সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না : খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গোপন জরিপে একাদশ নির্বাচনের পরিণতি জেনে গিয়ে সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল এক ইফতার মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। গুলশানের ‘ইমান্যুয়েল সেন্টারে’ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল হয়। খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা (সরকার) চায় না বিএনপি নির্বাচনে আসুক। বিএনপি নির্বাচনে আসলে তাদের  যে কী পরিণতি হবে, তারা গোপন খবর নিয়ে জেনে গেছে। তাদের অবস্থান কত নিচে, সেটাও তারা বুঝে গেছে। সেজন্যই তারা নানাভাবে হয়রানি করছে যাতে বিএনপি নির্বাচনে না আসে। বিএনপির লোকজনকে কীভাবে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যায়। আমি সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, বিএনপিকে বাদ দিয়ে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। এদেশে নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে, হাসিনার অধীনে নয়।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন বাংলাদেশে আর হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এদেশে নির্বাচন হবেই হবে। তবে সেটা হবে সহায়ক সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। আমরা চাই, সব রাজনৈতিক দল অংশ গ্রহণ করে একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হোক।’ ব্রিটেনে সদ্য সমাপ্ত সাধারণ নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন ব্রিটেনে নির্বাচন হয়ে গেছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে)  তো ভয় পাননি, তিনি নির্বাচন দিয়েছেন। অথচ তিনি এবার কিছু কম পেয়েছেন সিট। তারপরও তিনি সাহস করে দিয়েছেন। সেইভাবে আজকে আওয়ামী লীগের যদি সামান্যতম সাহস থাকে। কেন তারা ভোটে হেরে যাবে এটা নয়। কত অপকর্ম তারা ১০ বছরে করেছে এর হিসাব বিএনপি যদি ছেড়েও দেয়, জনগণের কাছে প্রতিটি জিনিসের হিসাব আছে।’ আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘কয়েকটা মাস আছে। যত পারেন লুটে নেন। আপনাদের জেনারেল সেক্রেটারি (ওবায়দুল কাদের) যেভাবে বলছেন যা পারেন লুটে নেন। বিদেশে যান না হলে আর বেশি সময় পাবেন না। এখন সময় চলে যাওয়ার। ২০১৮ সাল দেশের জনগণের বছর হবে, গণতন্ত্রের বছর হবে, উন্নয়নের বছর হবে, শান্তির বছর হবে।’ ক্ষমতাসীন দলের লুটপাট-দুর্নীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই ১০ বছরে তারা যত লুট করেছে, যত খেয়েছে। তাদের একেক জনের এত ওজন বেড়েছে যে, গাড়িও তাদের টানতে পারবে কিনা জানি না। এরা জানে নির্বাচন করা তো দূরের কথা, তারা পালানোর সময় তো পাবে না, এরা বেরোতে পারবে না। সেজন্য তারা একতরফা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজে স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সব জায়গায় যাচ্ছেন।

নৌকা প্রতীকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা (সরকার) জানে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কী পরিণতি হতে পারে। সেজন্য বিএনপির জনপ্রিয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

‘ভিশন ২০৩০’ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলে এটা নাকি তাদের থেকে নিয়েছি। এ রকম ভিশন তাদের নেই, তাদের আছে চুরির চিন্তা। আমাদের ভিশনের চুরির কোনো কথা নেই। কাজেই তাদের ভিশন আর আমাদের ভিশন এক হতে পারে না, আমাদের চিন্তা ও ওদের চিন্তা এক হতে পারে না।’ মুক্তিযোদ্ধা সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

মূল মঞ্চে এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানসহ প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া। এ ছাড়াও ইফতারে অংশ নেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল আলম চৌধুরী, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সুজাউদ্দিন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর