শনিবার, ২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে অটোরিকশা সংকটে ‘পোয়াবারো’ চালকদের

রমজানে চরম ভোগান্তি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত অটোরিকশা ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কিন্তু এখন চালকরা দাবি করেন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। চেরাগী মোড় থেকে আগ্রাবাদ বাদামতল মোড় ভাড়া ৮০ টাকা হলেও দাবি করেন ১২০ টাকা, কোতোয়ালি মোড় থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা হলেও দাবি করেন ১৫০ টাকা। চট্টগ্রামে অটোরিকশার সংকটকে পুঁজি করে অসাধু চালকরা এভাবে দ্বিগুণ পর্যন্ত ভাড়া দাবি করছেন। এ নিয়ে পুলিশ, বিআরটিএ, মালিক সমিতি এবং চালক সমিতির মধ্যে কোনো মাথাব্যথা নেই। ফলে পোয়াবারো হয়েছে চালকদের। রমজানে এ ভোগান্তি এখন চরম আকার ধারণ করেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, নগরে এমনিতেই গণপরিবহন সংকট। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অটোরিকশার সংকট। এ সংকটকে পুঁজি করে অটোরিকশার চালকদের কাছে যাত্রীরা এখন জিম্মি। জানা যায়, নতুন অটোরিকশা নিবন্ধন বন্ধ থাকায় নানা সংকট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বেকার চালক আছে প্রায় আট হাজার, উপজেলার অটোরিকশাগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫০০ গাড়ি গ্রিল লাগিয়ে নগরে চলাচল করছে। নম্বরহীন এসব গাড়ি ব্যবহার করে ছিনতাই-সন্ত্রাসীসহ নানা অশুভ কার্যকলাপ সংঘটিত হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় নগরে এসব গাড়ি চলাচল করছে বলে অভিযোগ আছে। তাছাড়া নগরে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গ্যারেজ আছে। প্রতিটি গ্যারেজে প্রতিদিন সকালে ৩০-৩৫ জন চালক অপেক্ষায় থাকেন বদলি গাড়ি চালানোর জন্য।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম নগর সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল হোসেন বলেন, ‘সরকার নতুন করে অটোরিকশা নিবন্ধন দিচ্ছে না। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িগুলোর নম্বর পরিবর্তন করে প্রতিস্থাপন করার প্রক্রিয়াটি মামলার কারণে স্থগিত হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে এখন আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’

চট্টগ্রাম মহানগর অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে নগরে অটোরিকশা নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে। ফলে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার চালক বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। এমতাস্থায় নতুন করে অটোরিকশা নিবন্ধন দিলে তাদের বেকারত্ব ঘুচবে।’ তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা আছে চার হাজার নতুন অটোরিকশা নিবন্ধনের। এখন আমাদের দাবি, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার।’

বিআরটিএ ২০০৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরে চলাচলের জন্য ১৩ হাজার ‘চট্টমেট্রো’ অটোরিকশা নিবন্ধন দেয়। এরপর দীর্ঘ ১৪ বছর পর্যন্ত সরকার নগরে আর কোনো অটোরিকশা নিবন্ধন দেয়নি। ইতিমধ্যে দুই হাজারের বেশি অটোরিকশা নষ্ট হয়ে যায়। বাকি ১১ হাজার মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশা চরম ঝুঁকি নিয়ে সড়কে চলাচল করছে। বিআরটিএ মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িগুলো নষ্ট করে নতুন দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করলে ৪৯০টি গাড়ি ভাঙা হয় এবং ৪৫০টি নতুন গাড়ি সড়কে নামানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করা হলে প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর