শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

এগিয়ে থাকতে প্রযুক্তিনির্ভরতা

আফরোজা হক সোনিয়া

এগিয়ে থাকতে প্রযুক্তিনির্ভরতা

অনেকেই বলেন পেশা হয়ে উঠছে অনলাইননির্ভর। কথাটা যে একেবারেই যুক্তিহীন তা কিন্তু বলা যাবে না। কেননা বর্তমানে পেশা বলেন আর সামাজিক যোগাযোগ বলেন দুটোই অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে অনলাইনের ওপর। কেননা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে কাজের ধরন। গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে পেশার ক্ষেত্রে এক ধরনের বিপ্লব ঘটে গেছে। একদিকে যেমন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান, অন্যদিকে পুরনো প্রতিষ্ঠানের আকার-আয়তন বেড়েছে। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কাজের ক্ষেত্র। আগের তুলনায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনেক বেশি আধুনিকায়ন ঘটেছে এবং প্রযুক্তিনির্ভরতাও বেড়েছে। ফলে এসব চাকরি পেতে একদিকে যেমন আধুনিক হতে হবে, তেমনি থাকতে হবে প্রযুক্তি-সংক্রান্ত দক্ষতা।

বর্তমানে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার-সংক্রান্ত জ্ঞানের বিকল্প নেই। এখন প্রায় প্রতিটি বড় প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়েবসাইটগুলোয় প্রতিষ্ঠানের নিজেদের সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য থাকে। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মী নেওয়া হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ওয়েবসাইটের একটা নির্দিষ্ট স্থানে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া থাকে। ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বিভিন্ন ধরনের জটিলতা এড়াতে ও স্বল্প সময়ে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ সম্পন্ন করতে ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়ে থাকে। তাই একজন চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। যারা ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ, তারাই চাকরির সুযোগ সহজে পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ঘাঁটলে এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট একটি স্থানে জীবন বৃত্তান্ত ফরম পূরণের ব্যবস্থা থাকে। এ ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী সেই নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করলেই চলে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান ই-মেইলের মাধ্যমে জীবন বৃত্তান্ত চায়। প্রথমেই ভালোভাবে দেখে নিতে হবে প্রতিষ্ঠানের কোন ধরনের কর্মী আবশ্যক এবং কোন কোন যোগ্যতা চেয়েছে। সে অনুযায়ী জীবন বৃত্তান্ত পাঠিয়ে দিতে হবে। অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু কাজের অভিজ্ঞতা চেয়ে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে কোনোভাবেই অপ্রাসঙ্গিক তথ্য জীবন বৃত্তান্তে দেওয়া যাবে না। এখন বিভিন্ন চাকরির খোঁজ-খবর দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লোকবল নিয়োগের প্রাথমিক পর্যায়টি তুলে দেয় এসব প্রতিষ্ঠানের উপর। এসব প্রতিষ্ঠানকে চাকরির ওয়েব পোর্টাল বলা হয। বিভিন্ন জটিলতায় না গিয়ে এখন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চাকরির ওয়েব পোর্টালে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এরপর প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাই করার কাজটিও এসব প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করে দেয়। এ ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীদের অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ হতে হয়। দেশে বসেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদনও করা যায় চাকরির ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে। ফলে একদিকে যেমন সময় কম লাগছে, তেমনি নানা ধরনের জটিলতা থেকেও রেহাই পাওয়া যায় এবং ঘরে বসেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করা যাচ্ছে। যারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন, তারা কিভাবে পেশাজীবনে উন্নতি করবেন, টাইম ম্যানেজ করে কিভাবে চাপ সামলে উঠবেন প্রভৃতি বিষয়ও ইন্টারনেটের বিভিন্ন লেখা থেকে জেনে নিতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেকে পর্যাপ্ত যোগ্য মনে না করেন তাহলে অভিজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে অনেক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।

সুতরাং তৈরি হয়ে যান আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার। আর এভাবেই এক সময় আপনার সফলতা আসবেই। সবচেয়ে বড় কথা সময়ের সঙ্গে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন প্রযুক্তিনির্ভরতা।

সর্বশেষ খবর