বুধবার, ১৭ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

সিলেটে টানা ভারিবর্ষণে একসপ্তাহে নগরীতে অন্তত ১০টি টিলা ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেখা দিয়েছে প্রাণহানির আশঙ্কা। সিলেট নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে সহস্রাধিক পরিবারের প্রায় ১০ হাজার লোক বসবাস করছে। এদিকে, প্রতি বছর বর্ষায় সিলেটে টিলাধসে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটলেও তাদের পুনর্বাসন বা নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত বছর ভারিবর্ষণে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টিলার ওপরের একটি দেয়াল ধসে একই পরিবারের তিনজন মারা যান। বুধবার নগরীর হাওলাদার পাড়ায় একইভাবে টিলা ধসে একই পরিবারের তিনজন আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, সিলেট মহানগর, নগরীর উপকণ্ঠ ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টিলা ও পাহাড় কেটে কাঁচা-আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন বসবাস করছে সহস্রাধিক পরিবার। স্থানীয় প্রভাবশালীরা টিলার পাদদেশে বাড়ি নির্মাণ করে ভূমিহীন ও হতদরিদ্রদের ভাড়া দিয়ে থাকেন। ভাড়া কম হওয়ায় মৃত্যুঝুঁকি সত্ত্বেও এসব বাড়িতে বসবাস করে নিম্নবিত্ত লোকজন। পাহাড় বা টিলার নিচে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব। সরেজমিন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জালালিয়া আবাসিক এলাকা ও হাওলাদারপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয়ভাবে জগোটিলা হিসেবে পরিচিত টিলার পাদদেশে ও টিলার ওপর কয়েকশ' পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে টিলার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া নগরীর উপকণ্ঠের বালুচর, বিমানবন্দর সড়ক, খাদিমপাড়া, খাদিমনগর, জোনাকি, ইসলামপুর মেজরটিলা, মংলিরপাড় এলাকার বিভিন্ন টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েকশ পরিবার।

কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নগরীর হাওলাদারপাড়া, হোসনাবাদ, বালুচর, খাদিম ও হাজারীবাগসহ বিভিন্নস্থানে অন্তত ১০টি টিলাধসের ঘটনা ঘটেছে।

টিলার পাদদেশে বসবাসকারী শাহীন আহমদ বলেন, 'ভাড়া কম হওয়ায় ঝুঁকি সত্ত্বেও এখানে বসবাস করছি। বৃষ্টি হলে টিলাধসের আতঙ্ক দেখা দেয়। রাতে বৃষ্টি হলে সারা রাত নির্ঘুম কাটাই।'

সিলেটে পাহাড় ও টিলার পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে কতটি পরিবার বসবাস করছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই জেলা প্রশাসনের কাছে। তবে সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, সিলেটে টিলার পাদদেশে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করায় ১০ হাজার লোক ঝুঁকিতে রয়েছে। গত জানুয়ারিতে এ জরিপ চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হাই আল হাদী।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, টিলার নিচে বসবাসকারীর কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। টিলাধসের ঝুঁকিতে কেউ আছে কি-না তাও তার জানা নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর