বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
পাহাড়ধস রোধ

পাঁচ জেলাকে আট বার্তা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ধস থেকে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জেলাকে আটটি বার্তা দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার। একই সঙ্গে পাহাড় ধসের বিপর্যয় ঠেকাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এ ব্যাপারে  জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। জেলা পাঁচটি হলো- চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি।  

আট নির্দেশনার মধ্যে আছে- আসন্ন বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই পাহাড়ের পাদদেশ ও ঢালে বসবাসকারীদের অস্থায়ীভাবে অন্যত্র আশ্রয়ের ব্যবস্থা, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরানোর পাশাপাশি নতুন করে বসতি এবং ব্যবসায়িক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করা, পাহাড় কাটা ও ধসের সঙ্গে যে সব প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে যে কোনো মূল্যে পাহাড় কাটা বন্ধ করা, পাহাড় কাটার কুফল সম্পর্কে পাহাড়ি এলাকার জনগণকে সচেতন করা, পাহাড় কাটা বিষয়ক মামলা রুজু, তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠু এবং দ্রুততর করার জন্য পরিবেশ অধিদফতরকে অবগত করা, ইতিমধ্যে যে সব পাহাড়ের পাদদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে গাইড ওয়াল, পানি নিষ্কাশন ড্রেন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পাহাড়ের ক্ষয়রোধ করা এবং গভীর শেকড়যুক্ত বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করা।   

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রতিবছরই এ পাঁচটি জেলায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণহানি যেমন হয় তেমনি মানুষের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, বাজার, বিদ্যালয় এবং তীর্থস্থান সমূহের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে এই আশঙ্কা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। গত বছর ১২-১৪ জুন মৌসুমী বায়ু ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে ভারী বর্ষণে ১৭২ জনের প্রাণহানি এবং ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এ বছর আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ  নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কোন জেলায় কোন কোন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে তাও জানাতে বলেছি।’ 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রক্ষায় ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী ‘চট্টগ্রাম জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাস, পাহাড় কর্তন ও করণীয় সম্পর্কে রূপরেখা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনার বরাবর প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনে পাহাড় রক্ষায় ১০টি সুপারিশও করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়-  ‘চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় ৫০০ পাহাড় আছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ঝুঁকিপূর্ণ ২৮টি পাহাড় আছে। এ সব পাহাড়ে ৬৮৪ পরিবার বসবাস করছে।’  অভিযোগ আছে, পাহাড় রক্ষায় নানা উদ্যোগ, বৈঠক, সুপারিশ থাকলেও কোনো কিছুই বাস্তবায়ন হয় না। ফলে অভিযুক্তরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তদুপরি পাহাড় কাটার সঙ্গে প্রভাবশালী মহল যুক্ত থাকায় প্রশাসনও এগিয়ে আসে না। ফলে রুটিন ওয়ার্কের মতো পাহাড় রক্ষায় উদ্যোগ ও সুপারিশ থাকলেও তা আলোর মুখ দেখে না।  

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর