সোমবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বদলে যাওয়া মোংলা ইপিজেড

১০ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১৬ গুণ, বিনিয়োগ ১১ গুণ

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বদলে যাওয়া মোংলা ইপিজেড

মোংলা ইপিজেডে গত দশ বছরে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ গুণ, বিনিয়োগ বেড়েছে ১১ গুণ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার মানুষের। অর্থাৎ দশ বছরে আমূল পরিবর্তন হয়েছে মোংলা ইপিজেডের। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়া অঞ্চল বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৮ সালে ২৮৯ একর জমির ওপর মোংলা ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। এরপর বিগত দশ বছরে এ ইপিজেডের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মোংলা বন্দর সচল হয়েছে। ইপিজেডের ১৯২টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১৬৫টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে ১২৮টি কারখানা বর্তমানে চালু আছে। ১৫টি কারখানা চালু হওয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইপিজেডে বর্তমানে সাড়ে ৪ হাজার নারী-পুরুষ কর্মরত আছেন। ২০০৮ সালে মোংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ হয়েছিল ৪৫ কোটি টাকা, আর ২০১৮ সালে বিনিয়োগ হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা। বিগত দশ বছরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ গুণ। ২০০৮ সালে ইপিজেড থেকে রপ্তানি হয়েছিল ২৯৫ কোটি টাকার পণ্য। ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির হার বেড়ে এখন ১৬ গুণে দাঁড়িয়েছে। নাজমা বিনতে আলমগীর আরও জানান, আগে মোংলা এলাকার অর্থনীতি ছিল কৃষি (ধান) ও মাছনির্ভর। এখন ওয়ার্কাররা টয়োটা গাড়ির হিটিং প্যাড, ভিআইপি লাগেজ ব্যাগ, নর্থ আমেরিকার টাওয়েল, ফ্যাশন উইক, পাটজাত পণ্য, সুপারি পণ্য, মার্বেল পাথরসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত আছেন। এসব পণ্য ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মোংলা-রামপালের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, মোংলা বন্দরের আশপাশে যাতে শিল্পায়ন হয়, বন্দর যাতে গতিশীল হয়- সেই বিবেচনায় ১৯৯৮ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোংলা ইপিজেডের কার্যক্রম শুরু করেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইপিজেড ও বন্দর অচল হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আবারও ইপিজেড এবং বন্দর সচল হয়। এখন ৪-৫ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এই ইপিজেডে। এই অঞ্চলের জন্য ইপিজেড অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ট্রাফিক ম্যানেজার মো. সোহাগ বলেন, মোংলা ইপিজেড সৃষ্টি করা হয়েছিল মোংলা বন্দর সচল করার জন্যই। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ইপিজেডে খালি প্লট খুবই কম। ইপিজেডে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়েছে। কাঁচামাল মোংলা বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ইপিজেডে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইপিজেডের কারণে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। মোংলা ইপিজেডে কর্মরত নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম বলেন, আগে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো। স্বামীর আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালানো যেত না। এখন আমি ইপিজেডে কাজ করি, দশ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার এবং স্বামীর দুজনের আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া-জামাকাপড় এবং দৈনন্দিন বাজারের সব খরচ পূরণ করতে পারছি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর