রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

শিক্ষামন্ত্রী সমীপে

সম্প্রতি সরকার একটি যুগান্তকারী ও সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে মাধ্যমিক স্তরের নবম-দশম শ্রেণীর 'শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা গ্রন্থে' (পৃষ্ঠা ৫৯-৬৫, ৯ম পাঠ) 'অটিজম বিষয়ক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বিষয়টি পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন 'ডাইরেক্টরি অব সেকেন্ডারি এন্ড হাইয়ার এডুকেশন এন্ড ইউনিসেপ' সমগ্র বাংলাদেশ থেকে প্রাথমিকভাবে ২০টি জেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের 'লাইফ স্কিল বেইজ এডুকেশন' (এলএসবিই) প্রকল্পের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক শনাক্তকৃত ও সংজ্ঞায়িত ১০টি জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণ দানের জন্য ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, 'অটিজম' বিষয়ক নবম পাঠটি 'প্রশিক্ষণ মডুল' থেকে বাদ পড়েছে। এমনকি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক মুদ্রিত 'জাতীয় শিক্ষাক্রম/২০১২ নবম শ্রেণী'-এর বিষয়বস্তু, শিখন-শেখানো নির্দেশনা, মূল্যায়ন নির্দেশনা ইত্যাদি (পৃ. ৬৩-৮০) এর কোথায়ও অটিজম বিষয়ে একটি শব্দও চয়ন করা হয়নি। অথচ অটিজমের মতো একটি অদৃশ্য প্রতিবন্ধিতা বিষয় বুঝতে গেলে এ বিষয়ে গভীর ধারণা থাকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে আরও কিছু অদৃশ্য প্রতিবন্ধিতা যেমন- বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা, শিখন প্রতিবন্ধিতা, রেট সিন্ড্রম, আচরণ সমস্যাগ্রস্থ শিশু; এমনকি প্রতিভাবান শিশু ইত্যাদি বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে আলোচনা থাকা প্রয়োজন। কারণ এ সব প্রতিবন্ধিতার বৈশিষ্ট্য ও লক্ষণগুলো অনেক ক্ষেত্রে অটিজম বিষয়ের সঙ্গে এক ও অভিন্ন এবং এদের একটি থেকে অপরটির পার্থক্য এতটাই সূক্ষ্ম যে, তাদের শনাক্তকরণ, শ্রেণীকরণ অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আবার অটিজম বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা না থাকলে তাদের যত্ন নেওয়া, চিকিৎসা, এমনকি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দানের মতো কঠিন কাজটি দুঃসাধ্য। এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ না দিয়ে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের আয়োজন করলে তা হবে একটি ভুল পদক্ষেপ এবং অজ্ঞতাবশত কোনো উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত করবে। কাজেই শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আরজ ক্যারিকুলাম ও পাঠ্যসূচিতে অটিজম বিষয়সহ আরও কিছু অদৃশ্য প্রতিবন্ধিতার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণ মডুলে অটিজম বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মো. গোলাম মোস্তফা

প্রধান শিক্ষক, রাজুর বাজার, কলেজিয়েট স্কুল, নেত্রকোনা।

 

 

সর্বশেষ খবর