বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, মাইজভান্ডারী তরিকার মূল নির্যাস মানবকল্যাণ। এই তরিকা মানুষকে আলোর পথে পরিচালিত করে।
শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দমদমায় গাউছিয়া গনি মনজিলে পীরে কামেল আল্লামা শাহসূফি সৈয়দ আবদুল গনি চৌধুরী (ক.)-এর ৯১তম ওরশ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘আল্লামা শাহসূফি সৈয়দ আবদুল গনি চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র সাহিত্য প্রতিভা ও চিন্তাদর্শন’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর শাহসূফি সৈয়দ সফিউল গনি চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী (মা.জি.আ)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. মো. নূরে আলম। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মহাসচিব শাহজাদা সৈয়দ কাদের গনি চৌধুরী।
আলোচনা করেন ড. নিজাম উদ্দিন জামি, মাওলানা সৈয়দ মু’তাসিম বিল্লাহ, শাহসূফি সৈয়দ মামুনুর রশিদ আমিরী, শাহসূফি শেখ শহিদুল্লাহ ফারুকী, মাওলানা কাজী খালেদুর রহমান হাশেমী, মাওলানা সৈয়দ সালাউদ্দিন, অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা সৈয়দ বশিরুল আলম, মাওলানা নুরুল ইসলাম ফোরকানী, মাওলানা আলী আজম রেজভি, মাওলানা আবু জাফর মোহাম্মদ এনামুল হক, মাওলানা নজরুল ইসলাম আশরাফি, মাওলানা কে. এম. জহির উদ্দিন, মাওলানা কাজী সেলিম উদ্দীন, মাওলানা ইকরাম উদ্দিন ও হাফেজ মাওলানা বেলাল উদ্দিন প্রমুখ। শেষে বিশ্বশান্তি কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীনে দরবার প্রফেসর শাহসূফি সৈয়দ সফিউল গনি চৌধুরী।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ–সংঘাত, ধর্মবিদ্বেষ, বর্ণবৈষম্য, ইসলামোফোবিয়া ও শক্তিশালীর অত্যাচার চরম আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর আদর্শ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সমতার শিক্ষা মাইজভাণ্ডার শরিফ দিয়ে আসছে—যা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অন্যতম ভিত্তি হতে পারে।
তিনি বলেন, মাইজভান্ডারী তরিকা কোরআন–সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত। এর বাইরে থাকা কোনো কিছুই এই তরিকার অংশ নয়। মাইজভাণ্ডারী তরিকা একটি সুফি পথ, যা শান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের উপর জোর দেয়। তরিকতপন্থীরা সংঘাত, সহিংসতা ও রক্তপাত সমর্থন করেন না।
বিএফইউজের মহাসচিব বলেন, মাইজভান্ডারী দর্শন গভীরতর আধ্যাত্মিক উপলব্ধির পথ। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক (ক.) বলেছেন, ‘Maizbhandar is an Ocean. Don't think otherwise’. তিনি আরও বলেন, পবিত্র কোরআন ও প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ ধারণ ও অনুসরণের মধ্যেই স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব—এটাই মাইজভান্ডারী দর্শনের মূল ভিত্তি।
তিনি আরও বলেন, মাইজভান্ডার দরবার শরিফ উপমহাদেশের প্রধান আধ্যাত্মিক চর্চার প্রাণকেন্দ্র। এটি মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক ও বিচারসাম্যমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। বিভিন্ন ধর্ম–বর্ণের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা ও সম্প্রীতির শিক্ষা এই দর্শনের বিশেষ শক্তি। সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনস্থল হিসেবে মাইজভান্ডার দরবার আজও অনন্য।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল