের ছাদ দ্বারা আচ্ছাদিত। যার প্রান্তগুলো অত্যন্ত বাঁকা ও ঝুলেপড়া। সম্প্রসারিত অংশটিতে দুটি বড় দরজা আছে। একটি পূর্ব দেয়ালের মাঝ বরাবর, বর্তমানে নতুন করে নির্মিত এবং অন্যটি দক্ষিণ দেয়ালের মাঝে। শেষোক্ত এ দরজা দিয়েই সম্প্রসারিত অংশের সঙ্গে মূল মসজিদ সংযোজিত। সম্প্রতি সম্প্রসারিত অংশের উত্তর দেয়ালে একটি জানালা স্থাপন করা হয়েছে। বাঁকানো ছাদটি বাইরের দিকে নিয়মিত বিরতিতে পাঁচটি কলস ফিনিয়াল দ্বারা শোভিত। এ সম্প্রসারিত অংশটিকে সমাধি সৌধ মনে করা হলেও সম্ভবত এটি ইমামের বসবাসের জন্যই প্রাথমিকভাবে নির্মিত হয়েছিল। কারণ এটি এখনো এ কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে। মসজিদ ভবনটির অলংকরণে এর স্থাপত্য বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রবেশপথগুলোর পার্শ্ববর্তী অলংকৃত ক্ষুদ্র মিনার, অভিক্ষিপ্ত মিহরাব, ছত্রী, ছোট গম্বুজ এবং পদ্ম ও কলস শোভিত ফিনিয়াল। প্রবেশপথ ও মিহরাবগুলো ফ্রেমের মধ্যে স্থাপিত এবং এদের শীর্ষ মেরলোন শোভিত। প্যারাপেট ও গম্বুজ ড্রামের গায়েও আছে উন্নত মেরলন মোটিফ। গম্বুজগুলোর ভিতরের দিক পত্র নকশাকৃত এবং এদের শীর্ষবিন্দু বিশাল মেডালিয়ানের মাঝে  একটি রোসেট দ্বারা অলংকৃত।

 

কুতুবশাহী মসজিদ

কুতুবশাহী মসজিদ কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত একটি অতি প্রাচীন ইসলামিক নিদর্শন। শত শত বছর আগে গড়ে ওঠা এমন অনেক নিদর্শন এখনো কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে। শিগগিরই এর সংস্কার না হলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে প্রায় সাড়ে চার শ বছরের পুরনো কুতুবশাহী জামে মসজিদ। দেশের প্রতœসম্পদের তালিকা থেকে হারিয়ে যাবে আরও একটি নিদর্শন। বাংলার স্থাপত্যের উৎকৃষ্ট নিদর্শন অষ্টগ্রামের পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট কুতুবশাহী মসজিদ। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে একটি বৃহৎ দীঘির পাড়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। কিশোরগঞ্জের এক কামেল দরবেশ কুতুব শাহের নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে। মসজিদের পশ্চিম পাশেই রয়েছে কুতুব শাহের সমাধি। মসজিদটি বাংলার সুলতানি ও মুঘল স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে নির্মিত। তবে মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে মতবিরোধ লক্ষ্য করা যায়। আয়তকার মসজিদটির উত্তর-দক্ষিণে ৪৬ ফুট ১১ ইঞ্চি এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২৭ ফুট ১১ ইঞ্চি। চৌচালা ঘরের চেয়েও এর কার্নিশগুলো অনেক বাঁকা। এর চারদিকে আট কোণবিশিষ্ট চারটি মিনার রয়েছে। বাইরের অংশে প্যানেলিংয়ের কারুকার্য রয়েছে তিনটি। উত্তর-দক্ষিণ দেয়ালে দুটি করে চারটি সর্বমোট সাতটি সুলতানি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ আছে। পূর্ব দেয়ালের প্রবেশ পথের বিপরীতে পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব আছে।  সরকারের প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর মসজিদটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

 

বজরা শাহী জামে মসজিদ

নোয়াখালী মাইজদী প্রধান শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা নামক স্থানে প্রধান সড়কের পাশেই বিখ্যাত এই বজরা শাহী জামে মসজিদ অবস্থিত। নোয়াখালীসহ সারা দেশে ইসলাম ধর্ম প্রচারে রয়েছে এর ঐতিহাসিক অবদান। দিল্লির মুঘল সম্রাটরা অবিভক্ত ভারতবর্ষে ৩০০ বছরের অধিকাল রাজত্ব করেন। ওই দীর্ঘ সময়কালে মুঘল সম্রাটরা এবং তাদের উচ্চপদস্থ আমলারা বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ইমারত, মসজিদ নির্মাণ করেন। আজও স্থাপত্য শিল্পের বিরল ও উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে বিরাজমান। এগুলোর মধ্যে আগ্রার তাজমহল, সেকেন্দ্রা, দেওয়ানে আম, আগ্রার দুর্গ, দিল্লির লালকেল্লা ও দিল্লির শাহী জামে মসজিদ অন্যতম। দিল্লির বিখ্যাত জামে মসজিদের অনুকরণে মুঘল জমিদার আমান উল্লাহ খান ১১৫৪ হিজরি সাল মোতাবেক ১৭৪১ সালে অর্থাৎ প্রায় ৩০০ বছর আগে বজরা শাহী মসজিদ নির্মাণ করেন। যা আজও মুঘল স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে দেশি-বিদেশি পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে। জমিদার আমানউল্যাহ তার বাড়ির সম্মুখে ৩০ একর জমির ওপর উঁচু পাড়যুক্ত একটি বিশাল দিঘি খনন করেন। এই দিঘির পশ্চিম পাড়ে মনোরম পরিবেশে আকর্ষণীয় তোরণবিশিষ্ট প্রায় ১১৬ ফুট দৈর্ঘ্য ৭৪ ফুট প্রস্থ এবং প্রায় ২০ ফুট উঁচু ৩ গম্বুজবিশিষ্ট এই ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মাণ করেন। এ মসজিদকে মজবুত করার জন্য মাটির প্রায় ২০ ফুট নিচ থেকে ভীত তৈরি করা হয়। সুদৃশ্য মার্বেল পাথর দ্বারা গম্বুজগুলো সুশোভিত করা হয়। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি ধনুকাকৃতি দরজা। মসজিদের প্রবেশ পথের ওপর রয়েছে কয়েকটি গম্বুজ। কেবলা দেয়ালে তিনটি কারুকার্য খচিত মিহরাব আছে। মুঘল সম্রাট মোহাম্মদ শাহের বিশেষ অনুরোধে পবিত্র মক্কা শরিফের বাসিন্দা তৎকালীন অন্যতম বুজুর্গ আলেম হজরত মাওলানা শাহ আবু সিদ্দিকী এই ঐতিহাসিক মসজিদের প্রথম ইমাম হিসেবে নিয়োজিত হন। তার বংশধররা যোগ্যতা অনুসারে আজও এই মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে প্রথম ইমাম সাহেবের সপ্তম পুরুষ ইমাম হাসান সিদ্দিকী মসজিদটির ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, এ মসজিদে কিছু মানত করলে তাতে শুভ ফল পাওয়া যায়। তাই দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় অগণিত মহিলা-পুরুষ প্রতিদিন এ মসজিদে টাকা পয়সা ও সিরনি দান করেন।  এ ছাড়া বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

 

ঢাকার আরও প্রাচীন মসজিদ

মিটফোর্ড জামে মসজিদ

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার ডিসি রায় রোডে কাজী মোহাম্মদ শরিফ ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদটিতে তিন গম্বুজ এবং একটি মিনার রয়েছে। মসজিদটি ৪ হাজার ৯০০ বর্গফুট আয়তনের।

ঢাকার জিন্দাবাহার কামরাঙ্গা মসজিদের নির্মাতা আকতারুন নেছা। মসজিদের গম্বুজ কামরাঙ্গাকৃতির বলে এরূপ নাম। এ মসজিদের নির্মাণ তারিখ লেখা নেই। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ঢাকা নগরীর মসজিদ নির্দেশিকা হতে জানা যায়, এটি ৯০০ বছর আগে নির্মিত। এর আয়তন ১৫০০ বর্গফুট। জিন্দাবাহার প্রথম লেন মসজিদের নির্মাতা মীর মনসুর। এটি ১৬১২ সালে নির্মিত। আয়তন ৯০০ বর্গফুট।

নবাববাড়ী জামে মসজিদ

ঢাকার নবাবগণ ১৮৮৪ সালে আসানউল্লাহ রোডে ৩ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। যা নবাববাড়ী মসজিদ নামে সুপরিচিত। এ ছাড়া ঢাকার মিটফোর্ড রোডে বাবু বাবার ঘাটে নবাব শায়েস্তা খান ১৬৬৪ সালে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটির আয়তন ৩০০ বর্গফুট। আরও রয়েছে ঢাকার সাতরওজা মসজিদটি ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত। আয়তন ২০০০ বর্গফুট। এরপর ঈশা খাঁর পরবর্তী বংশধর মনোয়ার খান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে আনুমানিক ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এটির আয়তন ৫ হাজার ৬০০ বর্গফুট।

মুন্সীবাড়ি জামে মসজিদ

ঢাকার মাতুয়াইল উত্তরপাড়া মুন্সীবাড়ি মসজিদটি ১৮৩০ সালে নির্মিত। এটির আয়তন ১০০০ বর্গফুট। মাতুয়াইলে আরও কয়েকটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে। এগুলো হলো মধ্যপাড়া ভূইয়াবাড়ী (সাউদপাড়া) মসজিদ ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ, মাতুয়াইল মৃধাবাড়ী মসজিদ ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ।

কারওয়ানবাজার জামে মসজিদ

খাজা মালিক আম্বর কারওয়ানবাজার মসজিদটি নির্মাণ করেন ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের। প্রাচীন এই মসজিদটি শায়েস্তাখান রীতিতে তৈরি করা হয়েছিল। এখন মসজিদটির অনেক পরিবর্তন বা সংস্কার করা হয়েছে।

১০৯০ হিজরি সালে মগবাজার শাহ সাহেববাড়ী জামে মসজিদ নির্মিত হয়, ৩ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের মসজিদটির প্রবেশদ্বারে নির্মাণ তারিখ খোদিত আছে। এ ছাড়া মীর আবুল কাসেম ধানমন্ডি ঈদগাহ জামে মসজিদ ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন। মীর কাসেম ছিলেন শাহ সুজার এস্টেট ম্যানেজার। মসজিদটির আয়তন ১৪ হাজার বর্গফুট। ঢাকার নীলক্ষেত এলাকার বাবুপুরা শাহসাহেব বাড়িতে একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদটির নাম ‘মরিয়ম ছালেহা মসজিদ’। যা নির্মাণকারী মরিয়ম ছালেহা, ছালেহার পিতা আবদুল্লাহ। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এবং পাঁচ ফুট চওড়া দেয়ালসমৃদ্ধ এ মসজিদটি ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত। মৌলভী সুলতান হুসাইন নির্মিত কমলাপুর বাজার মসজিদটি ১৮৭৯ সালের। এটি ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের। ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া ‘মাটিয়া মসজিদ’। আয়তন ৩ হাজার বর্গফুট। খিলগাঁও পুরাতন পাকা মসজিদ সি-ব্লকে অবস্থিত। এটি ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত।

এদিকে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা মসজিদটি শাহ সুজার শাসনামলের। মসজিদটি ১৬৪৯ সালে নির্মিত হয়। ঢাকার মোহাম্মদপুরে মুঘল আমলের একটি মসজিদ হলো আল্লাকুরীর মসজিদ। প্রতিষ্ঠাতার নাম না থাকলেও প্রতিষ্ঠাকাল ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দ। উঁচু ভিটি ও এক গম্বুজ এ মসজিদটিতে। আয়তন ২০০০ বর্গফুট। এ এলাকার জাফরাবাদ জামে মসজিদটিও ১৮৯৫ সালের। এটিও ২০০০ বর্গফুট আয়তনের। ঢাকার ঐতিহাসিক প্রাচীন মসজিদের মধ্যে বিখ্যাত হলো সাত গম্বুজ মসজিদ। শায়েস্তা খানের পুত্র বুজুর্গ উমিদ খান মসজিদটি নির্মাণ করেন। স্থাপত্যকাল ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দ। আয়তন ২০০০ বর্গফুট। এ ছাড়া মুসা খাঁ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মনোয়ার খান। ঢাকার কার্জন হলের পাশে তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটির অবস্থান। আয়তন ২০০০ বর্গফুট। প্রতিষ্ঠাকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে আরও একটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে। তা হলো হাজী খাজা শাহবাজ মসজিদ। প্রতিষ্ঠাকাল ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দ। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি মুঘল স্থাপত্য শিল্পের কারুকাজমন্ডিত। ঢাকার আমলি গোলা জগন্নাথ সাহা রোডে অবস্থিত ‘আমলি গোলা ছোট মসজিদ’। ১৬৭৬ সালে নির্মিত মসজিদটি এক গম্বুজ ও ৬০০ বর্গফুট আয়তনের।

ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক মসজিদ হলো লালবাগ কেল্লা মসজিদ। শাহজাদা মোহাম্মদ আজম লালবাগ কেল্লা মসজিদটি ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের পরিমাপ ৬৫৩২.৫০ বর্গফুট। মুঘলদের শৈল্পিক শিল্পের বহিঃপ্রকাশ পেয়েছে লালবাগ কেল্লা মসজিদের মধ্য দিয়ে। চকবাজার শাহী মসজিদ নির্মাণ করেন শায়েস্তা খান, ১৬৭৬ সালে। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদের আয়তন ৮ হাজার ১০০ বর্গফুট। আজিমপুর গোবশাহী মসজিদ ১৭২৬ সালের। খাজে দেওয়ান মসজিদ ১১১৬ হিজরি সালে প্রতিষ্ঠিত। খান মোহাম্মদ মির্ধা মসজিদটি ১৭০৬ সালে নির্মাণ করেন। এই মসজিদটি ১৬.৫০ ফুট উঁচু। ফররুখ শিয়র যখন ঢাকার শাসক তখন এটি নির্মিত হয়। ঢাকার বোরহানপুর জামে মসজিদ হাজারীবাগে অবস্থিত। ৩ হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের। স্থাপিত হয় ১২৩৫ হিজরি সালে।

এ ছাড়া বিডিআর হেড কোয়ার্টার জামে মসজিদটি ১২৫৬ হিজরিতে স্থাপিত। আয়তন ২০০০ বর্গফুট। লালবাগের শায়েস্তা খান রোডে আরও একটি মুঘল মসজিদ রয়েছে। এটি লালবাগ শাহী মসজিদ নামে পরিচিত, ১৭০৩ সালে ফররুখ শিয়র এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। এটির আয়তন ২০ হাজার বর্গফুট। এ মসজিদটি ঢাকার নবাব স্যার আবদুল গনি ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে পুনর্নির্মাণ করেন। মসজিদের মূল অংশ ছিল ১৫৫ গুণন ৫৫ বর্গফুট। ১৯৭৫-পরবর্তী ১১৭২১ বর্গফুট বারান্দা করা হয়। মসজিদের মিনার ১৭৬ ফুট উঁচু। ইসলাম খানের সময় আলমগঞ্জে দুটো মসজিদ নির্মাণ করা হয়। একটি আলমগঞ্জ বড় মসজিদ ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের। অন্যটি আলমগঞ্জ মসজিদ ১ হাজার ২০০ ফুট আয়তনের। দুটোই ১৬১০-১৬১৩ সালের মধ্যে। তিন গম্বুজবিশিষ্ট সিতারা বেগম মসজিদ প্যারিদাস রোডে অবস্থিত ২৮০০ বর্গফুট আয়তন এবং ১৮১৯ সালে মসজিদ স্থাপিত। নবাব গোলাম মোহাম্মদের স্ত্রী সিতারা বেগম মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মুঘল আমলেই মূলত ঢাকার মসজিদের বিস্তৃতি লাভ করে সুবাদার ও শাসকদের সহযোগিতায়। কাকরাইল মসজিদ মুঘল আমলের। কিন্তু ১৯৫২ সালে সংস্কার হয়। ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এ মসজিদটি বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মসজিদ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।

গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদটি অতি চমৎকার ডিজাইনে নির্মিত। কুয়েত, সৌদি আরব সংযুক্ত আরব-আমিরাতের আর্থিক সাহায্যে মসজিদটি নির্মিত। নির্মাণকাল ১৯৭৬ সাল। আর আয়তন ৫ হাজার বর্গফুট। ঢাকার আরও একটি চমৎকার নির্মাণশৈলী মসজিদ হলো মহাখালী গাওসুল আযম বড়পীর আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) মসজিদ। ১৯৮৩ সালের ১৪ জানুয়ারি মাওলানা আবদুল মান্নান এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। ইরাক সরকারের সহযোগিতায় মসজিদটি নির্মিত হয়।  বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ হলো ঢাকার ‘বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ’।

 

বাইতুল মামুর জামে মসজিদ

এ যাবৎ প্রাপ্ত শিলালিপি অনুযায়ী ঢাকার প্রাচীন মসজিদ হলো নারিন্দায়। বিনাত বিবি মসজিদটি ঢাকার এ যাবৎ কালের প্রাচীন মসজিদ। ঢাকায় এ মসজিদটি ১৪৫৭ সালে নির্মাণ করেন মরহামত কন্যা মোসাম্মৎ বখ্ত বিন। তখন মসজিদটির আয়তন ছিল ১২১২ ফুট। হিজরি সালের হিসাবে ছিল ৮৬১ হিজরি। মসজিদটি অনেকবার সংস্কার হয়েছে। মসজিদটি সুলতানি শাসনামলে নির্মিত হয়। আরবি শিলালিপিতে সর্বপ্রথম ‘ঢাকা’ নামটি পাওয়া যায় উলুক আজলকা খান মসজিদের গায়ে। এ মসজিদটি ১৪৬০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি স্থাপন করা হয়। তখন ‘কসবা ঢাকা’ খাস-এর প্রধান গোমস্তা ছিলেন তরবিয়ত খান। সেই প্রাচীন মসজিদটি এখন আর নেই।

 

উর্দু রোড জামে মসজিদ

ঢাকার আরও একটি প্রাচীন মসজিদ হলো উর্দু রোড জামে মসজিদ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়ালের বাইরে লিখিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০ শ্রাবণ ৮৬৩ হিজরি জুন ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। যেটি ছিল ঢাকা দুর্গের কাছে। এক সময়ের গিরিদিকিল্লা এলাকার নাসওয়ালা গলির একটি মসজিদ, মসজিদটির আরবি লিপিটি জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত আছে।

 

মিরপুর মাজার মসজিদ

সুলতানি আমলে ঢাকায় আরও একটি মসজিদের অবস্থান দেখা যায়। এটি হলো মিরপুর মাজার মসজিদ। এটি ৮৮৫ হিজরি মোতাবেক ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় নির্মিত হয়। তখন দিল্লির সুলতান ছিলেন ইউসুফ শাহ। পরবর্তী সময়ে নবাব আহসান উল্লাহ মিরপুর শাহ আলী বাগাদী (রহ.) মাজার সংলগ্ন মসজিদ নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করেন। ধোলাইখাল এলাকায় ১৫৫৭ খ্রিস্টাব্দে এইচ কে দাস রোডে মসজিদ নির্মিত হয়। মসজিদটি নির্মাণ করেন মমতাজ বিবি। মসজিদটি ১২০০ বর্গফুট আয়তনের। এটি একটি পাকা মসজিদ। মমতাজ বিবি নির্মিত মসজিদটি সুলতানি অথবা কররানি/আফগান শাসনামলে নির্মিত। সুলতানি আমলে ঢাকায় আর কোনো মসজিদ নির্মিত হয়েছিল কিনা জানা যায়নি।

 

তাঁতিবাজার জামে মসজিদ

মুঘল সুবাদার ইসলাম খান ঢাকায় আগমন করেন কারও মতে ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে। কারও মতে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে। তবে ঢাকার তাঁতিবাজার মসজিদটি মুঘল স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত এবং এটি নির্মিত হয় ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে। মসজিদটি তাঁতিবাজার মসজিদ হিসেবে পরিচিত। নির্মাতার নাম জানা যায়নি। রাজধানী ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা সুবাদার ইসলাম খান চিশতী। তিনি ৫০ হাজার জনবল নিয়ে ঢাকায় আসেন। তিনি এসেই মুসলমানদের ইবাদতের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। বর্তমান আওলাদ হোসেন লেনে ইসলাম খান নির্মিত মসজিদটির অবস্থান। ইসলাম খান চিশতী ১৬১০-১৬১৩ সালে তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। আদি মসজিদটি ছোট ছিল। বহুবার সংস্কারের পর মসজিদটির আয়তন তিন হাজার বর্গফুটে দাঁড়িয়েছে।

সর্বশেষ খবর