শিরোনাম
রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ম্যানার্স

পেরেন্ট টিচার মিটিং

পেরেন্ট টিচার মিটিং

প্রায় সব স্কুলেই ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে নতুন শ্রেণির পাঠদান। নতুন বইয়ের গন্ধে মুখরিত প্রত্যেকটি শ্রেণি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে  বেশিরভাগ স্কুলে বছরে অন্তত একবার পেরেন্ট-টিচার মিটিং হয়। সন্তানের সার্বিক পারফরম্যান্স, পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন বাবা-মা এবং শিক্ষকরা। পেরেন্ট-টিচারের গুরুত্বপূর্ণ এ মিটিংয়ে আচার-আচরণ, সাজপোশাক এবং কিভাবে সামলাবেন টিচারের অভিযোগ তা নিয়ে লিখেছেন-  শামছুল হক রাসেল

 

কী করবেন : ঠিক সময়ে মিটিংয়ে পৌঁছান। মনে রাখুন কোনো রকমের ক্যাজুয়াল অ্যাপ্রোচ বাচ্চার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। পোশাক-

আশাকই আপনার রুচির পরিচায়ক। কাজেই মিটিংয়ের দিন যথাসম্ভব ভদ্র, মার্জিত পোশাক পরুন। মিটিংয়ের তারিখ জানার পর থেকেই মিটিং নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিন। ঠিক কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা দরকার সেই পয়েন্টগুলো মনে মনে সাজিয়ে নিন। প্রয়োজনে একটি নোটপ্যাডে সেগুলো লিখে নিয়ে যান। কোন সময় মিটিং তার ওপর নির্ভর করে টিচারকে গুড মর্নিং বা গুড আফটারনুন উইশ করবেন। সময় দেওয়ার জন্য মিটিং শেষে টিচারকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবেন। টিচার রুমে ঢুকলে উঠে দাঁড়ান। তিনি বসতে বললে ধন্যবাদ জানিয়ে বসুন। মিটিং শেষ হলে চেয়ার ঠিক করে রাখুন। বাচ্চার কোনোরকম স্কুল রিলেটেড সমস্যা থাকলে টিচারের সঙ্গে তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন। মনে রাখবেন, বাচ্চা তার অনেকটা সময় স্কুলে কাটায়, ফলে টিচাররা সেই সমস্যা সমাধান করার জন্য  উপযুক্ত।  বাচ্চার সমস্যা নিয়ে কমপ্লেইন করাই যথেষ্ট নয়, কীভাবে তা ওভারকাম করা যায় সেই আলোচনায়ও জোর দিন। টিচারকে পরিবারের সদস্য মনে করে কথা বলুন। মিটিং শেষ করুন পজিটিভভাবে। যে বিষয়ে আলোচনা এবং যা সিদ্ধান্ত হলো, তা মিটিং-পরবর্তী আরেকবার ডিসকাস করে নিন। মিটিংয়ের শেষে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানান। বাবা-মা দুজনেই চাকরিজীবী হলে মিটিংয়ে যোগ দেওয়া নিয়ে সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দু’পক্ষকেই যতটা সম্ভব অ্যাডজাস্টিং মেন্টালিটি নিয়ে এগোতে হবে। কোনো কাজের ব্যস্ততায় মিটিংয়ে যোগ দিতে না পারলে টিচারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং যেতে না পারার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিন। অন্য কোনো দিন  অ্যাপয়েন্টমেন্ট ফিক্সড করার চেষ্টা করুন।

কী করবেন না : মিটিংয়ে সন্তানকে নিয়ে যাবেন কিনা তা আগে থেকেই জেনে নিন। না জিজ্ঞাসা করে সন্তানকে সঙ্গে না নিয়ে যাওয়াই ভালো। মিটিংয়ের আগে এবং পরে অন্য কাজের ব্যস্ততা না রেখে মিটিংয়ে কনসেনট্রেট করুন। মিটিংয়ের সময় অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করবেন না। টিচারের বক্তব্য শেষ হলে নিজের বক্তব্য পেশ করাটা ভদ্রতা। কাজেই অন্যকে থামিয়ে নিজের কথা বলতে শুরু করবেন না।  ছেলেমেয়ের নামে কোনো অভিযোগ থাকলে বিরক্ত বা বিব্রত হবেন না। যদি থাকে তাহলে তা ধৈর্যসহকারে শুনে টিচারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করুন। অন্যথায় মিটিং কখনোই কার্যকর হবে না।  মিটিংয়ে কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হলে বিতর্কে জড়াবেন না। ঠান্ডা মাথায় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করলে পরবর্তীতে ছেলেমেয়েরই ক্ষতি হবে। 

আলোচনার সময় যতটা সম্ভব টু দ্য পয়েন্ট না হয়ে ইমোশনাল  হয়ে পড়া একদমই ঠিক নয়।  মিটিংয়ে কিছু বিষয় একদম ঢুকতে দেবেন না। যেমন : পারিবারিক আলোচনা, অন্য টিচারদের সমালোচনা, অন্য স্টুডেন্টের সঙ্গে ছেলেমেয়ের তুলনা। সন্তানের কোনো সমস্যা নিয়ে ডিস্টার্বড থাকলেও সেগুলো নিয়ে মিটিংয়ে আলোচনা করা ঠিক নয়।

 

টিচারদের জন্য টিপস

আলোচনা শুরু করুন আপনার শিক্ষার্থীর পজিটিভ দিকগুলো নিয়ে। পড়াশোনা, এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি, অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার মিটিংয়ের শুরুতেই প্রতিটি স্টুডেন্টের অভিভাবককে তার পারফরম্যান্স বিষয়ে একটা সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করুন। কোনো শিক্ষার্থী বারবার অমার্জিত আচরণ করলে সে কখন কী জাতীয় আচরণ করেছে তা নোট করে রাখুন এবং মিটিংয়ে তা নিয়ে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে অবশ্যই বিস্তারিত আলোচনা করুন। মিটিংয়ে অভিভাবককে যতটা সম্ভব আন্তরিকভাবে ওয়েলকাম করুন। এতে সহজভাবে আলোচনার পরিবেশ তৈরি হবে। মার্জিতভাবে সহায়তার মনোভাব নিয়ে কথা বলুন। শিক্ষার্থী সম্পর্কে বেশি অভিযোগ থাকলে বাবা-মায়ের সঙ্গে আলাদাভাবে বলুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর