৯ জুন, ২০২০ ০৪:৪৩

বাংলাদেশের এমপির গ্রেফতারের সংবাদ গালফ নিউজে

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশের এমপির গ্রেফতারের সংবাদ গালফ নিউজে

মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুয়েত কর্মকর্তারা।  মানবপাচার ও অর্থপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তারা।  তার নাম মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কুয়েতের রেসিডেন্স ইনভেস্টিগেশন বিভাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাবলিক প্রসিকিউশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে। গত শনিবার কুয়েতের মুশাররফ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

কুয়েতে যাওয়া পাঁচ বাংলাদেশি শ্রমিকের সাক্ষ্য অনুসারে প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও তার নিজের দেশের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে। ওই শ্রমিকেরা কুয়েতে যাওয়ার জন্য শহিদ ইসলামকে ৩ হাজার দিনার (বাংলাদেশি টাকায় ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা) দিয়েছিল। একই সাথে প্রতিবছর ভিসা নবায়নের জন্যও তাকে টাকা দিতে হতো।

কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম, সেখানকার আল রাই সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, তিনি শহিদের গ্রেফতারের খবর শুনেছেন এবং এ বিষয়ে কুয়েতি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছেন, কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাকে এমপির গ্রেফতারের খবর জানিয়েছেন। সেখানে ব্যবসার কারণে একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। আমাদের দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে খোঁজখবর রাখছে। এমনকি একজন দোষী আইনিভাবে নিজের দেশ থেকে কনস্যুলার সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে।’

সন্দেহভাজন বাংলাদেশি এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, কুয়েতে শহিদের প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার জন্য সেখানকার সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ঘুষ হিসেবে পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি দিয়েছিলেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে শহিদ তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচারের অভিযোগ, ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

কুয়েতের সংবাদমাধ্যমে শহিদের বিরুদ্ধে ভিসা বাণিজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের অভিযোগও এসেছিল।

তবে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে শহিদ দাবি করেছিলেন, তিনি জনশক্তি রফতানিতেও জড়িত নন, মানবপাচার তো দূরের কথা।

কুয়েতের দৈনিক আল কাবাসে বাংলাদেশি এক এমপিসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের বলা হয়েছিল, তিনটি বড় কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তারা বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজারের বেশি কর্মী নিয়ে গিয়েছে এবং এ থেকে ১৬ কোটি ডলারের বেশি তারা অবৈধ আয় করেছে।

ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, অভিযুক্ত এমপি যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার জন্য এই পুরো অর্থ পাচার করেন।

শহিদ ইসলাম জানিয়েছিলেন, কুয়েতে গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির সাথে তার কোনও যোগসূত্র নেই।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইসলাম, যাকে কুয়েতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য।

শহিদ ইসলাম, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান একইসঙ্গে এনআরবি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং ক্রিস্টাল এনার্জি লিমিটেডের পরিচালক।

কুয়েতের স্থায়ী বাসিন্দা শহিদ ইসলাম তার সংসদীয় এলাকায় কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল নামে পরিচিত।

তিনি দ্য মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী।

প্রতিষ্ঠানটি কুয়েত, ওমান এবং জর্ডানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ভারী সরঞ্জামাদি ভাড়া দেয়।

কুয়েতের প্রতিষ্ঠান নিয়ে শহিদ ইসলাম জানান, ২৯টি দেশের লোক সেখানে কাজ করেন।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর