শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামিক নিদর্শন

সাইফ ইমন

পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামিক নিদর্শন

মুসলিম শাসকরা তাঁদের সাম্রাজ্য গড়েছিলেন বিশ্বজুড়ে। বিশ্বের নানা প্রান্তে তাঁরা রেখে এসেছেন গৌরবময় স্মৃতি।  পশ্চিমা বিশ্বে মুসলিম স্থাপনা দেখতে এখনো প্রতিদিন ভিড় করেন লাখ লাখ পর্যটক। মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর আসল আকর্ষণ এর দৃষ্টিনন্দন নকশা ও ডিজাইন। এসব নিদর্শনের মাঝে ফুটে উঠেছে মুসলমানদের শৌখিন রুচিবোধের প্রকাশ। প্রমাণ দিয়েছে মুসলিম সংস্কৃতি অতীতকাল থেকেই স্থাপনা সংস্কৃতিতে শৌখিন ছিল। শত শত বছর ধরে আপন গৌরবে টিকে আছে এই মুসলিম নিদর্শনগুলো।  ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কিছু নিদর্শন নিয়ে আজকের রকমারি-

 

স্পেনে শেষ মুসলিম সাম্রাজ্য গ্রানাডা

১১০০ শতকের আগ পর্যন্ত স্পেনে মুসলমানদের অবস্থান ছিল অনেক শক্ত। কিন্তু এরপরই মুসলমানদের জয়গাথা স্তিমিত হয়ে আসতে থাকে। এক সময় শেষ মুসলিম সাম্রাজ্য হিসেবে গ্রানাডাই টিকে ছিল। তাই এখানে এখনো রিকনকুইস্তার সময় আল-আন্দালুসিয়ার উত্তর দিক থেকে আসা হানাদার খ্রিস্টান রাজ্যগুলোর হাতে একের পর এক মুসলিম রাজ্যগুলোর পতন হতে থাকে। কর্ডোভা, সেভিয়া এবং টলেডোর মতো বড় বড় শহরগুলোর পতন হয় ১১০০ থেকে ১৩০০ শতকের মধ্যে। একটিমাত্র মুসলিম প্রদেশ গ্রানাডা ১৩০০ শতকে খ্রিস্টানদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল। ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে কর্ডোভার পতনের পর গ্রানাডা আমিরাতের শাসকরা শক্তিশালী খ্রিস্টান ক্যাস্টিলে সাম্রাজ্যের সঙ্গে এক বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। অর্থাৎ তারা ‘গ্রানাডা আমিরাত’ হিসেবে স্বাধীন থাকার অনুমতি পেয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ক্যাস্টিলে সাম্রাজ্যের আক্রমণের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে তাদের কাছে কর প্রদান করতে হয়েছিল। এ কর প্রদান করতে হতো প্রতি বছর স্বর্ণমুদ্রা হিসেবে। এ ছাড়া গ্রানাডা আমিরাতের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকার পেছনে অন্য কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এর ভৌগোলিক অবস্থান। গ্রানাডা দক্ষিণ স্পেনের সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালার মধ্যে অনেক উঁচু স্থানে অবস্থিত, যা আক্রমণকারী বহিঃশক্তির জন্য অনেক কঠিন ছিল। এ প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা গ্রানাডার জন্য শক্তি হিসেবে কাজ করত। এ কারণে খ্রিস্টান ক্যাস্টিলে সাম্রাজ্যের চেয়ে সামরিক শক্তির দিক দিয়ে দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও প্রায় ২৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রানাডা টিকে ছিল স্পেনের শেষ মুসলিম সাম্রাজ্য হিসেবে।

 

লা মেজকিতা

স্পেনের এত সুন্দর মসজিদ তখনো হয়তো কোনো আরব দেশেও নির্মাণ হয়নি। স্পেনিশ ভাষায় মসজিদকে বলা হয় ‘মেজকিতা’। ৭১১ থেকে ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্পেনে মুসলিম শাসনামলে নির্মাণ করা হয় অনেক ইসলামিক স্থাপনা। স্পেনের আন্দালুসিয়ার কর্ডোভা মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম। কাঠামোটি মুরিশ স্থাপত্যের সর্বাপেক্ষা নিখুঁত স্তম্ভগুলোর মধ্যে একটি। ১২০০ বছর আগে খলিফা প্রথম আবদুর রহমানের আমলে ৭৮৪ থেকে ৭৮৬ সালে স্পেনের তৎকালীন রাজধানী কর্ডোভায় নির্মাণ করা হয় ঐতিহাসিক কর্ডোভা মসজিদ; যা ‘লা মেজকিতা’ কিংবা ‘দ্য গ্রেট মসজিদ অব কর্ডোভা’ নামেও পরিচিত। স্থাপনের পর প্রায় ৫০০ বছরেরও বেশি সময় এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন মুসলমানরা। সে সময় মসজিদটি ইসলামী শিক্ষা, শরিয়া আইন ও সালিশকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানরা পরাজিত হলে বদলে যায় সব কিছু।

 

মিশিগানে ডিয়ারবর্ন

ডিয়ারবর্ন মসজিদটি মিশিগানের ডিয়ারবর্নের আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্গত একটি মসজিদ। ১৯৩৭ সালে বর্ধনশীল ইসলামী সম্প্রদায় দ্বারা নির্মিত হয়। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ। ভবনটি তিনতলা উঁচু এবং ভার্নোর এবং ডিক্স স্ট্রিটসের মোড়ে প্রায় পুরো শহরের মিলনস্থলে অবস্থিত। ১৯৬০ থেকে ১৯৮০-এর দশকে মানুষের উপস্থিতি দ্রুত বেড়ে যায়। ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে কিছু প্রতিবেশীর আপত্তিকে বাতিল করে আদালত মসজিদটিতে উচ্চৈঃস্বরে আজান দেওয়ার অনুমতি দেয়। উচ্চৈঃস্বরে আজান দেওয়া আমেরিকার প্রথম মসজিদ এটি। আদালত মুসলমানদের আজানকে গির্জার ঘণ্টার সমকক্ষ বলে রায় দেয়। মসজিদটি শেখ হামুদ আফিফের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। তার আগে বহু বছর ধরে শেখ মোহাম্মদ মুসা নেতৃত্বে ছিলেন। ডিয়ারবর্নের ইসলামিক সেন্টার অব আমেরিকা আর ডিয়ারবর্ন মসজিদ দুটি আলাদা মসজিদ।

 

মেহমেদ পাশা ব্রিজ

বসনিয়া

ইতিহাস জড়ানো বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়ার মেহমেদ পাশা সকলোভিক ব্রিজ। স্থানীয়রা বলেন পাশা ব্রিজ। দক্ষিণ ইউরোপের নির্জন এই দেশের বলকান অঞ্চলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাসের ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন এই ব্রিজটি। এই ব্রিজ তৈরি করা হয় ১৫৭৭ সালে। স্থাপত্যশৈলীতে তুরস্কের নকশাবিদদের ছোঁয়া পাওয়া যায়। ১১টি ধনুকের মতো বাঁকানো স্তম্ভের প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে নদীর ওপর। কখনো শান্ত, কখনো রুদ্র দ্রিনা নদীর ওপর এই ব্রিজটি এখনো মনে করিয়ে দেয় মুসলিম শাসকদের ঐশ্বর্য ও স্থাপত্যবিদ্যার গৌরবের কথা। ৫৮৯ ফুট দীর্ঘ ব্রিজটি বিখ্যাত স্থপতি মিমাম সিনারের মাস্টারপিস হিসেবে গণ্য হয়।

 

মুসলিমদের কর্ডোভা

স্পেনে মুসলিম শাসনের সময়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানে কর্ডোভার খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। এ নগরীর প্রত্যেক নরপতিই ছিলেন বিদ্যানুরাগী ও জ্ঞানসেবক। পুরো ইউরোপে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের যত নগর সে সময় ছিল, তার মধ্যে কর্ডোভাই সবার চেয়ে এগিয়ে। আর এটি সম্ভব হয়েছিল মুসলিম শাসকদের কল্যাণেই। প্রখ্যাত মুসলিম ভূগোল বিশারদ ইয়াকুত আল হামাবির মতে, কর্ডোভা ছিল গোটা আন্দালুসিয়ার প্রাণকেন্দ্র। স্পেন মুসলিমদের প্রথম করতলগত হয় মুর জাতির মাধ্যমে। মুসলিমরা বিজিত ভূখন্ডের রাজধানী হিসেবে কর্ডোভাকেই বেছে নেয়। শুধু ভূখন্ডের দখল নয় বরং এর সার্বিক উন্নয়নের প্রতি পুরো মনোনিবেশ করেন মুসলিম শাসকরা।

খলিফাদের নিয়োগ করা মোট ২৩ জন প্রশাসক এ ভূখন্ড শাসন করেছিলেন। তবে ৭১৬ সালে এটি দামেস্কের কেন্দ্রীয় খেলাফতের অধীনে চলে যায়। পরবর্তীতে ৯২৯ থেকে ১০৩১ পর্যন্ত এখানেই একটি স্বতন্ত্র খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সময়কেই কর্ডোভার ঐশ্বর্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সোনালি যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। ইতিহাসবিদরা বলছেন, আরব মুসলিমরা একটি যুদ্ধপ্রবণ ভূখন্ডকে শান্তির আবাস বানিয়েছিল।

 

নীল মসজিদ ইস্তাম্বুল

ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপ দুই মহাদেশের অন্তর্গত। তুরস্কের দক্ষিণ ইউরোপীয় অংশে গোটা ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল শহর ইস্তাম্বুল। এই শহরের ঐতিহাসিক মসজিদ সুলতান আহমেদ মসজিদ। সুলতান আহমেদ মসজিদটি তুর্কি স্থাপত্যের এক অনন্য উদাহরণ।

১৯৩৪ সালে ‘হাজিয়া সুফিয়া’কে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করার পর ইস্তাম্বুলের প্রধান মসজিদে পরিণত হয় ব্লু মসজিদ। মসজিদের ভিতরে ঢুকলে মনে হবে সমুদ্র জলরাশির রঙে রাঙানো। ভিতরের দেয়াল নীল রঙের টাইলস দিয়ে সাজানো হয়েছে। বাইরে থেকে এই নীল রঙের ঝিলিক দেখে অনেকেই এই মসজিদকে বলেন ‘ব্লু মস্ক’ বা নীল মসজিদ। মসজিদটির মিনার ও গম্বুজগুলো সিসা দ্বারা আচ্ছাদিত এবং মিনারের ওপরে সোনার প্রলেপযুক্ত তামার তৈরি ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। ১৬০৯ থেকে ১৬১৬ সালের মধ্যে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান আহমেদ বখতি এই মসজিদ নির্মাণ করেন। ঐতিহাসিক এ মসজিদটির স্থপতি ছিলেন মুহাম্মদ আগা। মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি মাদরাসা, একটি পান্থনিবাস এবং প্রতিষ্ঠাতার সমাধি অবস্থিত।

 

দ্য আল হাম্বরা

স্পেন

এটি মূলত একটি প্রাসাদ। তবে একে এককথায় যৌগিক দুর্গও বলা হয়। স্পেনের আন্দালুসিয়ার গ্রানাডা নামক স্থানে প্রাসাদটি অবস্থিত। দেশটির মুসলিম নাসরি রাজবংশের শাসনামল চলাকালীন ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়। অসাধারণ অলঙ্করণ ও সৌন্দর্যময়তাই প্রাসাদটির মূল আকর্ষণ। যে কোনো দর্শনার্থীর নজর কাড়বে খুব সহজে। বাগান, ঝরনা ও চমৎকার শিল্পসম্মত বিভিন্ন অলঙ্করণ রয়েছে প্রাসাদটির ভিতরে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান নির্বাচন কমিটি ১৯৮৪ সালে ২ নভেম্বর আল হাম্বরাকে মানবতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে।

 

সেন্ট্রাল মসজিদ

লন্ডন

লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি লন্ডনের রিজেন্টস পার্কের পাশেই অবস্থিত। স্থপতি ছিলেন ফ্রেডেরিক জিববার্ড। মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৭৮ সালে। এর প্রধান আকর্ষণ হলো বিশালাকার সোনালি রঙের গম্বুজ। মসজিদের প্রধান হলরুমে একসঙ্গে পাঁচ হাজার মুসল্লি অবস্থান নিতে পারবেন। এখানে নারীদের জন্যও সুব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের মেঝে মোড়ানো বৃহদাকার একটি কার্পেট দিয়ে। আছে যৎসামান্য কিছু ফার্নিচার। গম্বুজের ভিতরের দিকটি সাজানো হয়েছে ইসলামী ঐতিহ্যের কিছু উদাহরণ দিয়ে। মসজিদ কম্পাউন্ডে ছোট একটি বইয়ের দোকান ও একটি হালাল খাবারের ক্যাফে আছে।

 

রোম মসজিদ

ইতালি

ইসলামিক স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন ইউরোপের সর্ববৃহৎ ইতালির রোম মসজিদ। এটি মস্কো দ্য রোমা নামেও পরিচিত। বিশাল এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ চলে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। ৩ লাখ ২০ হাজার বর্গফুটের মসজিদে একত্রে ১২ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। আফগানিস্তানের রাজপুত্র মুহাম্মদ হাসান ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগমের উদ্যোগে এবং সৌদি আরবের যুবরাজ ফয়সালের অর্থ সহায়তায় মসজিদটি নির্মিত হয়। নির্মাণ ব্যয় হয় ৪০ মিলিয়ন ইউরো। ইসলামিক স্থাপত্য হিসেবে এটি বেশ আলোচিত হলেও এর স্থপতি দুজন কেউই মুসলমান নন।

 

পেনা জাতীয় প্রাসাদ

পর্তুগাল

পর্তুগালের সিন্ট্রা শহরের সাও পেদ্রো ডি পেনাফেরিমে অবস্থিত একটি রোমান্টিকস প্রাসাদ পেনা জাতীয় প্রাসাদ। এই স্থাপনায় অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে নব্য গোথিক, নব্য ম্যানুলাইন, নব্য ইসলামী এবং নব্য রেনেসাঁ কারুকাজের সমাবেশ। প্রায় পুরো প্রাসাদটি পাথরের ওপর অবস্থিত। গঠনগত দিক থেকে প্রাসাদটি চারটি অংশে বিভক্ত। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে প্রাসাদটি লিসবন এবং শহরের অন্যান্য স্থান থেকে সহজেই দেখা যায়। এটি একটি জাতীয় স্থাপনা এবং এর মাধ্যমে ১৯ শতকের রোমান্টিসিজমের বহির্প্রকাশ ঘটে।

 

তোপকাপি প্রাসাদ

তুরস্ক

তুরস্কের তোপকাপি প্রাসাদ ১৪৫০ দশকে সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদের নির্দেশে নির্মিত হয়। কয়েকটি দালানের সমন্বয়ে গঠিত স্থাপত্যটি প্রায় ৪০০ বছর ধরে ৩০ জন উসমানীয় সুলতানের প্রশাসনিক দফতর ও আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাসাদ থেকে সাগর ও বসফরাস প্রণালির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। প্রথমে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে এটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে রয়েছে মুসলমানদের পবিত্র স্মরণচিহ্ন যেমন- মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আলখাল্লা এবং তরবারি।

 

সর্বশেষ খবর