রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আলোচনায় সিলেটের সাত নেতা

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

আলোচনায় সিলেটের সাত নেতা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ২২ ও ২৩ অক্টোবর। ক্ষমতাসীন দলের এ সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন সাজসাজ রব। সম্মেলনের ঢেউ এসে লেগেছে সিলেটেও। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে কে আসছেন— এ নিয়ে সিলেটের নেতা-কর্মীদের রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। গুরুত্বপূর্ণ এ পদটিতে পুরনো মুখই থাকছেন, নাকি আসছেন নতুন কেউ— এ নিয়ে বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে বিস্তর জল্পনা-কল্পনা। সিলেট বিভাগের সাত নেতার নাম উচ্চারিত হচ্ছে বিভিন্ন আলোচনায়।

বর্তমানে আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে আছেন অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে এবার এ পদে ‘সম্ভাব্য’ হিসেবে আলোচনায় আছেন আরও ছয় নেতা। তারা হলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক আজিজুস সামাদ ডন, হবিগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী। এই সাত নেতার মধ্য থেকেই যে কেউ সাংগঠনিক সম্পাদক পদের দায়িত্ব পেতে পারেন বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া এসব নেতার মধ্য থেকে একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান করে নিতে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ দুই মেয়াদ ধরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন। সফলতা-ব্যর্থতার মিশেলে তিনি পার করছেন দুই মেয়াদ। এবারও তিনি এ পদে রয়েছেন আলোচনায়। তবে এবারের সম্মেলনে মিসবাহ সিরাজকে নতুন কোনো দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।

শফিকুর রহমান চৌধুরী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সংসদের সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করেছিলেন তিনি। ‘২৪ ঘণ্টার রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত শফিক চৌধুরীর জনপ্রিয়তা, দলে অবস্থান— এসব নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে দলের জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করেছেন। গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে সিলেট-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন শফিক চৌধুরী। ওয়ান-ইলেভেনে কারারুদ্ধ হওয়া এই নেতার দলের জন্য ত্যাগের কারণেই সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তুমুল আলোচনায় রয়েছেন তিনি। সিলেট বিভাগে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের জনপ্রিয়তা সবসময়ই তুঙ্গে। জনতার নেতা হিসেবে পরিচিত কামরান। টানা দুবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। কারাগারে থেকে তিনি দ্বিতীয়বার বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত সিটি নির্বাচনে পরাজিত হলেও দমে যাননি কামরান। বরং নতুন উদ্যমে সিলেট বিভাগের সর্বত্র দলের জন্য চষে বেড়িয়েছেন। গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। কামরানও তাই আছেন আলোচনায়। সুনামগঞ্জ জেলা থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন তিন নেতা। এর মধ্যে মুহিবুর রহমান মানিক ১৯৯০ সালে ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে পথচলা শুরু করেন। এরপর ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনে হয়েছেন সংসদ সদস্য। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মানিকের রয়েছেন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। ওয়ান-ইলেভেনে কারারুদ্ধ হওয়া এই নেতাও রয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক পদের আলোচনার ঝড়ে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আজিজুস সামাদ ডনও এবার সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। বাবার মৃত্যুর পর রাজনীতিতে সক্রিয় ডন ইতিমধ্যে সিলেটের রাজনীতিতে তৈরি করে নিয়েছেন নিজের গ্রহণযোগ্য অবস্থান। বর্তমানে কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক ডন এবার কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে চমক দেখাতে পারেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর দলের কোন্দল নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ করেন আবু জাহির। তার নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরাও চাঙ্গা হয়ে ওঠেন। এবার যোগ্য নেতৃত্বের পুরস্কার পেতে পারেন তিনি। গত জাতীয় নির্বাচনে ডা. মুশফিক বিএনপির সুজাত মিয়ার কাছে পরাজিত হন। তখন অনেকেই মনে করেছিলেন, এবার শেষ হয়ে যেতে পারে মুশফিকের রাজনীতি। কিন্তু দমে যাননি মুশফিক। শেখ হাসিনা তাকে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক করেন। জল্পনা আছে, দলের জন্য তার পরিশ্রমের ফল এবার কাউন্সিলে পেতে পারেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর