বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

জানতে হবে নিজেকে

শামছুল হক রাসেল

জানতে হবে নিজেকে

কিছু বিষয় আছে যা অভ্যাস করলে আপনি কর্মক্ষেত্রে নিজের জায়গাটা পোক্ত করতে পারবেন। একটা কথা আমরা প্রায়ই বলি ASK yourself, আমার কাছে এই ASK- এর মানেটা এ রকম। A-Attitude, S-Skills, K-Knowledge কাজের জায়গায় আপনি হয়তো ‘গুড’। এই ‘গুড’ থেকে বেস্ট হয়ে উঠতে গেলে এই তিনটা জিনিস চাই-ই। ধরুন কেউ আপনাকে জিজ্ঞাসা করল, আপনার কাজটা ঠিক কী ভাই? ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারবেন তো? জেনে রাখুন এফেক্টিভ হয়ে উঠার মূলমন্ত্র- কী কাজ করছি, কেনই বা করছি, সেটা নিজের ভালোভাবে জানা। নিজেই যদি না জানলেন কাজের ক্ষেত্রে কোন লক্ষ্যটায় আপনাকে পৌঁছতে হবে, তা হলে ঠিকঠাক প্রায়োরিটি সেট করবেন কী করে? আর যদি প্রায়োরিটি সেট না করেন, তা হলে দেখবেন সব সময় সামনে কাজের পাহাড়, আর কোন কাজটা জরুরি, কোনটা ততটা নয়, সেটা ধরতেই পারবে না। সত্যিকারের কাজের কর্মীরা গুড অ্যাটিচিউডবান। কিন্তু গুড অ্যাটিচিউড। ঠিক কী? অ্যাটিচিউডওয়ালা কর্মীরা যে কোনো কাজে এগিয়ে যান সবার আগে। কোনো সহকর্মীর সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেন, কারও অসুস্থতায় কোনো কাজ পিছিয়ে গেলে সেটা ধরে নেন, সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করেন যে, নিজের কাজগুলো যেন হান্ড্রেড পার্সেন্ট ঠিক হয়। যথেষ্ট ভালোতে সন্তুষ্ট থাকার বান্দা তারা নন। কাজের  জায়গায় এই অ্যটিচিউড আপনাকে যেমন অন্যের শ্রদ্ধা এনে দেবে, তেমনই কাজের প্রতি আপনার মনোভাব বা কাজের স্ট্যান্ডার্ড এগুলোও গড়ে দেবে। আপনি যে কাজকে সিরিয়াসলি নিচ্ছেন, এই মানসিকতাটাই অন্যের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দেবে। এ ছাড়া ওয়াচ ইয়োর টাইম স্কিলটা থাকা জরুরি। এ স্কিলটা না থাকলে সব সময় কাজ নিয়ে, ই-মেইল নিয়ে, ফোন হাতে পাগলের মতো ছুটতে হবে। প্রতিদিনের কাজের তালিকাটা হাতে নিয়ে দেখে নিন। একটা ছক তৈরি করুন, মিটিংয়ে এত সময়, ই-মেইল চেক করতে এত, ফোন করতে এত। পরে চোখ বুলালে দেখবেন, রোজ এমন অনেক অকাজকে কাজ ভেবে সময় ঢালছেন, যার সঙ্গে টার্গেটের কোনো সম্পর্ক নেই। এবার আসল কাজগুলো বেছে নিয়ে ‘ইম্পর্ট্যান্ট’, ‘মোর ইম্পর্ট্যান্ট’, ‘মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট’, এভাবে ভেঙে নিন। দেখবেন, কিছু কাজ পরেও করা যায়, আবার কতকগুলো নিজে না করলেও চলে। এমনকি সময়ের সঠিক ব্যবহার করা জানতে পারাটাও খুব দরকার।

অন্যদিকে, চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে দক্ষতা অর্জন জরুরি হয়ে উঠেছে। ভালো চাকরি পাওয়ার আগে পড়াশোনার পাশাপাশি যেসব বিষয়ের দিকে জোর দেবেন সেগুলো জেনে নেওয়া জরুরি।  আজকাল অধিকাংশ কোম্পানিতেই স্পেশালিস্টদের জয়জয়কার। স্পেশালিস্ট হলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে ভালো দক্ষতা অর্জনকারী ব্যক্তি।  উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি হয়তো অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। অর্থাৎ অ্যাকাউন্টিংয়ের প্রায় সবদিক আপনার নখদর্পণে থাকা মানেই এ বিষয়টির ওপর আপনার স্পেশালাইজেশন রয়েছে। তাই বিষয়টিতে আপনি একজন স্পেশালিস্ট। কোম্পানিগুলো স্পেশালিস্ট নিয়োগের প্রতিই বেশি আগ্রহী। তাছাড়া স্পেশালিস্ট বা এক্সপার্টদের জন্য বেশ উচ্চ বেতনের চাকরির অফার করে থাকে। তাই এ দিকটাতেই দক্ষতা অর্জন জরুরি। তাহলেই আপনার সফলতা আসবে। এছাড়া আপনি ছোট-বড় যে ধরনের চাকরি প্রত্যাশীই হোন না কেন আপনাকে অবশ্যই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সে কারণে কম্পিউটার সম্পর্কে আপনার স্বচ্ছ এবং সঠিক ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। বর্তমানে সব ধরনের চাকরিতেই কম্পিউটার লিটারেসি খোঁজা হয়। তাই কম্পিউটারে দক্ষতা ছাড়া ভালো একটা চাকরির আশা করা নিতান্তই বোকামি হয়ে যাবে। চাকরির এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আপনার চাকরি নিশ্চিত করার জন্য নিজেকে টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে অটো মেকানিক, কনস্ট্রাকশন কন্ট্রাক্টর, ইলেকট্টিশিয়ান, হেয়ার স্টাইলিস্টসহ এ ধরনের অনেক টেকনিক্যাল বিষয়ে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারেন, যা আপনার ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এমনকি চাকরির বাজারে নিজেকে স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার ভ্যালু, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং ট্যালেন্ট- সবকিছুর সঙ্গে আপনার সামগ্রিক চেষ্টা যোগ হলে আপনি আপনার স্বাতন্ত্রতা তৈরি করতে পারবেন। তাই এখন থেকেই তৈরি হোন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর