বাংলাদেশ রোড টান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিরপুরের কার্যালয়ের বাইরের প্রধান সড়কজুড়ে গতকাল দুপুরে ছিল যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। মূলত গাড়ির কাগজপত্র ঠিক করাতে সেখানে সকাল থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল অসংখ্য প্রাইভেট কার, বাস, ট্রাক ও পি্কআপসহ অন্যান্য যানবাহন। সেবাপ্রদানের জন্য নির্ধারিত অফিস সময় বিকাল ৫ টা পর্যন্ত হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর নির্দেশনায় এখন রাত ৯টা পর্যন্ত গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কাজ করছে বিআরটিএ। তবে বাইরের এই গাড়িগুলোর ভিতরে পরীক্ষার জন্য প্রবেশের ক্ষেত্রে সিরিয়াল মেনে চলার কথা না মানা হচ্ছিল না। বিআরটিএর এই কার্যালয়ে সেবা গ্রহণ করতে আসা কয়েকজন বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে গতকাল অভিযোগ করেন, একটি সংঘবদ্ধ দল টাকা নিয়ে সিরিয়ালে থাকা পরের গাড়িকেও সামনে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। গতকাল সরেজমিন বিআরটিএ কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, কার্যালয়টির প্রবেশ ফটক পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই সেবা গ্রহীতাদের ওপর হামলে পড়ছে দালাল চক্র। তারা লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এড়িয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ করে দেওয়ার কথা বলে অবৈধভাবে অর্থ নিয়ে গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার কথা বলছিলেন। ধানমন্ডি থেকে এম ফাহাদ নামের এক ব্যবসাযী তার প্রাইভেট কারের ফিটনেস পরীক্ষা করাতে আসেন গতকাল। কথা হলে তিনি জানান, দালালদের উৎপাত এখানে খুব বেশি। আমি নিজে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে নিজেই ফি জমা করাতে চাইলেও দালালরা আমার কাছে এসে কাজ করে দেওয়ার জন্য কয়েকবার অনুরোধ করে। আরেকজন সেবাগ্রহীতা আশরাফ ইসলাম জানান, এক দালাল প্রথমে আমার কাছে ফিটনেস পরীক্ষা দ্রুত করে দেওয়ার কথা বলে ২ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু ‘যখন গাড়ি দেখে তখন সে বাড়তি আরও তিন চার হাজার টাকা দাবি করে!
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, অনেক গাড়ির মালিক নিজে বিআরটিএ কার্যালয়ে না এসে তার চালক বা অন্যদের পাঠিয়ে দিচেছন। এই কার্যালয়ে বিআরটিএর ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক (ইঞ্জি) মো. মাসুদ আলম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এরই মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন দালালকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ড দিয়েছি। গ্রাহকদের এ ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর এবং ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে হঠাৎ করে চালক ও গাড়ি মালিকরা বিআরটিএ কার্যালয়ে বেশি সেবা নিতে আসছেন। কিন্তু এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বল্প জনবল দিয়ে সেবা প্রদান বেশ কঠিন কাজ। বর্তমানে মিরপুর ১৩ বিআরটিএ কার্যালয়ে জনবল আছে মাত্র ৭০ জন। কিন্তু এই জনবল বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা প্রক্রিয়াধীন আছে।