শিরোনাম
বুধবার, ১৭ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

রংপুর ছাত্রলীগের বেহাল দশা

রংপুর ছাত্রলীগের বেহাল দশা

বেহাল অবস্থায় পড়েছে রংপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের কার্যক্রম। সাত মাস ধরে স্থগিত মহানগর কমিটির কার্যক্রম। কমিটি না থাকায় জেলার আট উপজেলার মধ্যে চারটির কার্যক্রম বন্ধ। আহ্বায়ক কমিটির কারণে অপর চার উপজেলায় সংগঠনটির কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। কমিটি নেই রংপুর মেডিকেল কলেজ ও পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটেও। রংপুর সরকারি কলেজে আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও নেতৃত্বের দলাদলির কারণে নিষ্ক্রিয় কর্মীরা। কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি এক বছর ধরে রংপুর সিটি করপোরেশনে চাকরি করছেন। সাধারণ সম্পাদককে করা হয়েছে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। নেতৃত্ব সংকটে সেখানে সংগঠনটির কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। আর বিরোধ-বিভক্তিতে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতা-কর্মীরা। ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা ও তদবির বাণিজ্যের কারণে ১৪ সদস্যের জেলা কমিটির ১৩ নেতাই তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কমিটির এক সহসভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছয় বছরে যা আয় করতে পারেননি। বর্তমান সভাপতি ছয় মাসে তা করেছেন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে এক বছর মেয়াদি ১২১ সদস্যের জেলা কমিটির মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ৬ জন সহসভাপতি, ৩ জন সাংগঠনিক ও ৩ জন যুগ্ম সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। জানতে চাইলে ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি মেহেদী হাসান রনি বলেন, গত বছরের ৮ মার্চ দায়িত্ব নেওয়ার পর বেহাল অবস্থা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সংগঠনকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে ইতিমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হচ্ছে। গঙ্গাচড়া ও সদর উপজেলায় বর্ধিত সভা করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।

জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জনা গেছে, কমিটি না থাকায় বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলায় দুবছর ধরে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম নেই। ১১ জুন বিলুপ্ত করা হয়েছে পীরগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলা কমিটি। মহানগর কমিটির সভাপতি ইউনুছ আলী দেড় লাখ টাকা নিয়ে মেডিকেল কলেজ কমিটি অনুমোদন দেওয়ায় গত বছরের ১৫ নভেম্বর মহানগরের কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাতিল করা হয় মেডিকেল কলেজ কমিটি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় কার্যক্রম চালানোর চেয়ে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিধাবিভক্ত ছাত্রলীগের। কমিটির সহসভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, নেতা-কর্মীকে মূল্যায়ন না করায় ১৭১ সদস্যের মধ্যে ১০-১২ জনকে নিয়ে একপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অন্যরা তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার হোসেন মণ্ডল মওলা বলেন, আগের সেই শক্তিশালী ও সুসংগঠিত ছাত্রলীগ এখন নেই। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এমপিদের নির্বাচনী এলাকা মিঠাপুকুর, পীরগাছা, কাউনিয়া ও বদরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগ আছে বলে মনে হয় না। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কর্মিসভার মাধ্যমে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কমিটি করে কার্যক্রম চালানোর জন্য জেলা নেতাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর