বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ধরন পাল্টে বিপজ্জনক ডেঙ্গু

মৃতের সংখ্যা ২০, আক্রান্ত ৮ হাজার ছাড়িয়েছে

জয়শ্রী ভাদুড়ী

ধরন পাল্টে বিপজ্জনক ডেঙ্গু

রাজধানীতে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২০ জন। অক্টোবর শেষ হতে চললেও কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ। ডেঙ্গু ধরন পাল্টে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের (এনএইচসিএমসি) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৩০ জন। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২২৭ জন। জানা গেছে, গতকাল নতুনভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন। এর আগে সোমবারে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন, রবিবারে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন। প্রতিদিনই নতুন ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ায় বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু এবং দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গুর ধরন এবার অনেক বদলে গেছে। অনেক সময় জ্বর বেশি হচ্ছে না। হঠাৎ করে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সামান্য জ্বরে অল্প সময়ের মধ্যে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেও মৃত্যুর ঘটনাও বেশি ঘটছে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর জন্য বিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যথার ওষুধ সেবন, পর্যাপ্ত পানি পান না করাও জটিলতা বাড়াচ্ছে বলে জানান তারা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নভেম্বরের দিকে আস্তে আস্তে কমবে ডেঙ্গুর প্রকোপ। তাই আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের সরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তারা। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ব্যাপক আকারে ডেঙ্গু আক্রান্তের ঘটনা ঘটে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর সারা দেশে ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৯৩ জন। পরের বছর ২ হাজার ৪৩০ জন আক্রান্ত হলেও মারা যায় ৪৪ জন। ২০০২ সালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যায়। ওই বছর ৬ হাজার ২৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এবং ৫৮ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই ছিল ডেঙ্গুর প্রকোপ। তবে ২০১৬ সালে এর ব্যাপকতা আবার বেড়ে যায় এবং সে বছর ৬ হাজার ৬০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা যায় ১৪ জন। ২০১৭ সালে ২ হাজার ৭৬৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে মারা যায় আটজন।

সর্বশেষ খবর