মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

তিন পা নিয়ে জন্ম নেওয়া চৈতি অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন পা নিয়ে জন্ম নেওয়া চৈতি অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে

চৈতির বয়স এখন মাত্র দুই বছর। আর দশটা স্বাভাবিক শিশুর মতো নয় তার বেড়ে ওঠা। কারণ চৈতির জন্ম হয়েছিল তিন পা নিয়ে। জন্মের পর চৈতির মা-বাবাকে চিকিৎসকরা জানান, তাদের কন্যার পায়ুপথ নেই, এমনকি তার মূত্রপথ আর দুই পায়ের মাঝ দিয়েই অতিরিক্ত আরেকটি পায়ের অবস্থান। এর কিছুদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় অস্ত্রোপচার করে চৈতির দেহের অতিরিক্ত পা-টি বাদ দেওয়া হয়। সে সময় শিশুটির জন্য কৃত্রিম পায়ুপথও তৈরি করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে ঢামেকের চিকিৎসকরা চৈতিকে আর উন্নত চিকিৎসা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। তারা জানান, শিশুটির চিকিৎসা দেশে করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে একটি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চৈতিকে নিয়ে আজ তার মা অস্ট্রেলিয়ায় রওয়ানা হচ্ছেন।

চৈতির মা-বাবা পেশায় পোশাক শ্রমিক। নিজেদের স্বল্প আয়ে মেয়ের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চৈতির অতিরিক্ত পা বাদ দেওয়া ও কৃত্রিম পায়ুপথ তৈরি হলেও এখনো তার অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। নিয়মিত চিকিৎসার অভাবে শিশুটির পায়ের অস্ত্রোপচারের স্থানে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। কৃত্রিম পায়ুপথেও ইনফেকশন দেখা দিয়েছে, তার মূত্র ধরে রাখার ক্ষমতাও লোপ পেতে শুরু করেছে। দৃষ্টিশক্তি এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। এই প্রতিবেদককে চৈতির মা-বাবা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিশুদের সাহায্যকারী সংস্থা ‘আঁচল ট্রাস্ট’ চৈতিকে সাহায্য করার জন্য তাদের পাশে দাঁড়ায়। পাঁচ মাস ধরে শিশুটির দেহের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার উন্নত চিকিৎসার সব প্রস্তুতি এখন সম্পন্ন। আঁচল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের সমন্বয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের একটি হাসপাতালে চৈতির চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে। মাহফুজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চৈতির চিকিৎসা করানো হবে। শিশুটির চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস, রোগী কল্যাণ সমিতি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমাদের সহায়তা করেছে।

সর্বশেষ খবর