স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর ও মৃত্যুর দুই বছর পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা পেলেন বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সাবেক উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. কেরামত আলী খান।
শুক্রবার (১৪ নভেম্ব) সকালে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গেজেটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব হরিদাস ঠাকুর স্বাক্ষরিত গেজেটের কপি হাতে পেয়ে তার পরিবার আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
কেরামত আলী খানের স্ত্রী জাহানারা কেরামত জানান, ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বনশ্রী আল-রাজী হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের আবেদন করা হলেও গেজেটে নাম না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও বঞ্চনার মধ্যেই তাকে বাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জীবদ্দশায় স্বীকৃতির জন্য পুলিশ আইজিপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জামুকাসহ বিভিন্ন দপ্তরে তিনি ঘুরেছেন। মরণশয্যায় থেকেও গেজেটে নিজের নাম দেখার ইচ্ছে ছিল তার (মো. কেরামত আলী খান)। আজ স্বীকৃতি মিললেও সেই আফসোস আমাদের সারা জীবনের।
জ্যেষ্ঠ কন্যা কামরুন্নাহার রুবী বলেন, বাবা প্রতিবছর বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ দেখতে যেতেন। ফিরে এসে বলতেন- আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সম্মান থেকে বঞ্চিত। আজ বেঁচে থাকলে এই গেজেট দেখে খুব খুশি হতেন।”
১৯৭১ সালে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন কেরামত আলী খান। স্বাধীনতার পর পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। সার্ভিস বুকে তাঁর নামের আগে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা থাকলেও সরকারি তালিকায় নাম ছিল না। তার আবেদন পর্যালোচনা করে ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটি তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুপারিশ করে এবং সেই প্রতিবেদন জামুকায় পাঠানো হয়। পরে তা অনুমোদিত হয়ে সম্প্রতি গেজেটে প্রকাশিত হয়।
বানারীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হক বলেন, কেরামত আলী খান মৃত্যুর পর হলেও প্রাপ্য সম্মান পেয়েছেন। তবে জীবদ্দশায় স্বীকৃতি পেলে তিনি আরও গর্বিত হতেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ