রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

দুটি শব্দ পরিবর্তন হলেই সমঝোতা

দুটি শব্দ পরিবর্তন হলেই সমঝোতা

সংবিধানের সবকিছু তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করতে হবে এমন দাবি তো বিরোধী দল করেনি। দুটি শব্দ পরিবর্তন করলেই তো সমঝোতা হয়ে যেতে পারে। সংসদের বাইরে থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার হবে_ এ কথাটি বললেই তো হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী যদি এতই উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে তার এত ভয় কীসের। তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে দিলেই পারেন। শুক্রবার এটিএন নিউজের টকশো 'নিউজ আওয়ার এঙ্ট্রা'-এ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিএফইউজের মহাসচিব শওকত মাহমুদ এ কথা বলেন। মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন_ তিনি বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করবে। তার মানে কি বিএনপি পঞ্চদশ সংশোধনীর অধীনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে যাচ্ছে? শওকত মাহমুদ বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মধ্যে অনেক কিছুই আছে বাদ দেওয়ার মতো। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের বিষয় বিএনপির মেনুফেস্টোতেই থাকবে। এটা বাতিল হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই সংশোধনী আমাদের রাজনৈতিক স্থিতি নষ্ট করেছে। ২০০৮-এর কারচুপিপূর্ণ নির্বাচনের পরও বিএনপি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে সংসদে গেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আচমকা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে সেখানে 
এমন কতগুলো বিষয় ঢুকিয়েছে যা বিতর্কিত। এর ফলেই বিএনপি আন্দোলনে নেমেছে। তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রীর যে জনসভা ছিল আমরা আশা করেছিলাম সেখান থেকে সংকট সমাধানের কোনো ঘোষণা আসবে। খুব আগ্রহ নিয়ে এটি দেখছিলাম। কিন্তু লক্ষ্য করলাম তিনি আবার ভোট চাইলেন। তার মানে তিনি তার মতো করে নির্বাচনের পথে এগোচ্ছেন। অন্য কোনো দল ভোট চাচ্ছে না। তিনি একাই ভোট চাচ্ছেন। পাশাপাশি জনসভায় তিনি বিরোধী দলের নেতাকে নিয়ে তীর্যকভাবে কথা বলেছেন। এগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশা করিনি। বিরোধীদলীয় নেতার এ উপদেষ্টা বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যেভাবে শোক প্রকাশ করতে দেখেছি এই আগস্টে তা দেখিনি। উল্টো শোকের মাসে এক রাতে সারা ঢাকায় ভূতেরা এসে প্রচারের বিলবোর্ড লাগিয়ে গেল। 
সেখানে কোথাও তাদের নেতার স্মরণ বা শোক প্রকাশ ছিল না। তিনি বলেন, জাতিসংঘ পর্যন্ত আমাদের নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের মহাসচিব ফোন করেছেন। তিনি চাইছেন দুই দলকে আলোচনায় বসিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে। 
তৃতীয় শক্তি আসার আশঙ্কা নিয়ে সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে শওকত মাহমুদ বলেন, আমার মনে হয় না তৃতীয় শক্তির এখানে হামাগুড়ি দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে। তৃতীয় শক্তির কথা যেটা এসেছে সেটা হচ্ছে_ নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের ইউনূস সেন্টারে সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠনগুলো দেখা করছেন এবং ড. ইউনূস যেসব বক্তৃতা করছেন তা কিছুটা সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। এটা সরকারের হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। এ জন্যই মনে হচ্ছে তিনি কোনো তৃতীয় মঞ্চ গঠন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ড. ইউনূস স্পষ্ট বলেছেন, তার রাজনীতি করার কোনো ইচ্ছা নেই। তিনি বলেন, সরকার একজন নোবেল বিজয়ীকে যেভাবে হেনস্তা করেছে তাতে ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতেই পারেন। আমাদের দেশে নোবেল বিজয়ী থাকতেও প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমীর বইমেলা উদ্বোধন করিয়েছেন পাশের দেশের একজন নোবেল বিজয়ীকে নিয়ে। এটিও তার জন্য অপমানজনক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর