শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

মানি লন্ডারিংয়ে ঝুঁকি বেড়েছে

ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটির তথ্য

মানিক মুনতাসির

দেশে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি কিছুটা বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে জঙ্গি হামলার ঘটনা তা-ই ইঙ্গিত করে। এসব ঘটনায় যারা অর্থায়ন করছে তাদের ধরার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিটকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ ছাড়া দেশ থেকে অর্থ পাচারের মাত্রাও বেড়েছে বলে মনে করে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধসংক্রান্ত ‘ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি’। বুধবার অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত এক সভায় অর্থ পাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, মানি লন্ডারিং, জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। এতে গত কয়েক বছরে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নে মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এপিজির ধূসর তালিকা (যা মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকি কমার ইঙ্গিত বহন করে) থেকে বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু গত কয়েক বছরে মানি লন্ডারিং ও অর্থ পাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আবারও এপিজির ধূসর তালিকায় পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে আগামী ৫-৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠেয় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশও অংশ নেবে। সম্মেলনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করছে সে অবস্থানও তুলে ধরা হবে। ওই সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবেই বুধবার ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি বৈঠক করেছে। এপিজির এ সম্মেলন ২৩-২৮ আগস্ট ঢাকায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর কোনো কারণ না দেখিয়ে তা বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ায় হয়। এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাকেও মানি লন্ডারিং হিসেবে আমলে নিয়েছে এপিজি। যদিও এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তুলনায় নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম ও ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) বেশি দায়ী করেছে এপিজি। ফলে আরসিবিসি ও ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে পুরো অর্থ ফেরত আনতে পারলে বাংলাদেশের ঝুঁকির মাত্রা অনেকটাই কমে আসবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ডগুলো সময়োপযোগী করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ-সংক্রান্ত ১১টি মানদণ্ডের মধ্যে মাত্র দুটিতে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাকি নয়টির মানদণ্ডকে আরও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট, আইন, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর