শনিবার, ১০ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

ঢাবি কলাভবনের বেহালদশা

ঢাবি কলাভবনের বেহালদশা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে অপরিচ্ছন্ন ভবনে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ভবনের টয়লেট, ক্লাসরুম, ছাত্রীদের কমনরুমসহ আশপাশের এলাকা বেহাল। ঘুরে দেখা যায়, কলাভবনের মূল ফটকের পাশেই রয়েছে ময়লার স্তূপ। ভিতরের আঙিনাও অপরিষ্কার। টয়লেটগুলোর কোনো কোনোটিতে পানি জমে রয়েছে। হাই কমোডগুলো নষ্ট। কয়েকটির দরজা ভাঙা, পানির কল অকেজো। টয়লেটের ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে টিস্যু, কাগজের টুকরা। এ ছাড়া ভবনের অনেক জানালার কাচ ভাঙা। শিক্ষার্থীরা জানান, টয়লেটের দুর্গন্ধ অনেক সময় ক্লাসরুম পর্যন্ত গড়ায়। তাতে শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হয়। এ ছাড়া টয়লেটগুলো অপরিচ্ছন্ন থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই ব্যবহার করতে চান না। জরুরি প্রয়োজনে তাদের পড়তে হয় বিপাকে। সূত্রমতে, কলাভবনে কলা অনুষদের ১৬টি বিভাগ ছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১০টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের জন্য নতুন ভবন তৈরি হলেও এখনো অনেক বিভাগের ক্লাস কলাভবনেই অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বিবরণী থেকে দেখা যায়, এ দুই অনুষদে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন, যার প্রায় পাঁচ হাজার ছাত্রী। কিন্তু তাদের জন্য কমনরুম আছে মাত্র দুটি। ছাত্রীদের অভিযোগ, কমনরুমের ভিতরের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা, অপরিষ্কার। ব্যবহারকারীর তুলনায় টয়লেটের সংখ্যা কম। এগুলো ঠিকমতো পরিষ্কার না করায় আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বলতে কলাভবনকেই বোঝেন। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাক্ষী এ কলাভবন। এখান থেকেই বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে দেশের সমৃদ্ধ নেতৃত্ব। কলাভবনের সামনে কথা হয় রাজশাহী থেকে আসা রবিউল ইসলাম দুর্জয়ের সঙ্গে। চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসেছেন। এ সুযোগে বেড়াতে গেছেন ঢাবি ক্যাম্পাসে। তিনি বলেন, কার্জন হলের তুলনায় কলাভবন এলাকা বেশি অপরিচ্ছন্ন মনে হচ্ছে। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আলাউদ্দিন বলেন, কলাভবন আধুনিক সুবিধাবঞ্চিত। অন্যান্য অনুষদের তুলনায় এ ভবনের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। টয়লেটগুলো নোংরা, স্যাঁতসেঁতে। কলাভবনের ছাত্রছাত্রীদের এসব দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ। এ বিষয়ে কথা বলতে কলাভবনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. গোলাম রব্বানী সরকারের কাছে গেলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন বলেন, আমার মূল কাজ একাডেমিক বিষয়গুলো দেখা। এর পরও ভবনের বিভিন্ন বিষয়ের সমস্যা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া ফান্ডের অভাবে ভবনের বিভিন্ন কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর