শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩ ০০:০০ টা

ব্যর্থতার ভারে ন্যুব্জ চসিকের সফলতা

সার্ধশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা শুরু

সেবা প্রদানে ব্যর্থতার বোঝা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) গতকাল শুরু হয়েছে সার্ধশতবার্ষিকী পূর্তির নানা আয়োজন। তিন দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যের নগরবাতি প্রজ্বলন, বর্ণিল র্যালি, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা, সাবেক মেয়র, প্রশাসক-চেয়ারম্যানদের সম্মাননা প্রদান, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ কিং অব চিটাগাংয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন ছিল বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। কিন্তু গত তিন বছরে শত কোটি টাকার মাটি কাটার ফিরিস্তি থাকলেও জলাবদ্ধতার উন্নয়ন হয়নি। যানজট নিরসনেও কোনো উদ্যোগ নেই। আছে কেবল 'যোগাযোগ স্ট্যান্ডিং' নামের একটি কমিটি। সেবা সংস্থাগুলোকে নিয়ে পরিকল্পিত নগরায়নের উদ্যোগের নামে গত তিন বছরে একটি বৈঠক করেই দায়িত্ব শেষ করেছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ৩০০ ডাস্টবিনের দাবি করলেও উৎকট দুর্গন্ধে নাভিশ্বাসে পথচারীরা। আর নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা এখন তলানিতে। নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত চারটি মাতৃসদন ও একটি হাসপাতালের সেবার মানও নিম্নমুখী। এর মধ্যে বন্দরটিলা, দক্ষিণ বাকলিয়া ও পূর্ব বাকলিয়া মাতৃসদনে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। এডিবির সহায়তায় পরিচালিত ৩৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও দুটি মাতৃসদনের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এখানকার ৫৯০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি হারানোর শঙ্কায়।

এদিকে বছরজুড়ে কোটি টাকার মশকনিধন কার্যক্রম চোখে পড়ে না নগরবাসীর। আর নগরীর ফুটপাতগুলো বেদখলে। এগুলো উদ্ধারে কোনো তৎপরতা না থাকায় যানজট নিত্যসঙ্গী। তবে করপোরেশনের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রায় ১০ হাজার অবৈধ বিলবোর্ড থেকে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হলেও নগর ভাণ্ডারে যায় না এর একটি পয়সাও। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের প্রিমিয়ার ড্রিংকিং ওয়াটার, আবর্জনা পরিশোধনাগার, কালো লাকড়ি তৈরি ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। আয়বর্ধক প্রকল্প না থাকায় গত মেয়রের আমলের চেয়ে করপোরেশনের ৩০ শতাংশ আয় কমেছে। তবে সফলতার মধ্যে ২০১১ সালে চট্টগ্রামে বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন, দুটি কলেজ প্রতিষ্ঠা, প্রকৌশল বিভাগে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান, ৫০ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন, ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য। সিটি মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলম বলেন, তিন বছরে আমি কী করেছি তা মূল্যায়নের সময় এখনো আসেনি, আরও দুই বছর বাকি। তবে আমি চেষ্টা করেছি নগরবাসীর কাছে থাকতে। কিন্তু এ মুহূর্তে মূল্যায়ন করতে পারবে নগরবাসী। তিনি বলেন, বর্তমানে যে প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে এর সুফল নগরবাসী পাবে। তা ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ এখন মন্ত্রণালয়ের অপেক্ষায়। আরবান স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পটি করপোরেশনের অর্থায়নে পরিচালনার সিদ্ধান্তও এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর