শিরোনাম
শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাড়ছে চালের দাম কমছে সবজির

বাজার দর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়ছে চালের দাম কমছে সবজির

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে চালের দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে। কেজিতে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। শুল্ক কমানোর পর বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বেড়েছে। কমেছে আমদানি খরচ। সরকারি মজুদও বেড়েছে। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, এরপরও নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি ঈদের আগের তুলনায় গতকাল প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। তবে ইলিশ মাছের সরবরাহ বেড়েছে। দামও সহনীয় রয়েছে। গতকাল রাজধানীর মিরপুর ও বারিধারাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

রাজধানীর পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে আমদানি করা চালের বর্তমান দর ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা। এরপরও ক্রেতাদের তা ৪৩ থেকে ৪৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় মিলগুলো চালের দাম বাড়িয়েছে। এ ছাড়া পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। ঈদের আগেই রাজধানীর বাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি পাইকারিতে ২ টাকা এবং খুচরায় ৩ টাকা বেড়েছে। গত তিন দিন ধরে এই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। মিল মালিকরা ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় মিনিকেট চালের দাম ১০০ টাকা বাড়িয়েছেন। মাঝারি ও মোটা চালের দামও একই হারে বাড়িয়েছেন মিল মালিক ও আমদানিকারকরা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে আরও দেখা গেছে, সরু চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা ছিল।

নাজিরশাইল আগে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা ছিল। এই চাল বেড়ে ৬২ থেকে ৬৫ টাকা হয়েছে। মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ ও লতা কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৫০ থেকে ৫২ টাকা হয়েছে। দেশি ও আমদানি করা মোটা চাল ৪৩ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে বাজার ভেদে দামের কিছুটা ভিন্নতা আছে। কিন্তু পাইকারিতে সব চালের দাম বেড়েছে। প্রতি বছর ঈদুল আজহার আগে পরিবহন সংকটের কারণে ভাড়া বেড়ে যায়। এ কারণে ব্যবসায়ীরা আগে ভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে বেশির ভাগ চাল মোকাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। জানা গেছে, এবারও বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আগেই চাল এনেছেন। তবে দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাড়তি পরিবহন ব্যয়ের অজুহাত দেখাচ্ছেন।

 মিরপুরের শাহ-আলী বাজারের সুলতান রাইস এজেন্সির মালিক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব চালের দর বেড়েছে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ টাকা। আমদানিকারক ও মিল মালিকরা দর বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী বলেন, ধানের মৌসুম শেষ। এখন বাজারে ধান পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন দাম বাড়ছে। আগামী নভেম্বরের আগে নতুন ধান আসবে না। এ কারণে ধানের দামও বাড়ছে। খাদ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, সরকারি চালের মজুদ বোরো মৌসুমে গত জুলাইয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার টন চাল মজুদ ছিল। আগস্টে তা বেড়ে ৩ লাখ ২১ হাজার টন হয়েছে।

বাজারচিত্র : গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি বেগুন ১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। শসা ঈদের সময় বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ১০ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করল্লা কেজিপ্রতি ৫০ টাকায়, ঢেঁড়স ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, শিম ১০ টাকা কমে ৮০ টাকায়, ঝিঙা ৫০ টাকায়, পটোল ৫০ টাকায়, পেঁপে ২০ টাকায়, কচুর লতি ১০ টাকা কমে ৫০ টাকায়, টমেটো ১০০ টাকায়, কাঁচামরিচের দাম ২০ টাকা কমে ৮০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকায়, গাজর ৬০, কাঁকরোল ৫০ টাকায়, পুঁইশাক প্রতি আঁটি ২০ টাকায়, লালশাক ১০ টাকা ও লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এসবের পাশাপাশি ধনেপাতা আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় এবং খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ১৫ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়, দেশি মুরগি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পিস। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা ও পাকিস্তানি লাল মুরগি আকারভেদে ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও মাছের বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। গতকাল এক কেজি ওজনের একেকটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ অনেক বেড়েছে।

সর্বশেষ খবর