শনিবার, ২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিজিটাল হলো সিলেট সিটি করপোরেশন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ডিজিটাল হলো সিলেট সিটি করপোরেশন

পানির বিল বা হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য এখন আর নগর ভবনে ছোটাছুটি নয়। বিল দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতর বা ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনেও প্রয়োজন পড়বে না দাঁড়ানোর। হাতের অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়েই পরিশোধ করা যাবে সব বিল। শুধু তাই নয়, যে কোনো নাগরিক সেবার আবেদন বা অভিযোগ করা যাবে এখন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্দিষ্ট অ্যাপ দিয়ে। জানা যাবে আবেদন ও অভিযোগের সর্বশেষ অবস্থা। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে সিসিকের এই ডিজিটাল কার্যক্রম। এতে নাগরিক বিড়ম্বনা কমার পাশাপাশি নগর ভবনের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সিলেটকে ডিজিটাল নগর হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। দায়িত্ব নেওয়ার পর কাজ শুরু করলেও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারান্তরীণ হওয়ায় সে উদ্যোগ থমকে দাঁড়ায়। প্রায় আড়াই বছর পর কারামুক্তি পেয়ে তিনি আবারও শুরু করেন ডিজিটাল নগরের কার্যক্রম। তার সেই কার্যক্রম বৃহস্পতিবার নাগরিক সেবা হিসেবে দৃশ্যমান হয়। বৃহস্পতিবার নগরের একটি হোটেলের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ‘সিলেট সিটিজেন’ নামে একটি অ্যাপ্স। রিকার?্শন টেকনোলজিস লিমিটেড নামক একটি আইটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সিটি করপোরেশনকে তৈরি করে দিয়েছে অ্যাপ্সটি। রিকার্শন টেকনোলজিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আকিকুর রহমান চৌধুরী জানান, অ্যাপসটির মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো ব্যক্তি সিলেট সিটি করপোরেশনের পানির বিল, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ যে কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করতে পারবেন। একই সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, ইমারত নির্মাণ, পানির লাইনসহ যে কোনো সেবার আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া যে কোনো নাগরিক বিড়ম্বনার ব্যাপারে ছবিসহ অভিযোগ করা যাবে অ্যাপ্সটি ব্যবহার করে। অ্যাপেসর মাধ্যমে আবেদন ও অভিযোগের সর্বশেষ অবস্থাও জানা যাবে।

সিটি করপোরেশনের ইলেকট্রিক ও আইসিটি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আলম জানান, নগর ভবনের সেবা নিয়ে অনেকেই মাঝেমধ্যে অভিযোগ তোলেন।

 ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম চালু হওয়ায় এখন থেকে নগরবাসীর বিড়ম্বনা কমবে। তারা দিনরাত যে কোনো সময় ঘরে বসেই নগর ভবনের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া চালু হওয়া অ্যাপ্সটিতে গ্রাহকের সব ধরনের সেবা গ্রহণের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। এখন থেকে গ্রাহকদের কোনো কাগুজে ডকুমেন্ট সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়বে না।

ডিজিটাল সেবার কার্যক্রম প্রবাসীরাও গ্রহণ করতে পারবেন। অ্যাপ্সটি ব্যবহার করে তারা বিদেশে বসে তাদের বাসার বকেয়া বিল সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানতে পারবেন। ইচ্ছা করলে তারা মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ড ব্যবহার করে বকেয়া বিলও পরিশোধ করতে পারবেন বলে জানান সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়র জানান, অনেক প্রবাসী বাসায় কেয়ারটেকার রেখে যান। দেশে ফিরে দেখেন সিটি করপোরেশনের মোটা অঙ্কের বিল বকেয়া পড়ে আছে। এখন থেকে তারা বিদেশে থেকে বিল পরিশোধ করতে পারবেন। কোনো প্রবাসী সিলেট নগরের ভিতরে বাসা-বাড়ি বা যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করতে চাইলে তারা অনলাইনে অনুমতি নেওয়ার সুযোগ পাবেন। মেয়র বলেন, ডিজিটাল সেবা গ্রহণের ব্যাপারে নগরবাসীর কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে এই সেবার পরিধি আরও বাড়ানো হবে। ভবিষ্যতে নগর ভবনের পুরো কার্যক্রম ‘পেপারলেস’ করা সম্ভব হবে। এতে সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি নগরবাসীর সময় বাঁচবে ও বিড়ম্বনা কমবে।

সর্বশেষ খবর