মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
রাজশাহী

সবার নালিশ নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বিএনপি প্রার্থীরা অভিযোগ করছেন। অভিযোগের সমর্থনে তুলে ধরছেন তথ্য-প্রমাণও। বাদ যাননি জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির প্রার্থীরাও। সবার অভিযোগ, এলাকায় পোস্টার ফেস্টুন থাকছে না। দলীয় কার্যালয় ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আর সবার অভিযোগ নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে। রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের প্রার্থী এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদের। গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সবগুলো আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থী ও তাদের এজেন্টরা। সভার শুরুতেই নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ব্যারিস্টার মাহাফুজুর রহমান মিলন। তিনি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এখানে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। আসনটির ইসলামী      আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল মান্নান বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মারমুখী অবস্থানে আছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনের পরদিনই বাড়িতে বাড়িতে আগুন জ্বলবে। তবে এ আসনের নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট এজাজুল হক মানু বলেন, তার প্রার্থীই জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। এ জন্য তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সাতজন গানম্যান দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। রাজশাহী-২ (সদর) আসনের বিএনপি প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু বলেন, নির্বাচনে প্রচারের সময় বেশি থাকায় সহিংস ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সহিংসতা এড়াতে একই পোস্টারে সব প্রার্থীর প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে নির্বাচনের ব্যয়ও কমবে। এ আসনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ফয়সাল হোসেন মনিও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নানা নালিশ করেন। বলেন, সবার মধ্যেই হিংসাত্মক মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের বিএনপি প্রার্থী শফিকুল হক মিলন বলেন, নির্বাচনে দুই উপজেলায় বীভৎস কাণ্ড ঘটছে। নৌকার প্রার্থীর ইঙ্গিতে পুলিশ তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও নওহাটা পৌরসভার মেয়র মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের বিএনপি প্রার্থী আবু হেনা বলেন, কয়দিন আগে বাগমারায় একটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের একপক্ষ ওসির অপসারণ চেয়েছে। তবুও ওসিকে অপসারণ করা হয়নি। কারণ, তিনি নৌকার প্রার্থী এনামুল হকের আস্থাভাজন। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল হোসেনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ফরিদ বিন রাসেল বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নৌকার নির্বাচনী প্রচার অফিস খোলা হয়েছে। এ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলামও একই অভিযোগ করেছেন। রাজশাহীর ছয়টি আসনের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে শুধু এ আসনের প্রার্থী ডা. মনসুর রহমান সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন চাই। আমরা সহিংসতার পক্ষে নই। তাই এখানে কোনো ঝঞ্ঝাট নেই। রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুস সালাম সুরুজ বলেন, আমার বাড়ির পাশেই নিজের পোস্টার টানাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ার আলমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট নূর মোহাম্মদ তুফান বলেন, এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। রাজশাহী-৫ আসনের বিএনপি নেতা নাদিম মোস্তফা ও নজরুল ইসলামের ধানের শীষ নিয়ে লড়াই চলছিল আদালতে। গতকাল চেম্বার আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, ধানের শীষ নজরুল ইসলামের। তবে তিনিও সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদের প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোট জনগণ দেবে। কেউ হুমকি-ধামকি দেবেন না। ভোটের পরে জ্বালাও-পোড়াও করবেন না।

সর্বশেষ খবর