বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

নরসিংদীর এনকেএম হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের ধারাবাহিক সাফল্য

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের সাফল্যের পর এবার জেএসসি ও পিইসি পরীক্ষায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে এন কে এম হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস। বিদ্যালয়টি শতভাগ জিপিএ-৫ অর্জন করে জেলার শ্রেষ্ঠ স্থান অর্জন করেছে। র‍্যাংর্কিংয়ের দিক থেকে ঢাকা বোর্ডে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এ অর্জনে উচ্ছ্বাসিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস চলছে স্কুল ক্যাম্পাস জুড়ে। কঠোর শৃঙ্খলা, শ্রেণিকক্ষের নিয়মিত পাঠদান, রুটিং পরীক্ষা, হোম ভিজিটসহ নিবির পরিচর্যার ফলেই ধারাবাহিক এ সাফল্য মিলেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মফস্বল শহরে বিদ্যালয়টি এখন নরসিংদীর অহংকার।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নরসিংদী পৌর শহরের ভেলানগর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় এন কে এম হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস। ২০১৩ সালে ৭৭ পরীক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করে। এরপর থেকে স্কুলটিকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিষ্ঠার পর লাগাতার ছয়বার পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করে বিদ্যালয়টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ১৬তম ও ২০১৪ সালে ১৪তম স্থান লাভ করে। ২০১৫ সালে এসএসসি-তে বিদ্যালয়টি ঢাকা বোর্ডে দশম স্থান অর্জন করে। এ বছর বিদ্যালয় থেকে ২০২ জন পরীক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ২০০ শিক্ষার্থী ‘এ+’ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। বাকি দুজন ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। একই সঙ্গে এ বছর স্কুল থেকে ১২৫ জন শিক্ষার্থী পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১২৫ জনই ‘এ+’ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। থ্যার্মেক্স গ্রুপের এমডি ও নরসিংদী এন কে এম হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস-এর পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, এই সাফল্য আমার একার নয়। এতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নিরলস চেষ্টা রয়েছে। এর ফলে আমাদের ধারাবাহিক এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এই সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবদুল কাদির মোল্লার। যিনি সব সময় নিবিড়ভাবে প্রতিষ্ঠানটির তদারকি করেন। কোনো জায়গায় সমস্যা থাকলে তাত্ক্ষণিক সমাধান দেন। এখানেই শেষ নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি তদারকিতে থাকেন। তার উপযোগী দিক নির্দেশনার কারণেই প্রতিষ্ঠানটি উত্তরোত্তর ভালো ফলাফল করছে। তিনি বলেন, শ্রেণি কক্ষে শতভাগ শিক্ষাদান নিশ্চিত করা হচ্ছে আমাদের প্রধান কাজ। সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের তদারকি করা হয়। তাছাড়া একজন শিক্ষক তার শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের কী পড়াল— তা অপর একজন শিক্ষক প্রতি সপ্তাহে তদারকির পর রিপোর্ট পেশ করতে হয়। বিদ্যালয়ের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন ৬০ জন শিক্ষক। শিক্ষক গাফফার ফকির জানান, শ্রেণিকক্ষে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হয়। প্রতিটি অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বছরে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষা ছাড়াও আরও প্রয়োজনীয় সংখ্যক মডেল টেস্ট/ক্লাস টেস্ট নেওয়া হয়।

একই সঙ্গে শিক্ষকরা যেখানেই পরীক্ষার প্রয়োজন অনুভব করেন সেখানেই পরীক্ষা নেওয়া হয়।

জানা গেছে, পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি এখানে সহশিক্ষা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি রয়েছে। সেখানে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ, সায়েন্স ফিকশন ও গোয়েন্দা গল্প বা উপন্যাস রয়েছে।

সর্বশেষ খবর