বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জবি শিক্ষার্থী নির্যাতনে তিন পুলিশ ক্লোজড

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

চাঁদা না দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১১ শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে ৩ পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগ। তারা হলেন- ওয়ারী থানার ডিউটি অফিসার এসআই অপু, এসআই আবদুল আওয়াল ও এএসআই নজরুল  ইসলাম। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ওয়ারী থানায় তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকাল ৮টায় সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কের রায় সাহেব বাজার চার রাস্তার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন তারা। এদিকে, শিক্ষার্থী নির্যাতনে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করেন ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তের জন্য এডিসি নুরুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭  সেশনের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম ও অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী নিক্সন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় গোয়ালঘাট লেনে ওয়ারী থানার পুলিশ এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের দেহ তল্লাশি করেন। এ সময় তারা শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে ইয়াবা ও মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছে বলে অভিযুক্ত করা হয়। এমনকি থানায় নিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

তাদের কাছে যথেষ্ট টাকা না থাকায় এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের সিনিয়র কাউকে টাকা নিয়ে আসার জন্য বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা দুই শিক্ষার্থীকে আটক করার কারণ জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এসআই আবদুল আওয়াল ও এএসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে সবাইকে ভ্যানে উঠিয়ে থানায় নেওয়া হয়। তাদের থানায় বেধড়ক মারধর ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সকাল ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সদরঘাট টু গুলিস্তান সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। পরে আটককৃত শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়ার ও অপরাধীদের শাস্তির আশ্বাস দিলে তারা সকাল ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করা বেআইনি। এ ছাড়া তাদের মারধর করা চরম অন্যায়। আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করেছি। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হবে।

সর্বশেষ খবর