আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। জয়ের ধারা বজায় রাখতে নিবিড় প্রচারণায় নেতা-কর্মীরা। কুয়াশা ভেজা ভোর থেকে মাঝরাত পর্যন্ত চলছে নৌকার সমর্থনে গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ। অন্যদিকে, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে আতঙ্ক। নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় কীভাবে নামবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। খুলনা-২ আসনে জাতীয় ঐক্যজোট প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ভোট চুরির পুরনো খেলায় মেতেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা ও মিথ্যা মামলায় হয়রানিতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। খুলনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, তফসিল ঘোষণার পর যে উচ্ছ্বাস নিয়ে নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমেছিল, গত কয়েকদিনের হামলা-মামলায় তা হতাশায় পরিণত হয়েছে। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত জোটের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘খুলনা-৫ ও ৬ আসনে বিএনপির ছত্রছায়ায় ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াত নির্বাচন করছে। নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী ও ষড়যন্ত্রকারীদের পরাজিত করে চিরতরে তাদের রাজনীতি বন্ধ করে দিতে হবে।’
জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগ প্রচার-প্রচারণা শুরু করলেও বিএনপি এখনো নির্বাচনী মাঠ গুছিয়ে নিতে পারেনি। খুলনা-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদসহ মহানগর বিএনপির আটক ১৫৯ নেতা-কর্মীর মুক্তি না দেওয়ায় বিএনপি জোটে হতাশা রয়েছে। সেই সঙ্গে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা থানায় নতুন করে নাশকতার চার মামলায় শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা। জামায়াতের নায়েবে আমির ও খুলনা-৫ আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সাধারণ ভোটাররা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফুলতলায় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগের নাটক সাজিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে। বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগের চার ঘণ্টা আগে জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইনসহ তিনজনকে আটক করে সাজানো ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার পর দামোদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ জমাদ্দারসহ ১২ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’ খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আওয়ামী লীগ যা করেছে তাতে সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়।’ এদিকে গতকাল সকালে নগরীর ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পথসভায় আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘বিএনপি মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে। খুলনা-৫ আসনে তারা আওয়ামী লীগ অফিসে পেট্রলবোমা হামলা চালিয়েছে। নিজেরা নিজেদের কর্মীকে মারধর করে সেটিও আওয়ামী লীগের কাঁধে চাপানোর অপচেষ্টা করেছে।’ খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মন্নুজান সুফিয়ান সাধারণ ভোটারদের সতর্ক থাকে বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচারে কর্ণপাত না করে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া খুলনা-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে শেখ হাসিনা ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সাধারণ ভোটাররা নৌকায় ভোট দেবেন।