রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুর ও কণ্ঠে মুগ্ধতা ছড়াল প্রতিবন্ধীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সুর ও কণ্ঠে মুগ্ধতা ছড়াল প্রতিবন্ধীরা

‘বাঁশি তুমি আর জ্বালা দিও না’ বলে সুজিত যখন ছেড়ে দিল তার দরাজ কণ্ঠ, অডিটোরিয়াম-ভর্তি শ্রোতারা বিমুগ্ধ। বোঝার উপায় নেই, গায়ক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। আউল-বাউলের লীলাভূমি, হাছন-করিম-দুরবিন শাহসহ অসংখ্য বাউলের জন্মস্থান ভাটিবাংলার হাওরাঞ্চল থেকে সে এসেছে এই মহানগরে। সুনামগঞ্জ যে আউল-বাউলের খনি, তার কণ্ঠ আর গায়কীতেই আরেকবার সে সত্যটিই জানলেন উপস্থিত অতিথিরা। আর এমন অনবদ্য পারফরম্যান্সের সুবাদেই সুজিতের গলায় উঠল চ্যাম্পিয়ন মেডেল। সিলেটে প্রথমবারের মতো আয়োজিত প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পীদের নিয়ে ‘সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিবন্ধী কণ্ঠশিল্পী’ প্রতিযোগিতার জমকালো গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হলো শুক্রবার সন্ধ্যায়। সিলেট নগরের রিকাবিবাজার কাজী নজরুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড ফাইনালে সুজিত সবুজ দলের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আর লাল দল থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইসরাত জাহান শোভা। ওর গাওয়া ‘শোনো শোনো বাংলার মানুষ মনের দুঃখ কই’ গানটি শুনতে শুনতে অনেক দর্শককেই চোখ মুছতে দেখা গেছে। শোভা সিলেটের মেয়ে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের হাত থেকে পুরস্কার নেওয়ার আগে তারা দুজনই জানিয়েছে আগামীর স্বপ্নের কথা। তারা বড় শিল্পী হতে চায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘ফাগুনের মোহনায়’ শীর্ষক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের সংগঠন সিলেট বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয় এবং ‘চলো বাংলাদেশ লাল-সবুজ’ শীর্ষক গানের সঙ্গে নাচে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের সংগঠন রাগীব-রাবেয়া ইনস্টিটিউট। দুটি পরিবেশনাই দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। বিশেষ করে কথা বলতে না পারা বা কানে না শোনা শিশু-কিশোরদের এমন পারফরম্যান্স জানিয়ে দিয়েছে অবহেলার বদলে সুযোগ পেলে তারাও পারে অনেক কিছু। প্রথম পর্বে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রতিবন্ধী সংগঠনের হাতে স্মারক তুলে দেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ আয়োজনের প্রশংসা করে ভবিষ্যতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। গ্রিন ডিজঅ্যাবলড ফাউন্ডেশনের (জিডিএফ) আয়োজনে ও বেঙ্গল অ্যাডভার্টাইজিংয়ের সহযোগিতায় আয়োজনের বিশেষ সহযোগিতায় ছিল সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট। সংস্কৃতিকর্মী রজতকান্তি গুপ্তের সঞ্চালনায় প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা তিমির নন্দী, সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী ও কণ্ঠশিল্পী রাজিয়া সুলতানা লাভলী লস্কর। অনুষ্ঠানে সেরা বিশ প্রতিযোগীর প্রত্যেককে মেডেল ও সনদপত্র দেওয়া হয়। পুরো অনুষ্ঠান ইশারা ভাষায় সঞ্চালনা করেন জেমিমা আক্তার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর