শিরোনাম
বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

হাতিরঝিলের আদলেই বুড়িগঙ্গা

রফিকুল ইসলাম রনি

হাতিরঝিলের আদলেই বুড়িগঙ্গা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও বিএমডিএফের আর্থিক সহায়তায় রাজধানীর দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের আদলে সাজানো হচ্ছে বুড়িগঙ্গার দুই তীর। ইতিমধ্যে ‘ঢাকা ইনটিগ্রেটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্মার্ট সিটি ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ নামে এ প্রকল্পটির মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে হাজারীবাগ থেকে পাগলা পর্যন্ত আধুনিকায়ন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাবুবাজার ব্রিজ থেকে সদরঘাট পর্যন্ত করা হবে। আগামী নভেম্বরের শেষের দিকে কাজ শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)-এর উদ্যোগে ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও বাংলাদেশ মিউনিফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ)-এর ২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তায় এ প্রকল্পটি হাতিরঝিলের আদলেই বুড়িগঙ্গার প্রাণ ফিরিয়ে আনা হবে। এতে নদীর স্বাভাবিক গতি, নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ অবকাশ যাপনের জন্য বিলাসবহুল রিসোর্ট, হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে (চলাচলের রাস্তা), পার্ক, বসার স্থান, নদীঘাট, পর্যটকদের জন্য প্রমোদতরী, ভাসমান বিনোদন কেন্দ্র ও রেস্তোরাঁ, নদীর দুই পাশের প্রশস্ত সড়কে বাস সার্ভিস থাকবে। এতে করে নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। ইতিমধ্যে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে নদী সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধানদের সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ৬ জুন ডিএসসিসি ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নভেম্বরের শেষের দিকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাবুবাজার ব্রিজ থেকে সদরঘাট পর্যন্ত কাজ শুরু হবে। এই পাইলট প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে ২০১৭ সালের শেষ দিকে হাজারীবাগ থেকে পাগলা পর্যন্ত পুরো কাজ শুরু করা হবে। এখন চলছে নকশা প্রণয়নের কাজ। নকশা প্রণয়নে কনসালট্যান্টের কাজ চলছে। 

দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানিয়েছেন, বুড়িগঙ্গা এখন সবচেয়ে বেশি দূষিত নদী। আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনায় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হাতিরঝিলের মতো বুড়িগঙ্গাতেও মানুষ পরিবার    পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসবেন। সূত্র জানায়, বুড়িঙ্গার তীর ধরে হাজারীবাগ থেকে পাগলা পর্যন্ত মানুষ যাতে হেঁটে যেতে পারে, যেখানে থাকবে না কোনো বাধা, সেদিক বিবেচনা করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসসিসি। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে থাকবে বিনোদন কেন্দ্র, গ্রিন স্পেস, ঝলমলে বাতিসহ সব ধরনের নান্দনিক দৃশ্য। ঐতিহাসিক ভবনগুলোর ঐতিহ্য ও নদীর তীর রক্ষার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। যাতে সহজেই বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্থপনা থেকে নদী দেখা যায়। এ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বুড়িগঙ্গা নদীর পানি ফিল্টারিং-এর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যা সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও জাপানে রয়েছে। সে আদলেই বুড়িগঙ্গা নদীর দূষিত পানি আলাদা পুকুরে রাখা হবে। পর্যায়ক্রমে তিনটি পুকুর করে রাখা হবে। এতে পানি খাবার উপযোগী না হলে মাছ থাকতে পারবে। প্রথম পুকুরে দূষিত পানি ফিল্টারিং হয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুকুর হয়ে নদীতে যাবে। এতে বুড়িগঙ্গায় দূষিত পানি থাকবে না। এ সম্পর্কে ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে ও তার সৌন্দর্য ধরে রাখতে ডিএসসিসি বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। বুড়িগঙ্গার দুই পাড় ঘেঁষে থাকবে বিশেষ ধরনের সিরামিকের তৈরি ওয়াকওয়ে (চলাচলের রাস্তা)-সহ সব ধরনের বিনোদন সুবিধা। তবে এখনো এর ড্রইং ও ডিজাইন হয়নি। সবার সহযোগিতা পেলেই এ কাজগুলো করা সম্ভব বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, বুড়িগঙ্গার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে ডিএসসিসি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। যার কারণে বুড়িগঙ্গা হবে বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমীদের অভয়ারণ্য। যা হাতিরঝিল প্রকল্পের আদলে করা হবে। এর অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর