সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মিথ্যা ঘোষণায় কাগজ আমদানিতে৩৮ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি

শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধার অপব্যবহার থামছে না

রুহুল আমিন রাসেল

শুল্কমুক্ত বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার অপব্যবহার করে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা কাগজ খোলাবাজারে বিক্রির মাধ্যমে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মেসার্স ফেডারেল করপোরেশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পে ব্যবহূতব্য এক্সেসরিজ উপকরণ হিসেবে আসা কাগজ পণ্য-ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট কার্ড, কার্ড বোর্ড, প্রিন্টিং ইঙ্ক ইত্যাদি খোলাবাজারে বিক্রি করে এ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এই তথ্য উদঘাটন করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গতকাল মামলা করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফেডারেল করপোরেশন লিমিটেডের অনিয়ম ও শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে রাজস্ব ফাঁকির প্রায় ৩৮ কোটি টাকা আদায় ও শুল্ক আইনের আওতায় সংঘটিত অপরাধের কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে শুল্ক গোয়েন্দা।

জানা গেছে, মেসার্স ফেডারেল করপোরেশন লিমিটেড শুল্ক আইন লঙ্ঘন করে পোশাকশিল্পে ব্যবহূতব্য এক্সেসরিজ উপকরণ হিসেবে ৬৫ কোটি ৯১ লাখ ৪ হাজার ৯৬৭ টাকার শুল্কায়নযোগ্য কাঁচামাল বা কাগজ পণ্য আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করেছে। ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ ৩ হাজার ৭৩৩ দশমিক ৪৩ টাকা। বন্ড সুবিধাভোগী পোশাকশিল্পের রপ্তানি পণ্যে ব্যবহূত এক্সেসরিজ উত্পাদনকারী এই প্রতিষ্ঠানটির বন্ড লাইসেন্স নম্বর ৭৪৯/কাস-পিবিডব্লিউ/২০১১ তাং- ১৪/১১/২০১১। একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুল্ক গোয়েন্দা তদন্ত দল গঠন করে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের রাজস্ব ফাঁকির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শুল্ক গোয়েন্দার তদন্ত দল মেসার্স ফেডারেল করপোরেশন লিমিটেডের বন্ড রেজিস্ট্রারের কপি ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে  চাওয়া হলে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট তা সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৩ মে পর্যন্ত বন্ড রেজিস্ট্রার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র লিয়েন ব্যাংক (উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড) তদন্ত দলকে জানায়, ফেডারেল করপোরেশন মোট ২০৭টি এলসির মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানি তথ্য সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে ১৪৯টি চালানের মাধ্যমে মোট আমদানি করা ডুপ্লেক্স বোর্ড তাদের বন্ড রেজিস্ট্রারে অপ্রদর্শিত রয়েছে। এর মোট ইনভয়েজ মূল্য ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৭ দশমিক ৭৮ মার্কিন ডলার এবং শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৪১ কোটি ৫৫ লাখ ৩০ হাজার ৬৪২ দশমিক ৫ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর