২৭ মার্চ, ২০১৯ ১৪:২৪
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

কপিরাইট আইনে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশের ইউটিবাররা?

অনলাইন ডেস্ক

কপিরাইট আইনে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশের ইউটিবাররা?

কপিরাইট আইন পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ইউরোপের ৩৪৮ জন সাংসদ, আর এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৭৮ জন। নতুন নীতিমালায় অনুমতি ছাড়া কপিরাইট আইন ভঙ্গ করে কোনো কিছু ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তার দায়ভার নেবে। তবে মিম এবং জিআইএফ শেয়ার করা এই নতুন আইনের অন্তর্ভূক্ত হবে না। গুগল বলেছে, এই আইন 'ইউরোপের ডিজিটাল ও সৃজনশীল শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত' করবে।

আইনের যে দু'টি ধারা নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হচ্ছে, সেগুলো অনুচ্ছেদ ১১ ও অনুচ্ছেদ ১৩ হিসেবে পরিচিত। অনুচ্ছেদ ১১ অনুযায়ী, যে কোনো নিউজ ওয়েবসাইটের লিঙ্ক ব্যবহার করতে সার্চ ইঞ্জিন এবং নিউজ অ্যাগ্রিগেট প্ল্যাটফর্মগুলোকে অর্থ দিতে হবে। অনুচ্ছেদ ১৩ অনুযায়ী, কপিরাইট লাইসেন্স ছাড়া যে কোনো কিছু পোস্ট করলে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়বদ্ধ করা হবে। কপিরাইট করা কাজ ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও আরোপিত হবে কড়াকড়ি। এরই মধ্যে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কপিরাইটসহ পোস্ট করা গান এবং ভিডিও সরিয়ে নিয়েছে।

নতুন এই নীতিমালা বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তৈরি করলেও তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন মনে করেন এটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এই আইন বলবৎ হলে শিল্পীরা মেধাস্বত্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন। তবে যে ওয়েবসাইটগুলো ৩ বছরের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে, যাদের বার্ষিক আয় ১০ মিলিয়ন ইউরোর নিচে এবং মাসিক ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ নতুন ব্যবহারকারী নেই - সেসব ওয়েবসাইট এই আইনের আওতাধীন হবে না। এই আইনের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছে গুগল এবং ইউটিউব। কারণ তারাই পৃথিবীতে ওপেন ইন্টারনেটের নামে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করছে - যেটি তাদের ব্যবসার মডেলের মধ্যেই পড়ে। এখানে বলে রাখা ভাল যে উইকিপিডিয়াকে এই আইনের আওতায় রাখা হয়নি।

স্বপন বলেন, যে ব্যক্তি নিজে কিছু তৈরি করছে, তাকে তো বাধা দেয়া হচ্ছে না। যারা ওই একই কন্টেন্ট নিয়ে আবারো পোস্ট করছে তাদের বাধা দেয়ার জন্য এই আইন। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক ইউটিউব চ্যানেল আছে যেখানে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কন্টেন্টকে সামান্য পরিবর্তন করে আবারো আপলোড দেয়া হয় এবং সেসব ভিডিও থেকে অনেকেই অর্থ উপার্জনও করছেন। নতুন আইন বলবৎ হলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তখন অরিজিনাল ভিডিওই শেয়ার করতে হবে।

জাকারিয়া স্বপন বলেন, আমরা বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নির্ভরশীল, তাই আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিশাল একটা অংশ কপিরাইট করা কন্টেন্টের ওপরই নির্ভরশীল। এই ব্যবহারকারীদের এখন নতুন নীতিমালার অধীনে আসতে হবে এবং কপিরাইট সংক্রান্ত আইনকে সম্মান করে চৌর্যবৃত্তির প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর