সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

গ্র্যাজুয়েশনের পর চাকরির প্রস্তুতি

শামছুল হক রাসেল

গ্র্যাজুয়েশনের পর চাকরির প্রস্তুতি

সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া কোনো কাজই সফলতার মুখ দেখতে পারে না। যে কোনো কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন পূর্ব-পরিকল্পনা। পরিকল্পনা দেখেই ভবিষ্যতের ফলাফল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে হোক সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন, গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি নিয়ে একটু বেশিই চিন্তায় থাকতে হয়। যারা ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশেষ ধরনের বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন তাদের জন্য চাকরির ক্ষেত্রটা অনেকটা নির্দিষ্ট। কিন্তু যারা জেনারেল বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন তাদের কিন্তু ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে একটু চিন্তা করতে হবে। ঠিক সময়ে কিছু পরিকল্পনা অবলম্বন করলে গ্র্যাজুয়েশন করার পর চাকরি পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে রইল কিছু পরামর্শ- প্রথমেই ঠিক করে নিন কোন ধরনের ক্যারিয়ার আপনি নেবেন। দরকার হলে সাহায্য নিতে পারেন কোনো ক্যারিয়ার কাউন্সিলরের। যে পেশা আপনি বেছে নিয়েছেন, সে সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করুন আগে থেকেই। সেই পেশার জন্য বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ বা স্কিলের দরকার হলে, রপ্ত করতে শুরু করুন আগে থেকেই। যদি কোনো কম্পেটেটিভ পরীক্ষা দিতে হয়, শুরু করে দিন তার জন্য প্রস্তুতিও।

যে ধরনের পেশাই আপনি বেছে নিন না কেন, বাইরের দুনিয়া বা চারপাশটা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা কিন্তু ভীষণ জরুরি। আর এ জন্য নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস করা উচিত।

যারা সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দেওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও জ্ঞান বাড়াতে হবে। খবরের কাগজ, টিভি, ম্যাগাজিনের সাহায্য নিন। বিতর্কিত বিভিন্ন ইস্যুর দু’দিকের মতামতই জানার চেষ্টা করুন। রাজনীতি, খেলাধুলা, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ের জন্য বিভিন্ন ফাইল তৈরি করে রাখলে পরে তা আপনাকে সর্বোতভাবে সাহায্য করবে। আজকের দুনিয়ায় কর্মক্ষেত্রে সফল হতে গেলে পুঁথিগত বিদ্যার বাইরেও কিছু সফট স্কিলের দরকার হয়। মানুষের সঙ্গে মিশতে শেখা, ব্যবহারিক ভদ্রতা রপ্ত করা, নিজের ওপর আস্থা, টাইম ম্যানেজমেন্ট এসব ব্যাপার আগেভাগে রপ্ত করতে পারলে সবচেয়ে লাভ হবে আপনার নিজেরই। চাকরির আবেদন করার সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় আপনার বায়োডাটা। কারণ, চাকরিদাতার কাছে সেটাই আপনার ফার্স্ট ইম্প্রেশন। অতএব, নিজের বায়োডাটাটি ভালোভাবে তৈরি করা চাই। ইন্টারনেট ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন ভালো সিভি তৈরি করার হাজারটা উপায়। তার মধ্য থেকে বেছে নিয়ে বেশ যুগোপযোগী একটি বায়োডাটা বানিয়ে ফেলুন। প্রায় সব ধরনের চাকরিতেই আগে ইন্টারভিউ দিতে হয়। আগে থেকেই এ ব্যাপারে তৈরি হতে থাকুন। প্রায় সব ইন্টারভিউতেই কতগুলো গৎবাঁধা প্রশ্ন করা হয়। যেমন নিজের সম্পর্কে কিছু বলা, নিজের চরিত্রের নেগেটিভ ও পজিটিভ দিক কোনগুলো, কেন আপনি এ পেশায় আসতে চান ইত্যাদি। আগে থেকেই এসব প্রশ্নের উত্তর ভেবে রাখুন। কাজ সম্বন্ধে হোমওয়ার্ক এবং উপস্থিত বুদ্ধি রাখা জরুরি। শেষে বলা যায়, চাকরি যাই হোক না কেন, আপনার পরীক্ষার রেজাল্ট বা একাডেমিক কোয়ালিফিকেশনটা কিন্তু সর্বক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও ব্যক্তিত্ব, যোগাযোগ দক্ষতা, স্মার্টনেস আর পরিশ্রমী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারলেই পেয়ে যেতে পারেন কাক্সিক্ষত চাকরিটি। কাজেই গ্র্যাজুয়েশন স্তরের পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট যাতে ভালো হয় সে ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর