ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের বঙ্গবন্ধু অমর একুশে বইমেলার স্টল দেওয়া হবে না'
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কারও কথায় বা সুপারিশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের এবার বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার স্টল দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।    তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা কোনভাবেই যাতে বইমেলা মঞ্চে বসতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। বইমেলা হবে বইমেলার মতই। সৃজনশীল, সৃষ্টিশীল। লালদীঘি মাঠে এমন কাউকে বক্তৃতা রাখতেও দেয়া হবে না। যতই প্রভাবশালী হোক না কেন কারও সুপারিশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কাউকে সুযোগ দেয়া হবে না।'   চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মঙ্গলবার (২ মার্চ) বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত 'অমর একুশে বইমেলা ২০২১'-এর প্রস্তুতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় গতবারের সার্বজনীন বইমেলাটির পর্যালোচনা করা হয়।  এবার ফেব্রুয়ারি মাসের পরিবর্তে করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি মার্চের ২৩ মার্চ থেকে ২০ দিন ব্যাপী 'বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলা' সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পর্যালোচনা করা হয় গতবারের ভুল ত্রুটি। গতবারের মেলার ভুলত্রুটি সঙ্কটগুলো তুলে ধরেন মেলা সংশ্লিষ্টরা।    সভার স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ ২০২০-এর সচিব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের( চসিক) প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ডাঃ মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মুজাফফর আহমেদ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহিত উল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য রিয়াজ হায়দার চৌধুরী,  চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু , বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিকার অঞ্চল চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কবি নাজিম উদ্দিন শ্যামল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছড়াকার শুকলাল দাশ, কথা সাহিত্যিক ও দৈনিক প্রথম আলোর উপ-সম্পাদক বিশ্বজিত চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হক, কবি সাংবাদিক ওমর কায়সার,  বোধন সভাপতি আব্দুল হালিম দোভাষ, ছড়কার আ ফ ম  মোদাচ্ছের আলী, কবি সেলিনা শেলী, ছড়াকার গোফরান উদ্দিন টিটু প্রমুখ।   মেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নিপু ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জামাল উদ্দিন গত বছরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক সংগঠক নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, বইমেলা কমিটি ২০২০ এর আহবায়ক কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব কবি এলেক্স আলিম , বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মহসিন কাজী, বাংলা একাডেমী কবি-সাংবাদিক রাশেদ রউফ, সাবেক প্যানেল মেয়র নেছার উদ্দিন আহমেদ মন্জু, কাউন্সিলর শহিদুল আলম, নেছার আহমেদ মঞ্জু , পুলক খাস্তগীর, কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, উপ-সচিব আশিক রসুল চৌধুরী টিপু, মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি পিনাকী দাশগুপ্ত, শিল্পী কিংশুক দাশ চৌধুরী, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি আবসার মাহফুজ, কলামিস্ট ড. মাসুম চৌধুরী, কবি ইউসুফ মুহাম্মদ, অধ্যাপক শামসুদ্দিন শিশির, লেখক সাংবাদিক আবু তালেব বেলাল, কবি সংগঠক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকি, সাংবাদিক মোরশেদ তালুকদার সুবল বড়ুয়া, কবি ফারুক হাসান, সাইদুল আরেফিন, অরুন শীল, অনুবাদক ফারজানা রহমান শিমু, উচ্চারক আবৃত্তি কুন্জের সভাপতি ফারুক তাহের, নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, প্রাবন্ধিক মামমুদ হাসান বাবু, সাংবাদিক রাজিব রাহুল, আলোকচিত্রী কমল দাশ, প্রাবন্ধিক রেবা বড়ুয়া, ব্যান্ড শিল্পী ইকবাল আহমেদ, সংগঠক আসিফ ইকবাল, ডাঃ এস ডি রুবেল, সংগঠক সুবর্ণা খান প্রমুখ।    আলোচনায় গতবারের সঙ্কটগুলোর নিরিখে উঠে আসে প্রস্তুতি বিষয়ক সমাধানের প্রস্তাবনা। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান আগামী ২৬ মার্চের মধ্যেই যদি চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি সাইনবোর্ড গুলোর ব্যাপারে অভিযান পরিচালিত না হয় তাহলে মুক্তিযোদ্ধারাই সেইসব সাইনবোর্ড ভাঙচুর শুরু করবেন  বলে জানিয়ে এ ব্যাপারে মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ নতুন মেয়রের সার্বিক সফলতা চেয়ে মেলাকে সফল করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।   চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এই বইমেলা সার্বজনীন পরিসর নিশ্চিতের দাবি তোলে জঙ্গিবাদের সমর্থক লেখক-প্রকাশক বা ব্যবসায়ীরা যাতে স্টল নিয়ে বা বই বিক্রি করে মেলায় অংশ নিতে না পারেন এবং বইমেলা মঞ্চটি যাতে শুধুমাত্র চসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের আধিক্যে পরিণত না হয় সেটি নিশ্চিতের জন্য নবনির্বাচিত মেয়র এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সংগঠন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।    তিনি মেলাকে সার্বজনীন করে গড়ে তুলতে গতবারের মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলেন, আশা করছি চসিক বইমেলাকে সার্বজনীন করে তোলা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে সাথে নিয়েই নতুন মেয়র এবারের মেলাটি করবেন এবং একইসাথে প্রাক্তন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে কীভাবে এই বইমেলা থেকে সম্মান দেওয়া যায় সেটিও নিশ্চিত করবেন।    পাশাপাশি মেলার মিডিয়া সমন্বয়, বুলেটিন প্রকাশ যথাসময়ে করা, সাংস্কৃতিক শিল্পীদের সন্মানি বৃদ্ধি এবং বিষয়ভিত্তিক আলোচনা পর্বে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করার দাবি তোলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিন্ডিকেট সদস্য। তিনি ১৭ মার্চ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন থেকেই এবারের বইমেলা শুরু করার প্রস্তাব দেন।     তিনি আরও বলেন, একসময় জামাত-শিবির করতেন কিংবা এখনো আড়ালে জঙ্গিবাদের সমর্থক শক্তি হিসেবে সম্পৃক্ত, এমন কেউ কেউ এখন আমাদের চেয়েও বেশি কোমর শক্ত করে 'জয় বাংলা' স্লোগান দেন। বইমেলায় তাদের অনুপ্রবেশ যাতে এবার করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।       বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত


এই পাতার আরো খবর