দুপুর থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়েছেন জুলাইয়ে আন্দোলনের সময়ে পুলিশের গুলিতে আহতরা। কারো পা নেই, কারো নেই হাত। কেউ ক্র্যাচে আবার কেউ এসেছেন প্রিয়জনের কাঁধে ভর করে। এদের মধ্যেই অনেকে ছিলেন দীর্ঘদিন গুমের শিকার। শুধু তারাই নয় বরং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ভিন্নমতের কারণে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন শতাধিক মানুষ জড়ো হয়েছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠন করা সংগঠন মায়ের ডাকের আয়োজনে গণজমায়েতে যোগ দিতে জড়ো হয়েছেন তারা।
জুলাইয়ে আন্দোলনের সময়ে পুলিশের গুলিতে আহত আব্দুস সোবহান বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে খুব কাছে থেকে আমাকে গুলি করা হয়েছে। অথচ আমি কোনো অপরাধই করিনি। শুধু তাই নয়, এরপরও দীর্ঘদিন আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।
মায়ের ডাক সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে জুলুমের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এখানে জড়ো হয়েছেন। আওয়ামী সরকারের দ্বারা গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন। এখান থেকে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, জুলাই গণহত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ নির্বিচারে নির্যাতন চালানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষ এখনও পরিবারের কাছে ফেরেননি। এমনকি তারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন সেটিও জানা যায়নি। আমরা গুম হওয়া মানুষজনের অবস্থান জানতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে যে জুলুম নির্যাতন ভিন্ন মতের মানুষের ওপর চালানো হয়েছে তার বিচার করতে হবে।
গণজমায়েতে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জামায়াত ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত