সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিনিয়োগে কাতারকে তিন প্রস্তাব

তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও বর্তমান অগ্রগতির তথ্য

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগের জন্য কাতারের সরকার ও বিনিয়োগকারীদের কাছে আনুষ্ঠানিক তিন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ। গতকাল দোহায় বাংলাদেশ ফোরাম কাতার আয়োজিত এক সেমিনারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই তিন প্রস্তাব তুলে ধরেন। এ সময় কাতারের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের প্রধান শেখ আবদুল আজিজ আল থানিসহ কাতারের বিনিয়োগকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিইওরা উপস্থিত ছিলেন। কাতার ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টার (কিউএফসি)-এর সহায়তায় বাংলাদেশ ফোরাম কাতার এই সেমিনারের আয়োজন করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কাতারের সামনে যে তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তার মধ্যে রয়েছে— বিনিয়োগ ও সহযোগিতার স্থানগুলো খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ ফোরাম কাতারকে পুনর্বিন্যাসের জন্য কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বাংলাদেশি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য কাতার ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের একটি প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে পাঠানো এবং বাংলাদেশের তরুণ জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সেন্টার ফর এক্সিলেন্স স্থাপনের জন্য কাতারের বিনিয়োগ। সেমিনারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের সীমা অতিক্রম করেছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও বর্তমান অগ্রগতি নিয়ে গ্লোবাল থিঙ্কট্যাংক ও রিসার্চ প্রতিষ্ঠানগুলোর মন্তব্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দশ ইকোনমির একটি। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকছে। গত তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি ছিল সাতের ওপরে। কাতারের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার এক বা একাধিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল জোন করতেও প্রস্তুত বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজিবাজার, ওষুধ, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, জাহাজ নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, পানি, নৌখাতে বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। কাতারের ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিতে পারেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম সেমিনারে জানান, বাংলাদেশ যে কোনো আধুনিক জ্ঞান ভিত্তিক বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসূদ আহমেদ জানান, কাতারে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশের প্রবাসীরা শুধু দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে কাজ করছে তা নয় তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতেও কাজ করছেন। সেমিনারের আগে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী ও বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন শেখ আবদুল আজিজ আল থানি। এ সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান জানান তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে থাকা কাতারের মাথাপিছু আয় বিশ্বের সর্বাধিক। সেখানে বাংলাদেশের কয়েক লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই জ্বালানি, বন্দরসহ বেশ কিছু খাতে কাতার বাংলাদেশে বিনিয়োগের আশা প্রকাশ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর