বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

শোভাযাত্রা আলোচনায় মে দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই, সোনার বাংলা গড়তে চাই’, এ প্রতিপাদ্য ধারণ করে গত মঙ্গলবার ১ মে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে মহান মে দিবস। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠ।

দিনটি ছিল সরকারি ছুটি। মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দেন। শ্রমিক অধিকার রক্ষায় দেশের সব গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার, সংবাদপত্রে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। মে দিবস পালন উপলক্ষে সকালে রাজধানীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করে। দৈনিক বাংলা মোড়ের শ্রম ভবন এলাকা থেকে র‌্যালিটি বের হয়। র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় শ্রমিক লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মে দিবসে শ্রমিক দলকে শোভাযাত্রা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, কেন আমরা অনুষ্ঠান করতে পারলাম না, সেটা আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নকে জানাব।

জাতীয় শ্রমিক পার্টি বিকালে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ। জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি এ কে এম আশরাফুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বেগম রওশন এরশাদ, জাপার মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমুখ।

রাজধানীর গুলিস্তানে জাসদ কার্যালয়ের সামনে জাতীয় শ্রমিক জোট আয়োজিত এক সমাবেশে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা দাবির প্রতি সমর্থন জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, আমরা কারখানা রক্ষা করতে চাই, শ্রমিকদেরও হাসিমুখে রাখতে চাই।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। ইউনিয়নের কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি আবু জাফর সূর্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ওমর ফারুক, সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইয়া, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাবেক সভাপতি শাবান মাহমুদ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজারের দাবিতে সমাবেশ করে ১৪টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। সমাবেশে অংশ নিয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুকুর মাহমুদ বলেন, আমরা মনে করি বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা হওয়ার দরকার। এর চেয়ে কম অর্থ দিয়ে একটি পরিবারের ভরণ-পোষণ সম্ভব নয়। তাই সরকার শ্রমিকদের এই দাবি মেনে নেবে বলে আমরা আশা করি। জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন শ্রমিক সমাবেশ করে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ আলী আকনের সভাপতিত্বে এবং যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এইচ এম সিদ্দিকুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এ টি এম হেমায়েত উদ্দিন, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সহসভাপতি আলহাজ আবদুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক, চন্দ্রদ্বীপ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, ঢাকা মহানগরী প্রাইভেট কার ও ট্যাক্সি ক্যাব ড্রাইভার্স ইউনিয়ন, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, দি সিটি ব্যাংক কর্মচারী পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী মোটরচালক লীগ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, ট্যানারি ওয়ার্কার্স, ইউনিয়ন, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, জাগো বাংলাদেশ শিশু কিশোর ফেডারেশন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরাম, লেবার রাইটস সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, কারিতাস সেইফ প্রকল্প, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতিওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নিজ নিজ ব্যানারে দিবসটি উপলক্ষে সমাবেশ ও র‌্যালির আয়োজন করে।

সর্বশেষ খবর