রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

পার্লামেন্ট ভাঙতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে

পার্লামেন্ট ভাঙতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে

সংবিধান সংশোধন ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে পার্লামেন্ট ভাঙার কোনো ব্যাপারই নেই। প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট ভাঙার কোনো এখতিয়ার এখনকার সংবিধানে নেই। এমনকি রাষ্ট্রপতিও করতে পারেন না। তার মানে আগামী সংসদ নির্বাচন যেভাবেই করতে চান, পার্লামেন্ট ভাঙতে আগে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। গত শুক্রবার চ্যানেল আইর তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন। জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম আতাউর রহমান। এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সিটি নির্বাচনগুলোয় সরকার কৃতিত্ব নিতে পারে। সরকার ইন্টারফেয়ার করেনি। করলে আরও খারাপ হতো। এটা লোকাল ইলেকশন। খুবই ফোকাসড। গাজীপুরে সব টেলিভিশন এক মাস ধরে পড়ে ছিল। পর্যবেক্ষকরা ছিলেন। কিন্তু ৩০০ আসনের জাতীয় নির্বাচনে এটা সম্ভব হবে না। তিন লাখ কেন্দ্রে সর্বোচ্চ দুটি করে পুলিশ-আনসার রাখতে পারবেন। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন ক্ষমতা বদলের নির্বাচন। সেই ক্ষমতা বদলের নির্বাচনের সঙ্গে সিটি নির্বাচনের তুলনা করা আদৌ ঠিক নয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা এখনো বিতর্কিত।

সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি তো পাঁচ বছর নির্বাচন কমিশনে ছিলাম। লোকাল ইলেকশন দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে তা ধারণা করা অসম্ভব। ১২ লাখ লোক দরকার হয় এক দিনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ছয় লাখ পোলিং স্টাফ ও ছয় লাখ লাগে নিরাপত্তা সদস্য। পোলিং স্টাফ সব সরকারের। যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা তাদের প্রশাসনকে সেভাবেই সাজায়। দলীয়করণ করতে করতে প্রশাসনকে এমন করে ফেলা হয়েছে যে, এই প্রশাসনকে দিয়ে নির্বাচন করানো মানে নির্বাচন কমিশনকে লোহিত সাগরের মধ্যে হাত পা বেঁধে ফেলে দেওয়া। তিনি বলেন, আজ নির্বাচন করা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাসের কারণেই। এক পার্টি ক্ষমতায় গেলে অপজিশন পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার যে প্রয়াস সেটাই এ অবিশ্বাস জন্ম দেয়। নিশ্চিহ্ন করতে গিয়ে নিজেরাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা অনেক নতুন নতুন আইন করেছিলাম। বলেছিলাম তৃণমূল হতে প্রার্থী নির্বাচন করতে। এটা না করায় স্থানীয় রাজনীতিতে ফ্রাকশন দেখা দিচ্ছে। একজন আরেকজনকে সহযোগিতা করছে না। তৃণমূলের মত না নিয়ে কেন্দ্র থেকে এমন লোককে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে স্থানীয়রা হয়তো তার মুখটিও দেখতে চায় না। সিটি নির্বাচনগুলোতেও এর একটা প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, এত জনমত নিয়ে অতীতে কোনো দল সরকার গঠন করেনি। কিন্তু দুই বছরের মাথায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সরকার সমর্থিত প্রার্থী হেরে গেলেন। পরবর্তী সিটি নির্বাচনগুলোতেও ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। ধারণা করেছিলাম গাজীপুরে ৫০/৫০ প্রতিযোগিতা হবে। সেখানেও বিপুল ভোটের ব্যবধানে সরকার সমর্থিত প্রার্থী হেরে গেল। চারটি সিটি করপোরেশনে মেয়ররা ভালোই কাজ করেছিলেন। তারপরও হারলেন কেন? ওনারা হেরেছেন বলে আমি মনে করি না। প্রত্যেকটি দল জাতীয় ইস্যুগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তার মাশুল গুনতে হয়েছে ভালো কাজ করা এ রাজনীতিকদের।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর