শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

র‌্যাবের অভিযানে ছয় জেএমবি সদস্য আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও বরিশাল

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার গভীররাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো— জেএমবির রাজশাহী অঞ্চলের শীর্ষ নেতা আমিনুল, মোশারফ, ইসমাইল, আবদুল মতিন ও রফিকুল। 

র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আশরাফুল ইসলাম জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর বোয়ালমারি থেকে আমিনুল ও মোশারফকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোদালকাটি এলাকার মধ্যচর থেকে বাকিদের গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও সাংগঠনিক লিফলেট এবং বই জব্দ করা হয়। র‌্যাবের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে আমিনুল রাজশাহী অঞ্চলে জঙ্গিদের সংগঠিত করছিলেন। এদিকে রাজশাহীর পুঠিয়ায় নাশকতার মামলায় উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানসহ চারজন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এদিকে বরিশালে অস্ত্র, গুলি, সার্কিট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম, সিডি, জিহাদি বইসহ নিষিদ্ধ জেএমবির এক সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-৮। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বরিশাল নগরের দক্ষিণ সাগরদী দরগাহবাড়ী রোড এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

গতকাল র‌্যাব-৮ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের বিশেষ দল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দরগাহবাড়ী রোডের একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জেএমবি সদস্য আবদুল্লাহ আল মিরাজ ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুটি খালি ম্যাগাজিন, ৪ রাউন্ড গুলি, ১৫টি ইলেকট্রনিক সার্কিট, একটি তাতাল, দুটি হেক্সো ব্লেড, ১৬টি জিহাদি বই, একটি সিডি, একটি টেবিলঘড়ি, একটি মোবাইল ফোন সেটসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।

আটক মিরাজ ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ বরগুনা সদর উপজেলার মনসাতলী গ্রামের ইবরাহিম খলিলের ছেলে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে মিরাজ জানান, তিনি বরগুনার রফাচণ্ডী মাদ্রাসা থেকে ২০০৬ সালে দাখিল পাস করেন। এরপর ইলেকট্রনিক্সের কাজ শেখার জন্য বরগুনা সদরের ‘বরগুনা টেলিকম’ নামে একটি দোকানে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। সেখানে জসিম উদ্দিন রাহমানীর বক্তব্য ও ওয়াজ শুনে জিহাদে উদ্বুদ্ধ হন। ওই দোকানে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে আতিকুর রহমান ওরফে বাবু ওরফে শাওন, নাজমুল ওরফে উকিল ওরফে রেশান, তরিকুল ওরফে সাকিব ওরফে নাজমুল সাকিব, আল আমিন ওরফে হাসান ওরফে আলমগীর, আল আমিন ওরফে রাজীব ওরফে আজিজুলসহ আরও কয়েকজন সমমনোভাবাপন্ন লোকের পরিচয় হয় এবং পরে সখ্য গড়ে ওঠে। ২০১২ সালে জসিম উদ্দিন রাহমানীর সঙ্গে গোপন বৈঠক করার সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মিরাজ।

জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৪ সাল থেকে মিরাজ তার সমমনোভাবাপন্ন বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে গোপনে বৈঠক করেন এবং জেএমবি কার্যক্রম তথা উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন। মিরাজ তার মুঠোফোনে একাধিক সিমের মাধ্যমে সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তবে একান্ত প্রয়োজন না হলে মিরাজ মুঠোফোন ব্যবহার করতেন না।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিরাজকে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করে মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন র‌্যাব-৮-এর কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত ডিআইজি আতিকা ইসলাম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর