মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পাহাড়-উপকূলে অর্ধশতাধিক অবৈধ অস্ত্র কারখানা!

ক্রেতা চিংড়ি ঘের মালিক জলদস্যু

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এবং পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ অর্ধশতাধিক অস্ত্র তৈরির কারখানা। এসব কারখানায় তৈরি হওয়া অস্ত্রগুলো সড়ক ও নৌপথে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি অস্ত্র কারখানা আবিষ্কার করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী  (র‌্যাব)। র‌্যাব-৭ সহকারী অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এবং পাহাড়ি এলাকায় অনুকূল পরিবেশের কারণে গড়ে উঠেছে অস্ত্র কারখানা। এসব অস্ত্র কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে। এবছর অভিযান চালিয়ে তিনটি অস্ত্র কারখানা আবিষ্কার এবং বেশ কয়েকজন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, এক সময় শুধুমাত্র কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশীয় অস্ত্র তৈরি হলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টানা অভিযানের কারণে অনেকটা ভেঙে পড়ে সেই নেটওয়ার্ক। এখন মহেশখালীর চল্লিশের অধিক অস্ত্র কারখানার সেই মেকানিক বা কারিগররা চট্টগ্রামের বাঁশখালী, রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনীয়া, সন্দ্বীপ ও কক্সবাজারের চকোরিয়া, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় গড়ে তুলে অবৈধ অর্ধ শতাধিক অস্ত্র কারখানা। এসব কারখানায় ওয়ান শুটার, এসএসবিএল, ডিডিবিএল, থ্রি কোয়ার্টার ও এলজি তৈরি হয়। আবার কোনো কোনো অস্ত্র কারখানায় রাইফেলও তৈরি হচ্ছে। কারখানায় তৈরি হওয়া অস্ত্র সড়ক ও নৌপথে চলে যায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এসব কারখানায় তৈরি হওয়া অস্ত্রে খরচ পড়ে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। তবে তা বিক্রি হয় ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায়। আবার ক্ষেত্র বিশেষে এসব অস্ত্র এর চেয়ে বেশি দামেও বিক্রি হয়। বাঁশখালী, সন্দ্বীপ ও কক্সবাজারের কারখানায় তৈরি হওয়া অস্ত্রগুলোর মুল ক্রেতাই হচ্ছে চিংড়ি ঘের মালিক, জলদস্যু এবং ডাকাত দলের সদস্যরা। রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনীয়ার পাহাড়ি এলাকায় তৈরি হওয়া অস্ত্রগুলোর অন্যতম ক্রেতা ছিনতাইকারী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। 

এ প্রসঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি ঘের দখল-বেদখলের ঘটনায় প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। মূলত নিজেদের চিংড়ি ঘেরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক মালিকই অস্ত্র কিনেন। চিংড়ি ঘেরের মালিকদের অত্যাধিক অস্ত্র কেনার প্রবণতা এবং উপকূলীয় এলাকা থেকে জলদস্যুরা অস্ত্র কেনায় -এসব অবৈধ অস্ত্র কারখানা গড়ে উঠেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর