ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলসে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট
অনলাইন ডেস্ক

গত সোমবার মিনেসোটার পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ক্রমেই লুটপাট আর সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। শনিবার রাতে বিক্ষোভের আড়ালে লস অ্যাঞ্জেলসে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। শহরের বেশ কয়েকটি মার্কেট ও সুপারশপের গেট ভেঙে লুটপাট হয়েছে ব্যাপক, আগুন দেয়া হয়েছে পুলিশের কিয়স্কেও। খবর সিএনএন ও আল-জাজিরার।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার বেভারলি হিলস ও ফেয়ারফ্যাক্সে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মেলরোজ অ্যাভিনিউয়ে একটি এটিএম বুথ ভেঙে সেটি নিয়ে যেতে দেখা গেছে লুটেরাদের। অন্যরাও বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের গ্রুভ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সেখানে পুলিশের একটি কিয়স্কে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস জানিয়েছে, শনিবার রাতে গ্রুভ শপিংমলে ঢুকে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতকারীরা। বাদ যায়নি নর্ডস্ট্রম ডিপার্টমেন্টাল স্টোরও। এসব দোকান থেকে বড় বড় ব্যাগ ও বক্স নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে বেশ কয়েকজনকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনিবার রাত ৮টা থেকে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় লস অ্যাঞ্জেলসে। বেভারলি হিলসে রাতভর টহল দিয়েছেন বাড়তি পুলিশ সদস্যরা। এসময় সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান শহরের মেয়র লেস্টার ফ্রায়েডম্যান।

লস অ্যাঞ্জেলসের পুলিশ প্রধান মিশেল মুর বলেছেন, তিনি মানুষের রাগ ও হতাশা বুঝতে পারছেন। তা সত্ত্বেও শহরের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সবধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। লুট হওয়া নর্ডস্ট্রম স্টোরের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘এটা কোনও সমাধান নয়। আমরা লস অ্যাঞ্জেলসের মানুষের ওপর আশা হারাইনি, আমাদের ওপরও তাদের আশা হারানো উচিত নয়। আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠব।’

স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কেএবিসি টিভি জানিয়েছে, শনিবার রাতের সহিংসতায় এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যায়, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড। গত ২৫ মে সন্ধ্যায় প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এসময় এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাস্তায় মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেন জর্জের। এভাবে অন্তত আট মিনিট তাকে মাটিতে চেপে ধরে রাখা হয়।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জর্জ ফ্লয়েড নিঃশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলছেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় মুহূর্তেই। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। প্রথম দিকে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক



এই পাতার আরো খবর