শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

স্কুলমাঠে হাট, বিপাকে শিক্ষার্থী

ইজারাদার যুবলীগের এমদাদ আলী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছীর কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বোঝার উপায় নেই এটি স্কুল। স্কুলের চারপাশ ঘিরে সবজির হাট। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা ও পাইকারদের আনাগোনা। হৈচৈ, ট্রাক আর ভটভটির শব্দ। স্কুলে প্রবেশের পথটিও ফাঁকা নেই। সবখানেই সবজির স্তূপ। এরই মধ্যে ক্লাস করতে হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের দরজা-জানালা বন্ধ করে ক্লাসে বসা ছাড়া উপায় নেই। বাইরে বের হতে পারে না তারা। খেলাধুলা আর স্কুল অ্যাসেম্বলিও হয় না। পুরো খেলার মাঠ আর স্কুলের বারান্দা পর্যন্ত দখলে সবজি বিক্রেতাদের। ফলে কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এরই মধ্যে স্কুলে প্রবেশের পথে ট্রাকের ধাক্কায় মাথাও ফেটেছে কয়েকজন শিক্ষার্থীর।

জানা গেছে, স্কুল মাঠটি উপজেলা প্রশাসন ইজারা দেওয়ায় সবজি বিক্রেতাদের কথাই মেনে চলতে হয়। শিক্ষকরাও এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করতে ভয় পান। ফলে হাটের মধ্যেই কোনো রকম পাঠদান চুকিয়ে বাড়ি ফেরে তারা। বছরের পর বছর এ অবস্থা চলে আসছে। অন্য সময়ের চেয়ে শীত মৌসুমে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দাপাদাপি বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, সবজি বিক্রেতারা স্কুলের ক্লাসরুমের চারপাশে মলমূত্র ত্যাগ করেন। ফলে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। তারা স্কুলের মাঠ ব্যবহার করতে পারে না। শিক্ষকরাও চুপচাপ থাকেন। ছাত্ররা জানায়, দুই মাস আগে স্কুলে প্রবেশের সময় মাসুদ রানা নামের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের মাথা ফেটে যায় সবজির ট্রাকের ধাক্কায়। প্রভাবশালী ইজারাদারদের ভয়ে অভিভাবকরাও প্রতিবাদ করতে পারেন না। স্কুলে বর্তমানে ৩৩৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও দিনে দিনে তা কমছে। অনেকে দুর্ভোগ আর ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা বন্ধ রেখেছে।

স্থানীয়রা জানান, স্কুল মাঠ ইজারা নিয়ে যুবলীগ নেতা এমদাদ আলী সেটি পরিচালনা করছেন। যুবলীগের এ নেতা জানান, প্রতিবছর খেলার মাঠ ইজারা নিয়ে তিনি সবজির বাজার বসান। এখান থেকে পাইকাররা সবজি ট্রাকে করে নিয়ে যায়। এতে  পাঠদান তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় না দাবি করে তিনি আরও বলেন, সবজি বিক্রেতা ও ক্রেতারা নয়, শিক্ষার্থীরা মলমূত্র ফেলে পরিবেশ নষ্ট করে। স্থানীয় বড়গাছি ইউপি চেয়ারম্যান  সোহেল  রানা জানান,  একাধিকবার স্কুলশিক্ষকদের এ বিষয়ে আবেদন করতে বলেছেন। অভিযোগ করা হলে উপজেলা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঁচাবাজার  আগে  অন্যস্থানে  বসত। কয়েক বছর ধরে স্কুলের মাঠে বসানো হচ্ছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর