শিরোনাম
বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
স্বাস্থ্য বার্তা

কীভাবে শতায়ু হবেন

প্রতিদিন ডেস্ক

কীভাবে শতায়ু হবেন

দীর্ঘজীবন লাভের আকাঙ্ক্ষা মানুষের চিরায়ত। নিরোগ শতায়ু লাভের উপায় বাতলে অনেকেই ইতিমধ্যে খ্যাতি পেয়েছেন। তেমনি একজন যুক্তরাজ্যের সুপরিচিত চিকিৎসক ডা. ডন হারপার। মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করে তিনি বেশ জনপ্রিয়। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান দর্শকদের কাছে বিপুল প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি ‘১০১ বছর সুস্থ হয়ে বাঁচুন’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন। বিবিসির প্রতিবেদন অবলম্বনে নিরোগ দেহে দীর্ঘ আয়ু লাভের জন্য এখানে তার দেওয়া সাতটি টিপস তুলে ধরা হলো—

১. ঠিকমতো ঘুমান : রাতে ঠিক কতটুকু সময় ঘুমাচ্ছেন এবং সেই ঘুম কেমন হচ্ছে সে বিষয়টি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি ঘুম যেমন খারাপ তেমনি অল্প ঘুমও খারাপ। ডা. হারপার বলেছেন, এই কারণে পরিমাণ মতো ঘুমাতে হবে। যারা অল্প ঘুমিয়ে বড়াই করে বলছেন ‘আমার তো কিছু হচ্ছে না’ তারা বুঝতে পারছেন না সেই দিনগুলো সামনে অপেক্ষা করছে। একেক জনের জন্য ঘুমের প্রয়োজন একেক রকম। যেটুকু ঘুম আপনার ক্লান্তি দূর করে নতুন করে দিনটা শুরু করতে সাহায্য করে সেটাই আপনার পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম ঘুম চোখে কাজে গেলে কিছুই ঠিকমতো হবে না। এটা শরীর ও মনের উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে ফোনের ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ দিয়ে নেওয়ার মতো।

২. হাঁটাচলা করুন : আমরা অনেকেই প্রচুর সময় বসে  কাটাই। এটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো নয়। সুসংবাদ হচ্ছে, এ জন্য আমাদের ম্যারাথন রানার হতে হবে না। যেটা করতে হবে সেটা হলো শরীরটাকে একটু নাড়ানো- মানে হাঁটাচলা করা। হারপার তার বই লিখতে গিয়ে এরকম বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা এক শতাব্দীকাল ধরে বেঁচে আছেন।

 তিনি দেখেছেন, তাদের সবার মধ্যেই একটি জিনিসের মিল আছে। সেটা হলো, তারা প্রচুর হেঁটেছেন।

৩. লিভারকে বিশ্রাম দিন : যাদের মদ্যপানের অভ্যাস আছে তাদের কাছে বিষয়টা খুব আনন্দের। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, এটাকে নেশায় পরিণত করা মানেই বিপদ। তিনি বলেন, আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিতে হবে। পরিবর্তে যত খুশি পানি পান করুন। কিন্তু লিভারের জন্য চাপ সৃষ্টিকারী পানীয় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

৪. নিজের জিন সম্পর্কে জানুন : বিশেষ কোনো অসুখে পড়ার প্রবণতা হয়তো আপনার মধ্যে বেশি থাকতে পারে। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, আপনার পরিবারের বা বংশের অন্যান্য সদস্যদের অসুখ-বিসুখের ইতিহাস জানা থাকলে সেটা আমাদের সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপন করতে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, জিন শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোনো কোনো জিনের কারণে আমরা বিশেষ একটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। বংশের কারও কোনো রোগ হয়েছিল কিংবা কোনো রোগে কার মৃত্যু হয়েছিল সেটা মাথায় রাখা উচিত। একই ধরনের রোগ যদি নিজের কাছে আসে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. কার্বোহাইড্রেট সচেতনতা জরুরি : ভাত ও রুটির মতো কার্ব পরিহার করা আজকালকার দিনে হয়তো একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, ব্যালেন্সড ডায়েটের জন্য আমাদের এসবও খেতে হবে। তবে এখানেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় রিফাইন বা মসৃণ কার্ব না খেয়ে বরং একটু জটিল ধরনের (মোটা আটার) কার্ব খাওয়ার কথা বলব। যেমন বাদামি চাল, আস্ত শস্যদানা সমেত মোটা আটার রুটি ইত্যাদি।

৬. প্রতিদিন হাসুন : সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত আনন্দের-এটা মনে রাখতে হবে। এটাকে দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজের অংশ হিসেবে দেখলে হবে না। এখানে মানসিকতার একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। বইটি লিখতে গিয়ে গবেষণা করার সময় তিনি একজন বিজ্ঞানীর করা একটি গবেষণা খুঁজে পেয়েছেন, যেখানে দীর্ঘ আয়ুর সঙ্গে হাসিখুশি থাকার একটা সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, এমন কিছু করুন যা প্রতিদিন আপনাকে হাসিখুশি রাখবে।

৭. চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন : আমাদের অনেকেই নানা রকমের চাপের মধ্যে থাকি বা মানসিক চাপে ভোগী। এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর। সেটা শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে। তাই চাপ থেকে কীভাবে মুক্ত থাকা যায় তার উপায় প্রত্যেককে আলাদাভাবে খুঁজে নিতে হবে। এ জন্য একজন চিকিৎসক কিংবা এ সংক্রান্ত অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর