শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

লুটপাটের প্রতিযোগিতায় ইবির  কর্তাব্যক্তিরা

ব্যক্তিগত বাড়ি মেরামতে উপ-উপাচার্য নিয়েছেন তিন লাখ টাকা

ইকবাল হোসাইন রুদ্র, ইবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে যেন অর্থ তসরুপের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সরকারি টাকায় বিলাসিতায় মত্ত। দ্বদ্ন্বে লিপ্ত কর্তাব্যক্তিরা একে অন্যকে ফাঁসাতে সরকারি অর্থ তসরুপের কাহিনীও ফাঁস করে দিচ্ছেন। জানা যায়, ১০ অক্টোবর ইউজিসির তদন্ত দলের কাছে একে অপরের দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করেছেন। সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের কাছে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ নথিতে দেখা গেছে, যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারের চেয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান গাড়ি বাবদ দ্বিগুণ টাকা ব্যয় করেছেন এবং টিএ/ডিএ বাবদও দিগুণ টাকা তুলেছেন। ব্যক্তিগত বাড়ি মেরামতের জন্যও নিয়মবহিভর্‚তভাবে প্রায় তিন লাখ টাকা তুলেছেন তিনি। প্রশাসনের প্রথম কর্তাব্যক্তির তুলনায় দ্বিতীয় কর্তাব্যক্তি প্রায় দ্বিগুণ টাকা উত্তোলন করায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিসি পদে যোগ দেন। যোগদানের পর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি টিএ/ডিএ ও আনুষঙ্গিক বিল, জ্বালানি ও গাড়ি মেরামত বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৩ লাখ ২৯ হাজার ৭১৩ টাকা তুলেছেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান যোগ দেন ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। এরই মধ্যে তিনি উত্তোলন করেছেন ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪৫ টাকা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র পরিবহননির্ভর ক্যাম্পাস। তবে প্রশাসনের এরকম হরিলুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন খাত ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। এ ছাড়া উপ-উপাচার্য শাহিনুর রহমান কুষ্টিয়া শহরে অবস্থিত ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি মেরামত বাবদ মোট ২ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তোলন করেছেন। সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে এ টাকা উপ-উপাচার্য তোলেন বলে নথিতে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া চাহিদাপত্র (রিকুইজেশন) দিয়েও তিনি মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. মামুনুর রহমানের গাড়ি ব্যবহারের কোনো হিসাব নেই। মাদ্রাসা পরিদর্শন, দাওয়াতসহ ব্যক্তিগত কাজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করেন। এর কোনো বিল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অহরহ ক্যাম্পাসের গাড়ি ব্যবহার করেন। কোনো কারণে গাড়ি না পেলে ক্যাম্পাসে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন তারা। এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নামে এ রকম বিল হতেই পারে না। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আর আমার নামে কেউ রিকুইজিশন নিলে সেখানে আমার স্বাক্ষর থাকতে হবে। বাড়ি মেরামতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু টাকা নিয়েছি। প্রো-ভিসি হিসেবে মেয়াদ শেষ হলে এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ফেরত পাবে।  

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘পরিবহন অফিস যে নথি দিয়েছে সেটি তারা জ্বালানি ব্যবহারের ওপর হিসাব-নিকাশ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই ।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর